প্রেম-ভালোবাসা যুগ যুগ ধরেই চলে আসছে। যুগ বদলের সঙ্গে প্রেমের ধরণ, সঙ্গাও বদলে গেছে। সবশেষে আধুনিক সভ্যতায় দাড়িয়ে প্রেমের ধরণ পুরোটাই পাল্টে গেছে। প্রেম-ভালোবাসার প্রকাশের ধরণ, চাহিদা, প্রত্যাশা, এমনকি এতে ব্যবহৃত শব্দও পাল্টে গেছে। চিঠি আর ফুলের আদান প্রদানেই প্রেম আবদ্ধ নেই। বরং বদলেছে এর ভাষা। প্রেমে ঢুকেছে নিত্যনতুন শব্দ।
বর্তমান প্রজন্ম অর্থাত্ জেন জি আর জেন আলফা প্রজন্মের প্রেম হয় অন্যরকম। সেখানে এখন বহুল ব্যবহৃত হয় ‘ডেটিং টার্মস’। আর এই ডেটিং টার্মগুলোতে যোগ হয়েছে নানা শব্দ। জানেন কি, এসব ডেটিং টার্মের ব্যবহৃত শব্দগুলো কী কী?
ক্যাসপেরিং
বর্তমান সময়ে ক্যাসপেরিং শব্দটি বহুল ব্যবহৃত। প্রেমে প্রতারণা করার একটি টার্ম এটি। ‘গোস্টিং’ শব্দটির কাছাকাছি শব্দ ক্যাসপেরিং। ‘গোস্টিং’হচ্ছে যে নিয়মিত খোঁজ নেওয়া, টেক্সট-কল করা বন্ধ করে দেয়। অনেকটা বেপাত্তা হয়ে যাওয়াকেই গোস্টিং বলে। অন্যদিকে ক্যাসপেরিংও একই ধরণের সম্পর্কের ক্ষেত্রে ব্যবহার হয়। তবে এতে খারাপ আচরণ থাকে না। বরং ভালো আচরণ দিয়েই অন্যকে এড়িয়ে যাওয়া হয়। মেসেজের আদান প্রদান কমতে থাকে। একপর্যায়ে সম্পর্কে থেকে বেরিয়ে আসতে নানা অজুহাত দেওয়া হয়। এমন সম্পর্ককে সংক্ষিপ্তভাবে ‘ক্যাসপেরিং’বলে বর্তমান প্রজন্ম।
স্নিটিং
বর্তমান প্রজন্মের ডেটিং মানেই কোনো রেস্টুরেন্টে গিয়ে ভরপেট খাওয়া আর ছবি তোলা। এতে কাছাকাছি সময় কাটানো মুখ্য বিষয় থাকে না। বরং পার্টনারের টাকায় রেস্টুরেন্টের খাবার খাওয়াই থাকে মূল বিষয়। একে দিন একেক রেস্টুরেন্টে যাবে এবং দামী খাবারের স্বাদ নিবে, এমন সম্পর্কেই স্নিটিং বলে। অর্থাত্ এতে সম্পর্কের গভীরতা হয় না। পার্টনারের টাকা আর সামর্থ্য দেখেই প্রেম শুরু হয়।
টেক্সটেশনশিপ
বর্তমান সময়ে টেক্সটেশনশিপ সম্পর্ক বহুল প্রচলিত। কারণ ডিজিটাল যুগে অনেক সম্পর্কই এখন চ্যাটবক্সেই আবদ্ধ থাকে। সারাদিন চ্যাট করবে। সবকিছু শেয়ার করবে। কিন্তু তা হবে শুধু মেসেজের মাধ্যমেই। এমন সম্পর্কে দেখা সাক্ষাতের আগ্রহ থাকে না। দেখার প্রসঙ্গ এলেই এড়িয়ে যান। তারা শুধুমাত্র টেক্সটেই সম্পর্ক ধরে রাখেন।
পিঙ্ক ফ্ল্যাগ
রেড ফ্ল্যাগের মতোই পিঙ্ক ফ্ল্যাগের সম্পর্ক হয়। কাউকে অযোগ্য মনে হলে তাকে রেড ফ্ল্যাগ দেওয়া হয়। অর্থাত্ সরাসরি প্রত্যাখান করা হয়। পিঙ্ক ফ্ল্যাগে ক্ষেত্রে সম্পর্কে ছোট ছোট বিষয়গুলোকে বড় সমস্যা করে দেখা হয়। পার্টনারের সঙ্গে মতের মিল না থাকা, পছন্দের মিল না থাকা, সবকিছু শেয়ার না করা, এমনকি ছোট ছোট বিষয়ে মতবিরোধ থাকাই পিঙ্ক ফ্ল্যাগের সম্পর্ক।
থ্রোনিং
ডিজিটাল যুগে থ্রোনিং সম্পর্কের চর্চা বহুল। কারণ এমন সম্পর্ক তৈরি হয় সোশ্যাল স্ট্যাটাস দেখেই। সমাজে যার নাম-ডাক যত ভালো, যে যত বেশি প্রভাবশালী, তার সঙ্গেই সম্পর্কে জড়াতে আগ্রহী থাকেন অনেকে। এমন সম্পর্কে শুধুমাত্র সঙ্গীর প্রভাবকে কাজে লাগানোই মূল উদ্দেশ্য। সঙ্গীর নাম ডাক যতক্ষণ থাকবে, ততক্ষণই সম্পর্ক স্থায়ী হবে।