সন্তান লেখাপড়ায় খুবই ভালো। তবুও ক্লাসে সেরা ৫ জনের মধ্যে থাকছেই না। পরীক্ষায় সব উত্তর দিলেও নম্বর ভালো পাচ্ছে না। এর কারণ কী হতে পারে? খেয়াল করে দেখুন তো, সন্তানের হাতের লেখা কেমন। স্পষ্ট ও পরিচ্ছন্ন হাতের লেখা না হলে পরীক্ষায় ভাল নম্বর পাওয়া কষ্টকর। কারণ শিক্ষকরা পরিচ্ছন্ন হাতের লেখা পছন্দ করেন এবং ভালো নম্বর দেন।
স্কুলে সুন্দর হাতের লেখার জন্য আলাদা নম্বরও বরাদ্দ থাকে। তাইতো পরীক্ষায় ফলাফল ভালো করার জন্য পরিচ্ছন্ন হাতের লেখার পরামর্শ দেন শিক্ষকরা। ছোটবেলা থেকেই হাতের লেখার অভ্যাস করানো হয়। প্রতিটি শিশু যেমন এক হয় না। তাদের লেখার ধরণও এক হয় না। কারও লেখা ঝরঝরে, কারও ঈষৎ বাঁকা, কারও গোটা গোটা, স্পষ্ট ও পরিচ্ছন্ন হাতের লেখা হয়। তবে যাদের হাতের লেখা খুব অগোছালো তাদের নিয়েই পড়তে হয় বিপাকে। পড়াশোনায় শতভাগ দিয়েও যেন শতভাগ নম্বর পাওয়া যায় না। তাই হাতের লেখাটাকেও প্রাধান্য দেওয়া জরুরি।
সন্তানের হাতের লেখা নিয়ে বাবা মায়ের চিন্তা থেকেই যায়। সন্তান বড় হচ্ছে, কিন্তু হাতের লেখা ছোটদের মতোই থেকে যাচ্ছে। অনেক বাবা মা সন্তানের হাতের লেখা সুন্দর হওয়ায় প্রতি মনোযোগী হোন। তবুও যেন সন্তানের হাতের লেখা ভালো হয় না। এক্ষেত্রে কয়েকটি কৌশলে বাচ্চাদের হাতের লেখা ভাল করা যেতে পারে।
· হাতের লেখা সুন্দর করার জন্য প্রথমেই কলম বা পেন্সিল ধরা শিখতে হবে। খেয়াল করুন সন্তান কীভাবে কলমটি ধরছে। সন্তান যেন বুড়ো আঙুল এবং তর্জনীর মধ্যে কলম ধরে তা নিশ্চিত করুন। এরপর লিখতে দিন।
· লেখার সময় সোজা হয়ে বসা জরুরি। তাই বিছানায় না দিয়ে, বরং টেবিল চেয়ারে লেখার অভ্যাস করান। স্কুলে গিয়ে টেবিলে বসেই পরীক্ষা দেবে। তাই বাড়িতেও টেবিলে বসেই লেখার অভ্যাস তৈরি করুন।
· শিশুদের জন্য ডিজাইন করা ওয়ার্কশিট ব্যবহার করুন। এতে প্রতিটি অক্ষরের যথার্থ স্ট্রোক বা লেখার পদ্ধতি ভালো করে আঁকা থাকে। এই ওয়ার্কশিট গুলোতে লেখার অভ্যাস করান। হাতের লেখা স্পষ্ট হবে।
· হাতের লেখার কাজটিকেও বাচ্চার জন্য আকর্ষণীয় করে তুলতে হবে। পছন্দের জিনিসের তালিকা বা প্রিয় বিষয় সম্পর্কে লিখতে উত্সাহিত করুন। যতবেশি লিখবে ততই হাতের লেখা সুন্দর হবে।
· সন্তানকে প্রতিদিন ১৫-২০ মিনিট হাতের লেখার অনুশীলন করান। শিশু অনুশীলনে বিরক্ত হবে না। ধীরে ধীরে হাতের লেখার উন্নতি হবে। যে বিষয়ে পড়ছে তা সঙ্গে সঙ্গে লিখতে বলুন। এতে হাতের লেখা সুন্দর হবে। পড়াও মনে থাকবে।
· সন্তার উপরের শ্রেণিতে উঠলে হাতের লেখারও পরিবর্তন হবে। খেয়াল রাখুন, এই পরিবর্তন যেন ভালোর দিকে যায়। লেখাগুলো যেন আগের থেকে আরও স্পষ্ট এবং গোছানো হয়।
· অনেক সময় কলম বা পেন্সিল ভালো না হলে লেখাও ভালো হয় না। এক্ষেত্রে কলমের গ্রিপ ভাল হওয়া জরুরি। শক্ত গ্রিপে আঙুলে ব্যথা করবে। লেখা ভালো হবে না। তাই নরম গ্রিপের কলম কিনুন।
· সুন্দর হাতের লেখার সঙ্গে সঙ্গে, লেখার গতি বাড়ানো জরুরি। পরীক্ষায় লেখা সুন্দর করতে গিয়ে ধীরে লিখলে চলবে না। বরং দ্রুত সময়ে সুন্দর হাতের লেখার অভ্যাস করতে হবে। এক্ষেত্রে সন্তানকে ঘড়িতে সময় বেধে নিন। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নির্দিষ্ট বিষয়ে লেখা শেষ করার চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিন। প্রথমে একটু সমস্যা হলেও ধীরে ধীরে লেখার গতি বাড়বে। এতে সন্তান পরীক্ষায় সব প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবে এবং হাতের লেখাও সুন্দর হবে।