পবিত্র রমজান আমাদের জন্য নিয়ে আসে খুশির সংবাদ, রহমত ও বরকত। রমজানের প্রতি মুহূর্ত গুরুত্বপূর্ণ হলেও শেষ দশকের রয়েছে বিশেষ ফজিলত।
রোজার শেষ দশ দিন সম্পর্কে হজরত আয়েশা (রা.) বলেছেন, ‘শেষ দশ দিন শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নবিজি (সা.) ইবাদতে ব্যস্ত থাকতেন এবং পরিবারের সদ্যদেরও সারা রাত জেগে ইবাদত করতে বলতেন।’ (সহিহ বুখারি)।
অন্য একটি হাদিসে এসেছে, আয়েশা (রা.) বলেন, ‘যখন রমজানের শেষ দশক আসত নবি (সা.) তার লুঙ্গি কষে নিতেন (বেশি বেশি ইবাদতের প্রস্তুতি নিতেন ও স্ত্রীদের থেকে দূরে থাকতেন) এভাবে রমজান শেষ না হওয়া পর্যন্ত ইবাদত করতেন। রমজানের শেষ দশকের কদরের রাতে নবি করিম (সা.) সবচেয়ে বেশি ইবাদত করতেন, যা অন্য কোনো রাতে এত বেশি দেখা যেত না।
এ রাতে তিনি কুরআন তেলাওয়াত, জিকির, সালাত ও দোয়া করতে করতে সেহরি পর্যন্ত যেতেন এবং পরে সেহরি গ্রহণ করতেন। রমজানের শেষ দশকের গুরুত্বপূর্ণ আরও যে একটি আমল রয়েছে তা হলো সদকাতুল ফিতর। রাসূল (সা.)-এর যুগে সাহাবিরা ঈদের নামাজের আগেই সদকাতুল ফিতর আদায় করতেন।
আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বলেন, ‘প্রত্যেক দাস, আজাদ পুরুষ, নারী, প্রাপ্ত বয়স, অপ্রাপ্ত বয়স্ক মুসলিমের ওপর আল্লাহর রাসূল (সা.) সদকাতুল ফিতর হিসাবে খেজুর হোক বা যব হোক এক সা পরিমাণ আদায় করা ফরজ করছেন এবং লোকজনের ওপর ঈদের সালাতে বের হওয়ার আগেই তা আদায় করার নির্দেশ দিয়েছেন।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১৫০৩)।
হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ (সা.) সদকাতুল ফিতর নির্ধারণ করেছেন; যাতে এটা রোজাদারের রোজার বিচ্যুতি তথা অনর্থক কথা, কাজ ও অশালীন আচরণের ক্ষতিপূরণ হয়। আর অসহা মানুষের খাবারের সুন্দর ব্যবস্থা হয়।’ (আবু দাউদ, ১৬০৯)।
আমাদের সবার উচিত সদকাতুল ফিতরা যথাযথভাবে আদায় করা ও বেশি বেশি দান সদকা করা। রমজানের এই শেষ দশকে মহান আল্লাহ আমাদের ইবাদতগুলো কবুল করে নিক। আমরা যেন কদরের রাতগুলোতে মহান আল্লাহর ইবাদতে কাটিয়ে দিতে পারি সেই নেয়ামত আল্লাহ আমাদের সবাইকে দান করুক, আমিন।