বৈশাখের তীব্র গরমের অস্বস্থি কাটায় বৃষ্টি। তবে বৃষ্টির একা আসে না, সঙ্গে করে নিয়ে আসে বজ্রপাত। এই বজ্রপাত তখন বিপর্যয়ের কারণ হয়ে উঠে। বজ্রপাতে প্রাণহানীর আশঙ্কা থাকে। এ দেশে মার্চ থেকে অক্টোবর পর্যন্ত বজ্রপাত হয়ে থাকে। যদিও এবার মার্চ, এপ্রিল মাসে তেমন একটা বৃষ্টির দেখা পাওয়া যায় নি। মে মাসেই শুরু হয়েছে বজ্রপাত সহ বৃষ্টি। পরিসংখ্যান বলছে ২০১০ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে বজ্রপাতে মারা গেছেন অন্তত ৬৩৫ জন। আর শুধুমাত্র ২০১৬ সালেই ১৪২ জনের জীবন নিয়েছিল বজ্রপাত। এই সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।
বজ্রপাতের নির্দিষ্ট সময় না থাকলেও ঝড়-বৃষ্টির সময় এর সম্ভাবনা থাকে শতভাগ। তাই কিছু নিয়ম-কানুন মেনে চললে বজ্রপাতে প্রাণহানী থেকে রক্ষা পেতে পারেন। তাই আসুন বজ্রপাতের সময় আমরা কিছু সতর্কতা অবলম্বন করি।
- ঘন ঘন বজ্রপাত হতে থাকলে কোনও অবস্থাতেই খোলা বা উঁচু জায়গায় না থাকাই ভালো। এ অবস্থায় সবচেয়ে ভালো হয়, যদি কোনও দালানের নিচে আশ্রয় নিতে পারেন।
- উঁচু গাছপালা ও বিদ্যুতের লাইন থেকে দূরে থাকতে হবে। উঁচু গাছপালা বা বিদ্যুতের খুঁটিতে বজ্রপাতের সম্ভাবনা বেশি থাকে। টেলিফোন বা কোনো ধরনের সংযোগের খুঁটির পাশে দাঁড়াবেন না। খোলা জায়গায় কোনো গাছ থাকলে তা থেকে অন্তত ৪ মিটার দূরে থাকতে হবে। এ ছাড়া ফাঁকা জায়গায় কোনো যাত্রীছাউনি বা বড় গাছ ইত্যাদিতে বজ্রপাত হওয়ার সম্ভাবনা অত্যন্ত বেশি থাকে।
- পানি থেকে সরে আসুন। নৌকায় থাকলে ছাউনির নিচে প্রবেশ করুন।
- বজ্রপাতের সময় খোলামাঠে যদি থাকেন তাহলে পায়ের আঙুলের ওপর ভর দিয়ে এবং কানে আঙুল দিয়ে নিচু হয়ে বসে পড়তে হবে।
- ঘরে থাকলে বজ্রপাতের সময় জানালা থেকে দূরে থাকতে হবে। জানালা বন্ধ রাখতে হবে।
- বজ্রপাতের সময় যে কোন ধরণের খেলাধুলা থেকে শিশুকে বিরত রাখতে হবে, ঘরের ভেতরে অবস্থান করতে হবে।
- বজ্রপাত ও ঝড়ের সময় বাড়ির ধাতব কল, সিঁড়ির রেলিং, পাইপ ইত্যাদি স্পর্শ করা যাবে না। এমনকি ল্যান্ড লাইন টেলিফোনও স্পর্শ না করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
- বজ্রপাতের সময় ঘরের বৈদ্যুতিক সংযোগযুক্ত সব যন্ত্রপাতি বন্ধ রাখা ভালো। অব্যবহৃত যন্ত্রপাতির প্লাগ আগেই খুলে রাখুন।
- বজ্রপাতের সময় ছাউনিবিহীন নৌকায় মাছ ধরতে না যাওয়াই উচিৎ হবে। সমুদ্রে বা নদীতে থাকলে মাছ ধরা বন্ধ রেখে নৌকার ছাউনির নিচে আশ্রয় নিতে হবে।
- বজ্রপাতের সময় রাস্তায় গাড়িতে থাকলে যত দ্রুত সম্ভব নিরাপদ আশ্রয়ে ফেরার চেষ্টা করতে হবে। প্রচণ্ড বজ্রপাত ও বৃষ্টি হলে গাড়ি কোনো গাড়িবারান্দা বা পাকা ছাউনির নিচে রাখতে হবে। এ সময় গাড়ির কাচে হাত দেওয়া বিপজ্জনক হতে পারে।
- বজ্রপাতের সময় সাঁতার কাটলে বা পানির খব কাছে থাকলে দ্রুত সরে পরুন। পানি খুব ভালো বিদ্যুৎ পরিবাহী।
- বজ্রপাতের সময় বাইরে বের হলে চামড়ার ভেজা জুতা বা খালি পায়ে না থেকে পা ঢাকা জুতা বা রবারের জুতা পরে বের হতে হবে।