• ঢাকা
  • বুধবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৫, ১৭ বৈশাখ ১৪৩২, ২ জ্বিলকদ ১৪৪৬

বৃষ্টির দিনে যেসব ভুলে হতে পারে মারাত্মক বিপদ!


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: এপ্রিল ৩০, ২০২৫, ০৬:৪৬ পিএম
বৃষ্টির দিনে যেসব ভুলে হতে পারে মারাত্মক বিপদ!
ছবি: সংগৃহীত

বৃষ্টির দিনে প্রকৃতি যেন প্রাণ ফিরে পায়। সবুজে মোড়ানো পরিবেশ আরও উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। গরমের তীব্রতা কমে কিছুটা প্রশান্তি মিলে। তবে বেশি বৃষ্টিপাতে ভোগান্তিও বাড়ে জনজীবনে। কারণ একটু অসচেতনতা থেকে বৃষ্টির দিনে অনেক দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে। কিছু ভুলের কারণে হতে পারে মারাত্মক বিপদ! তাই নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের জন্য বৃষ্টির দিনে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সতর্কতা মেনে চলা উচিত।

 

চলাফেরায় ঝুঁকি
বৃষ্টির দিনে রাস্তা-ঘাট অনেক সময় পানিতে ভরে যায়। ঢাকাসহ বড় শহরগুলোতে ড্রেনেজ ব্যবস্থার সমস্যা থাকায় অনেক রাস্তায় জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। এই অবস্থায় না জেনে পানি জমে থাকা জায়গায় চলাফেরা করা বিপজ্জনক হতে পারে। রাস্তার ভাঙা অংশ বা ম্যানহোলের মুখ দেখা যায় না, ফলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা বাড়ে। বৃষ্টির দিনে হাঁটার সময় প্রয়োজনে লাঠি ব্যবহার করা যেতে পারে। কোনো গর্ত আছে কিনা তা দেখে রাস্তায় চলাচল করতে হবে। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধদের এ সময় বেশি সতর্ক থাকা দরকার।

বৈদ্যুতিক বিপদ
বৃষ্টির সময় বিদ্যুৎ সংযোগে শর্ট সার্কিট ও বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনার আশঙ্কা অনেক বেড়ে যায়। পানিতে ডুবে থাকা বৈদ্যুতিক খুঁটি, খোলা তার বা রাস্তার পাশে পড়ে থাকা বৈদ্যুতিক সামগ্রীর কাছাকাছি না যাওয়াই ভালো। ঘরে ঢোকার আগে জুতার পায়ে পানি থাকলে বৈদ্যুতিক যন্ত্র ব্যবহার করা উচিত নয়। অনেক সময় টিভি, ফ্রিজ বা কম্পিউটারের মতো যন্ত্রপাতি বজ্রপাতের সময় নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই বাজ পড়ার সময় এগুলো বন্ধ রাখা এবং সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে রাখা নিরাপদ।

রোগব্যাধির বিস্তার
বর্ষাকালে পানিবাহিত রোগ যেমন—ডায়রিয়া, টাইফয়েড, হেপাটাইটিস, আমাশয় ইত্যাদির প্রকোপ বেড়ে যায়। জমে থাকা পানিতে মশা জন্মায়, যার মাধ্যমে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার মতো রোগ ছড়ায়। তাই জমে থাকা পানি অপসারণ করা, মশারি ব্যবহার করা এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা খুবই জরুরি। খাওয়ার আগে ও পরে ভালোভাবে হাত ধোয়া, বাইরের খোলা খাবার না খাওয়া এবং ফুটানো পানি পান করাও গুরুত্বপূর্ণ।

পরিধান সচেতনতা
বৃষ্টির দিনে ভিজে গেলে দ্রুত কাপড় বদলে নেওয়া উচিত। ভেজা কাপড় শরীরে বেশি সময় থাকলে ঠান্ডা, সর্দি, জ্বর এমনকি নিউমোনিয়াও হতে পারে। বিশেষ করে ছোট শিশু ও বয়স্কদের ক্ষেত্রে এই সতর্কতা আরও জরুরি। বর্ষাকালে হালকা, দ্রুত শুকিয়ে যায় এমন কাপড় পরা সুবিধাজনক। সঙ্গে ছাতা, রেইনকোট বা জলরোধী জুতা ব্যবহার করা বুদ্ধিমানের কাজ।

যান চলাচলে সতর্কতা
বৃষ্টির দিনে রাস্তা পিচ্ছিল হয়ে যায়, যার ফলে গাড়ি বা বাইক চালাতে অনেক সাবধানতা প্রয়োজন। ব্রেক না ধরা, হঠাৎ গতি পরিবর্তন করা বা মোড় নিতে গিয়ে অনেক সময় দুর্ঘটনা ঘটে যায়। চালকদের উচিত গাড়ির হেডলাইট, ব্রেক ও টায়ারের অবস্থার দিকে নজর রাখা। বাইক চালকদের অবশ্যই হেলমেট পরা উচিত এবং অতিরিক্ত গতিতে না চালানোই ভালো।

স্কুল ও অফিস যাত্রা
ছোটদের স্কুলে পাঠানোর আগে রেইনকোট বা ছাতা নিয়েছে কি না নিশ্চিত হয়ে নিন। অফিসগামীদের জন্যও জলরোধী ব্যাগ, কাগজ বা ইলেকট্রনিক ডিভাইস ঢাকার ব্যবস্থা রাখা দরকার। নয়তো এসব জিনিস বৃষ্টির পনিতে নষ্ট হতে পারে।

খাবার সংরক্ষণ ও রান্নার সতর্কতা
বর্ষায় বাতাসে আর্দ্রতা বেশি থাকায় খাবার দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। রান্নার সময় সবজি ভালোভাবে ধুয়ে নেওয়া উচিত এবং যতটা সম্ভব টাটকা খাবার খাওয়া উচিত। ফ্রিজের তাপমাত্রা ঠিক রাখা এবং রান্নাঘর শুকনো রাখা সংক্রমণ কমাতে সাহায্য করে।

প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রস্তুতি
ভারী বর্ষণের ফলে নদীর পানি বেড়ে বন্যা বা ভূমিধস হতে পারে। যারা ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বাস করেন, তাদের উচিত স্থানীয় প্রশাসনের সতর্কতা মনোযোগ দিয়ে শোনা এবং প্রস্তুতি নেওয়া। প্রয়োজনে জরুরি ব্যাগে ওষুধ, শুকনো খাবার, পানীয় জল ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রস্তুত রাখতে হবে।

Link copied!