সাপ্তাহিক শ্রেষ্ঠ দিন শুক্রবার। মুসলমানদের জন্য এই দিন অধিক গুরুত্বপূর্ণ। এই দিনটিকে সাপ্তাহিক ঈদের দিন হিসেবেও আখ্যায়িত করা হয়। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, জুমার দিন প্রত্যেক বালিগের জন্য গোসল করা কর্তব্য। পাশাপাশি অনেক হাদিসে পবিত্র এই দিনে মিসওয়াক করা এবং সুগন্ধি ব্যবহারের কথাও এসেছে।
জুমার দিনে কিছু সময়ে আল্লাহ বান্দার দোয়া কবুল করেন বলে হাদিসে এসেছে। বিভিন্ন বর্ণনায় বিভিন্ন সময়ের কথা উল্লেখ হয়েছে। তবে জুমার দিনে দোয়া কবুলের বিশেষ সময় কোনটি— সেটা নিয়ে মতানৈক্য থাকলেও দোয়া কবুল হওয়ার ব্যাপারে কারো দ্বিমত নেই। তবে অধিকাংশ হাদিসের বর্ণনা অনুযায়ী, জুমার দিনের বিশেষ সময়ে কেউ দোয়া করলে মহান রাব্বুল আলামিন বান্দাকে খালি হাতে ফেরান না।
আবদুর রহমান ইবনু সাল্লাম জুমাহী (রহ.)... আবূ হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত: নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, জুমার দিনে একটি বিশেষ মুহূর্ত রয়েছে। কোনো মুসলিম সে মুহূর্তটিতে আল্লাহর নিকট কোনো কল্যাণ প্রার্থনা করলে, মহান আল্লাহ তাকে তা দেবেন। এ মুহূর্তটি অতি অল্প। (সহীহ মুসলিম: ১৮৪৬)
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত অপর একটি হাদিসে এসেছে, রাসুল (সা.) বলেছেন—জুমার দিনে একটি সময় আছে, সেই সময়টায় কোনো মুসলিম নামাজ আদায়রত অবস্থায় থাকে এবং আল্লাহর কাছে কিছু চাইলে আল্লাহ অবশ্যই তার সেই দোয়া কবুল করবেন এবং এরপর রাসুল (সা.) তার হাত দিয়ে ইশারা করে সময়টির সংক্ষিপ্ততার ইঙ্গিত দেন। (বুখারী: ৬৪০০)
এছাড়া যুহায়র ইবনু হারব (রহ.)... আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত: রাসুল (সা.) বলেছেন, জুমার (দিবসে) এমন একটি মুহূর্ত রয়েছে, কোনো মুসলিম বান্দা সালাতে দাঁড়ানো অবস্থায় সে মুহূর্তটি পেলে এবং আল্লাহর নিকট কোনো কল্যাণ প্রার্থনা করলে, আল্লাহ অবশ্যই তাকে তা দেবেন। এ সময় তিনি (নজীবী) হাতদ্বারা ইশারা করে সময়ের স্বল্পতা বুঝিয়েছেন। (সহীহ মুসলিম: ১৮৪৩)
অন্যদিকে, আবু দারদা ইবনে আবু মুসা আশআরি (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আমার বাবাকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন- আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, তিনি জুমার দিনের বিশেষ মুহূর্তটি সম্পর্কে বলেছেন- ইমামের মিম্বরে বসার সময় থেকে নামাজ শেষ করা পর্যন্ত সময়টিই সেই বিশেষ মুহূর্ত। (আবু দাউদ, হাদিস : ১০৪৯)
বিপদ-আপদ, ক্ষমা চাওয়া কিংবা মনের আশা পূরণে বরাবরই মুমিনরা আল্লাহর দরবারে দু’হাত তুলে ধরেন। কারণ আল্লাহ তা’আলা নিজেই ঘোষণা দিয়েছেন- তিনি পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু। যখন কোনো বান্দা তার নিকট দুই হাত তুলে প্রার্থনা করে, তখন মহান রাব্বুল আলামীন তাকে শূন্যহাতে ফিরিয়ে দেন না। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন সকল মুমিন ভাই-বোনদের বিপদে-আপদে ধৈর্য ধরে সফলকাম হওয়ার তওফিক দান করুন, আমিন।