কোনোকিছু প্রয়োজন হলেই আমরা কেনাকাটার জন্য যাই শপিংমলে। আজকাল অবশ্য এই চাপ কিছুটা কমেছে স্মার্টফোনে কেনাকাটার মাধ্যম চালু হওয়ার কারণে। নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী থেকে শুরু করে রেস্তোরাঁর খাবার—সবই কেনা যায় ঘরে বসেই। যদিও কেনাকাটা করার এই মাধ্যম শপাহলিকদের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। শপাহলিকদের আরও কিছু বৈশিষ্ট্য জেনে নেওয়া যাক চলুন-
শপিং মলে অতিরিক্ত সময়
বাজারে কিংবা অনলাইনে কেনাকাটা করতে গিয়ে দেখা যায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় নষ্ট করে বিভিন্ন অনলাইন মার্কেট প্লেস, পেজ ও অ্যাপ ঘেঁটে অপ্রয়োজনীয় জিনিস কেনেন তারা। নিজের মধ্যে এই অভ্যাস খুঁজে পেলে আপনিও নিজেকে বলতে পারেন শপাহলিক।
সামর্থ্যের চেয়ে বেশি খরচ করা
পর্যাপ্ত পরিমাণ অর্থ নেই কিন্তু ধার করে সামর্থ্যের চেয়েও বেশি খরচ করে ফেলছেন এমন মানুষ অনেক। এমন বদভ্যাসের বশবর্তী হয়ে অনিয়ন্ত্রিত খরচ করার ফলে সঞ্চিত অর্থের ওপর ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। যদি দেখেন আপনার মধ্যেও এমন অভ্যাস রয়েছে তাহলে বুঝবেন আপনি আসক্ত।
নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে কেনাকাটা
অনিয়ন্ত্রিত কেনাকাটা করার স্বভাব যেমন, যেটাই পছন্দ হচ্ছে সেটা কিনেই যাচ্ছেন। অথচ সেটি আপনার প্রয়োজন নেই। কেনার পর সাময়িক শান্তি পেলেও আবার অন্য একটির প্রতি আকাঙ্ক্ষা জন্মাচ্ছে। বুঝে নিন আপনার আসক্তি ভয়াবহ। এর থেকে বেরিয়ে আসতে হলে সমস্যা বুঝে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।
মন খারাপ হলেই কেনাকাটা করা
নতুন জামা, নতুন জুতা, যেকোনো নতুন কিছু আমাদের মন ভালো করে। সাধারণ এই ব্যাপারটাই অনেকে আবার বাড়াবাড়ির পর্যায়ে নিয়ে যান। মন খারাপ হলেই অপ্রয়োজনীয় কেনাকাটা করেন তারা। মনটা শান্ত করতে মার্কেটে মার্কেটে ঘুরে বেড়ান। যা দেখেন, তা–ই কিনে ফেলেন। আপনার যদি এই দশা হয় তাহলে নিশ্চিত আপনি কেনাকাটায় আসক্ত।
জিনিস হাতে না পাওয়া পর্যন্ত অস্থিরতা
অনলাইনে একটি জিনিসের অর্ডার করেছেন। জিনিসটি যতক্ষণ না হাতে পাচ্ছেন, কোনোভাবেই যেন শান্ত হতে পারছেন না। বারবার মুঠোফোন দেখছেন এবং সারাক্ষণ জিনিসটির কথা ভাবছেন। এ ধরনের আচরণ আমরা তখনই করি, যখন মস্তিষ্কে ডোপামিন নামের রাসায়নিকের নিঃসরণ হয় অতিমাত্রায়। বিষয়টা অনেকটা মাদকাসক্তির মতো। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আসক্তি বাড়তে থাকে। ফলে কেনাকাটা করার চাহিদাও বাড়তে থাকে।
অব্যবহৃত জিনিসের পাহাড় গড়ে ওঠা
যত্ন করে তুলে রাখা পোশাকটি কিনেছিলেন কোনো বিশেষ অনুষ্ঠানে পরবেন বলে। কিন্তু আজ পর্যন্ত তা আর পরাই হয়নি। নিজের আশপাশে লক্ষ করে দেখুন তো, এমন আরও জিনিস পান কি না, যা প্রয়োজনীয় ভেবে কিনেছিলেন, কিন্তু কোনো দিনই কাজে আসেনি। যদি এমন জিনিসের পরিমাণ অনেক বেশি হয়, তাহলে বুঝতে হবে আপনি কেনাকাটায় আসক্ত।
রাতের ঘুম বাদ দিয়ে কেনাকাটা করা
ফোনের কেনাকাটা হাতছানি দিয়ে ডাকে শপাহলিকদের। একের পর এক নতুন নতুন জিনিস চোখের সামনে রেখে ঘুমাতে যাওয়া যেন অসম্ভব ব্যপার। অনেক সময় তো চেষ্টা করেও ঘুমাতে পারেন না অনেকে। মাথায় ঘুরতে থাকে কোনো কিছু হাত ফসকে গেল কি না। আর এ কারণেই ঘুম বাদ দিয়ে মুঠোফোন নিয়ে বসে থাকেন তারা।
শপাহলিক হয়ে পড়েছেন আর এটি বুঝতে পারার পর টেনশনে পড়ে গেছেন? ভাববেন না, এটি খুব ভয়াবহ কোনো মানসিক ব্যাধি নয়। তবে এটি আপনার জীবনের অনেক সমস্যার একটি কারণ হতে পারে। তাই এর থেকে রেহাই পেতে নিজেই নিজেকে সাহায্য করুন। প্রয়োজনে পরিবার, বন্ধু অথবা কোনো মনোবিদের সঙ্গে কথা বলুন।