• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

মৃত স্বজনদের সঙ্গে কথা হবে এই টেলিফোনে!


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: আগস্ট ৯, ২০২৪, ০৫:১০ পিএম
মৃত স্বজনদের সঙ্গে কথা হবে এই টেলিফোনে!
ছবি: সংগৃহীত

স্বজনহারানোর কষ্ট তারাই বোঝে, যাদের হারিয়েছে। প্রতিদিন, প্রতি মুহূর্ত হারানোর যন্ত্রণা বুকে চেপে থাকে। মানসিক কষ্টে কাতরাতে থাকে বেচে থাকা মানুষগুলো। মনে হয়,  স্বজনকে যদি আরেকবার দেখা যেতো, মনের জমে থাকা কথাগুলো বলা যেতো, পাশাপাশি সময় কাটানো যেত-এমন অনেকে হাহাকার মনে নাড়া দেয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে শোক কাটিয়ে ওঠা গেলেও হারানো স্বজনদের স্মৃতি ভোলা যায় না। এই কষ্ট বয়ে বেড়াতে হয় পুরো জীবন।

ভাবুন তো যদি সত্যি মৃত স্বজনদের সঙ্গে কথা হয়-তবে কেমন হতো। টেলিফোন দিয়ে যদি মৃত স্বজনদের সঙ্গে কথা বলা যায়, মনের কথা জানানো যায়। তাহলে মনের কষ্ট অনেকটাই কমে যেত তাই না। সেই কষ্ট কমাতেই জাপানে একটি টেলিফোন বুথ তৈরি করা হয়েছে। যা দিয়ে মৃত স্বজনদের সঙ্গে কথা বলা যায় বলে জানিয়েছেন বুথটির আবিষ্কার ইতারু সাসাকি।

জাপানের বাসিন্দা ইতারু সাসাকি এই টেলিফোন বুথটি তৈরি করেছেন। জাপানের টোকিও শহর থেকে অনেক দূরে এক পাহাড়ে রয়েছে এই বুথটি। ইতারু তার স্বজনের মৃত্যুতে খুব কষ্ট পান। শোক কাটাতে দূরে ওই পাহাড়ে গিয়ে বসে থাকতেন। ওই সময় তার চিন্তায় এমন ফোন বুথ তৈরির পরিকল্পনা আসে। আর সেই অনুযায়ী একটি ফোন বুথও তৈরি করেন। যা দিয়ে তিনি নিয়মিতই মৃত স্বজনদের সঙ্গে কথা বলেন বলে জানান।

এই ফোন বুথটির নাম ‘উইন্ড ফোন’। বাতাসে (উইন্ড) ভেসে না বলা কথা পৌঁছে যাবে মৃত স্বজনদের কাছে। এমন ধারণা থেকেই বুথটির নামকরণ করা হয়। ২০১০ সালে এটি তৈরি হয়। যা মূলত সংযোগবিহীন টেলিফোন বুথ। কাঁচের তৈরি ওই বুথে রাখা আছে কালো রঙের এক টেলিফোন আর নোটবই। ফোনের সোনালি রঙের ডায়ালে নম্বর চেপেই মৃত স্বজনদের সঙ্গে কথা বলা যায়। মূলত এই টেলিফোনের কোনো সংযোগ নেই। তাই কথা বলার পুরো সময়টাই থাকে কাল্পনিক। মৃত স্বজনের সঙ্গে কথা বলে মন হালকা করেন। এতে মানুষের মন সান্ত্বনা পায়। বলা যায়, নিজেকে সান্ত্বনা দিতেই এই কাল্পনিক এই কথোপকথন চলে।

২০১১ সালে জাপানের তোহোকু শহরে ভূমিকম্প ও সুনামি হয়। সেখানে প্রাণ হারান প্রায় ১৫ হাজার মানুষ। শহরের প্রায় ১০ শতাংশ মানুষই সেখানে প্রাণ হারায়। ওই সময় থেকে উইন্ড ফোনের জনপ্রিয়তা বাড়ে। হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন উইন্ড ফোনের কাছে ভিড় জমান। মৃত স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন অনেকেই।

উইন্ড ফোন থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে ওহিরো বে সৈকতে আরও একটি বুথ স্থাপন হয়। যা তৈরি করেন ওয়েলিংটনের একজন নার্স। সেই বুথেও মৃত স্বজনদের সঙ্গে কাল্পনিক কথোপকথন হয়। সময় যাচ্ছ, এই বুথগুলো জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। যা প্রমাণ করে দেয়, স্বজন হারানোর বেদনা কখনোই ভুলার নয়।

 

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

Link copied!