ভ্রমণপিপাসুরা সুযোগ পেলেই দেশের বাইরে পাড়ি জমান। বছরে একবার তো বিদেশে ভ্রমণ করতেই হবে তাদের। অনেকে আবার সুযোগ পেলে দুই-তিনবারও বিদেশ ভ্রমণ করেন। বারবার বিদেশ ভ্রমণ করলে খরচটাও বেশি হয়। বিশেষ করে বিমানের টিকিট কিনতেই অনেক টাকা গুণতে হয়। বর্তমান সময়ে বিমানের টিকিটের দামও বেশ চড়া। চড়া মূল্যে বিমান টিকিট কিনতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে। অথচ একটু ভেবেচিন্তে বিমানের টিকিট কিনলে খরচটা সাশ্রয়ী করা যাবে। সস্তায় বিমানের টিকিট কেনার ক্ষেত্রে কয়েকটি টিপস মনে রাখতে পারেন। যা আপনার পকেটে টাকা সাশ্রয় করবে।
ছুটির দিন ছাড়া অন্যদিন বুকিং দিন
সাধারণত ছুটির দিনগুলোতে বিমানের টিকিটের মূল্য চড়া থাকে। তাই অন্যদিনগুলোতে টিকিট বুকিং দিন। বিশেষ করে মঙ্গলবার ও বুধবার হল বিমান টিকিট কেনার সেরা দিন। বেশিরভাগ এয়ারলাইনস সাধারণত মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টায় তাদের বুকিং সিস্টেম আপডেট করে। কারণ বেশিরভাগ যাত্রী শুধুমাত্র সপ্তাহের দিনগুলোতে টিকিট বুক করার সময় পান। পরিসংখ্যান অনুযায়ী প্রমাণিত হয়, বেশিরভাগ যাত্রী শুক্রবার, শনিবার বা রোববার টিকিটের দাম দেখেন। তাই আপনি মঙ্গলবার ও বুধবার বেছে নিতে পারেন।
আগে বুক করুন, তবে খুব বেশি আগে নয়
ভ্রমণের তারিখের অন্তত ২১ দিন আগে টিকিট বুক করুন। উচিত। বেশিরভাগ এয়ারলাইনস নিজস্ব সিস্টেমগুলো এভাবেই সেট করে। যেন যত বেশি সম্ভব টিকিট বিক্রি করতে পারে। সিস্টেমের মধ্যে একটি নির্দিষ্ট কোটা থাকে সস্তা টিকিটের জন্য। যেমন, কুয়ালালামপুর থেকে লন্ডনের ফ্লাইটের জন্য সিস্টেমে নির্ধারণ করা হয়, প্রথম ২০ জন যাত্রী সবচেয়ে কম দাম পাবেন। পরবর্তী ২০০ জন মাঝারি দাম পাবেন এবং বাকিদের জন্য আরও বেশি মূল্য রাখা হয়। এয়ারলাইন্সের সিস্টেম কুয়ালালামপুর থেকে লন্ডন যাওয়ার সময় যে মার্জিন চায় এর উপর ভিত্তি করেই টিকিটের দাম নির্ধারণ করে থাকে।
ভ্রমণের জন্য উপযুক্ত দিন
ছুটির দিন ছাড়া অন্যদিন ভ্রমণের পরিকল্পনা করুন। এতে বিমানের টিকিটের মূল্য অনেকটাই কমে যাবে। মঙ্গলবার কিংবা বুধবার ভ্রমণের পরিকল্পনা রাখুন। বেশিরভাগ এয়ারলাইনস এই দুই দিনকে ‘কম ব্যস্ত দিন’ হিসেবে নির্ধারণ করে। তাই টিকিটের মূল্যও কম থাকে।
আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের জন্য `বেস্ট ডিল` খুঁজুন
বেশিরভাগ এয়ারলাইনস আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের জন্য প্রায় ১১ থেকে ১২ সপ্তাহ আগে `বেস্ট ডিল` অফার করে। এই সময়ের মধ্যে নিয়মিত টিকিটের দামের খোজ নিন। যে এয়ারলাইন্স বেস্ট ডিল অফার করবে সেখান থেকেই টিকিট কেটে নিন।
দাম তুলনা করুন
দেশের বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের অনলাইন কার্যক্রম রয়েছে। সেখান থেকে টিকিটের দামের পার্থক্য দেখে নিন। ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আপনি সহজেই টিকিটের দাম সম্পর্কে জানতে পারবেন। দামের পার্থক্য তুলনা করে টিকিট কাটুন। কখনও কখনও একই এয়ারলাইনের টিকিট একেক ওয়েবসাইটে একেক মূল্য থাকে। তাই যেখানে কম পাবেন সেখান থেকেই কিনে রাখুন।
গন্তব্যের কাছাকাছি এয়ারপোর্ট বেছে নিন
বিমানের টিকিট কাটার সময় খেয়াল রাখুন যনে প্রধান এয়ারপোর্টে না নামা হয়। বরং গন্তব্যের কাছাকাছি এয়ারপোর্টে নামুন। যেমন লন্ডনে যেতে চাইলে অনেকেই হিথ্রোতে নামেন। এটা না করে হিথ্রোর কাছাকাছি একটি ছোট এয়ারপোর্ট যেমন ম্যানচেস্টারের এয়ারপোর্টে নামতে পারেন। ম্যানচেস্টার থেকে ট্রেনে করে লন্ডনে যেতে পারেন। এতে টিকিটের মূল্য কমে আসবে।
ক্রোম প্লাগইন
গুগল ক্রোম কিছু ‘প্লাগ-ইন’ অফার (তৃতীয় পক্ষ) করে যা, বিমান ভাড়ার উপর নজর রাখতে সাহায্য করতে পারে। ফলে সহজেই দেখে নেওয়া যেতে পারে কখন কোন উড়ান অপেক্ষাকৃত সস্তায় পাওয়া যেতে পারে।
`কুকিজ` ক্লিয়ার করুন
অনেকে এটা জানেন না। যদি আপনি ৩০ দিনের মধ্যে এয়ারলাইনের ওয়েবসাইটে গিয়ে থাকেন, তাহলে আপনার ল্যাপটপ, স্মার্টফোন এবং পিসি থেকে কুকিজ ক্লিয়ার করুন। কারণ এই কুকিজের মাধ্যমে এয়ারলাইনের বুকিং সিস্টেম মনে করবে, আপনি বারবার তাদের ওয়েবসাইট দেখেছেন। তাই বুকিং সিস্টেম একই দাম দেখাবে। এমনকি বহুবার ওয়েবসাইট ভিজিট করলে দামও বাড়তে পারে। তাই ইন্টারনেট ব্রাউজারের কুকিজ ক্লিয়ার করুন।