দেরি করে ঘুমানো আর দেরি করে ঘুম থেকে ওঠা- এই প্রজন্মের নিত্যদিনের অভ্যাস। রাতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা মোবাইল ফোন বা ল্যাপটপে সময় কাটাবে, আর সকালে ঘুম ভাঙতে প্রায় অর্ধেক বেলা শেষ হয়ে যায়। এরপর আলসেমিতেই কেটে যায় পুরো দিন। স্কুল, কলেজ কিংবা কর্মক্ষেত্রে গেলেও যেন ঝিমুনি কমে না। কারণ রাতের ঘুমই কাটে না। দৈনন্দিন সবকিছুতেই পিছিয়ে পড়তে হয়। এমন অবস্থা থেকে পরিত্রানের উপায় একটাই। রাতে তাড়াতাড়ি ঘুম আর ভোরে ঘুম থেকে ওঠা। কিন্তু এই অভ্যাস করা তো সহজ নয়। এর জন্য নিজেকে নিয়মের মধ্যে বন্দী করতে হবে। তবেই মিলবে সমাধান।
বিশেষজ্ঞরা জানান, ভোরে ঘুম থেকে ওঠা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। প্রতিদিন ভোরে ঘুম না ভাঙলে কাজের দেরী হয়ে যায়। সারাদিন যেন দ্রুতই কেটে যায়। প্রয়োজনীয় অনেক কাজই পড়ে থাকে। তাই জীবনের সবকিছু সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত করতে ভোর ঘুম থেকে ওঠা অত্যন্ত জরুরি।
· রাতে দ্রুত ঘুমিয়ে পড়লেই ভোরে ঘুম ভাঙবে। তাই রাতে বিছানায় যাওয়ার আগেই ফোন ব্যবহার বন্ধ করে দিন। সোশাল মিডিয়া থেকে নিজেকে দূরে রাখুন। স্ক্রিন স্ক্রল করলে ঘুম পালাবে। ব্রেন দীর্ঘক্ষণ জেগে থাকবে। তাই ঘুমের আগে ফোনকে দূরে রাখুন।
· হোয়াটসঅ্যাপের মতো ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং অ্যাপ এবং স্ক্রিনের নীল আলো থেকে দূরে থাকুন। কৃত্রিম আলোর অতিরিক্ত সংস্পর্শে মেলাটোনিন কমতে পারে। এতে ঘুমাতে দেরি হয়।
· ভোরে যখন উঠতে হবে সেই সময়ে অ্যালার্ম দিয়ে রাখুন। অ্যালার্ম বাজার পর কোনোভাবেই বিছানায় থাকা যাবে না। স্মার্ট ফোন হোক বা ঘড়ি, অ্য়ালার্ম সেট করে বিছানা থেকে দূরে রাখুন। যেন বন্ধ করে আবার ঘুমিয়ে না পড়েন।
· NIH- এর একটি গবেষণায় দেখা যায়, বিছানায় ঘুমাতে যাওয়ার আগে বই পড়লে ঘুম ভালো হতে পারে। তাই বই পড়ার অভ্যাস করুন। ফোন বা ট্যাবে পিডিএফ অথবা ইবুক পড়বেন না। বইয়ের পাতা উল্টে গল্প পড়ার অভ্যাস করুন।
· প্রয়োজনীয় কাজের তালিকা আগের দিন রাতেই করে রাখুন। সেই তালিকা বিছানার পাশেই রাখুন। যেন ভোরে সেই কাজের কথা মনে পড়ে এবং দ্রুত ঘুম ভাঙে।
· প্রতিদিন একইসময়ে ওঠার অভ্যাস করুন। কর্মদিবসে কিংবা ছুটির দিনে একই সময় ঘুম থেকে উঠুন। কোনোভাবেই আলসেমি করা যাবে না। এতে ঘুমের রুটিন ঠিক থাকবে।
· রাতে ঘুমে সাহায্য করবে এমন পানীয় পান করতে পারেন। মস্তিষ্ক শান্ত রাখতে ক্যামোমাইল চা পান করতে পারেন। আবার ভোরে ঘুম থেকে উঠের স্বাস্থ্যকর চা পান করুন। এতে শরীরে শক্তি জোগাবে।