• ঢাকা
  • বুধবার, ২৩ অক্টোবর, ২০২৪, ৭ কার্তিক ১৪৩১, ২০ রবিউস সানি ১৪৪৬

শ্যারেন্টিং: যেভাবে শিশুর ক্ষতি করে


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: অক্টোবর ২৩, ২০২৪, ০৫:২৬ পিএম
শ্যারেন্টিং: যেভাবে শিশুর ক্ষতি করে
ছবি- সংগৃহীত

‘শেয়ারিং’ ও ‘প্যারেন্টিং’—এই দুটি শব্দের মিশ্রণে তৈরি হয়েছে ‘শ্যারেন্টিং’। এর মানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে নিজের সন্তানের ছবি ও দৈনন্দিন ঘটনা সবকিছু যখন শেয়ার করেন তখন তাকে শ্যারেন্টিং বলে। আর একাজটা সাধারণত বাবা- মা করে থাকেন। আর সেজন্যই তাকে শ্যারেন্টিং বলে। অর্থাৎ সন্তান জন্মের পর অনেক মা বাবা আছেন যারা তার সন্তান কখন কী করছে, কী খাচ্ছে সব কিছুই সামাগিক যোগাযোগ মাধ্যমে দিয়ে দেয়। সেখানে হয়ত অনেক লাইক পায়। আবার ভালো কমেন্টও পায়। এতে হয়ত আপনার মনও ভালো হচ্ছে। তাতে আপনি আরও উৎসাহিত হয়ে ফেসবুকেই বানিয়ে নেন ডিজিটাল আর্কাইভ। আর এভাবেই বিপদ ডেকে আনেন সন্তানের।

  • যেহেতু শিশুরা অনুকরণপ্রিয় তাই তারা স্বাভাবিক ভাবে মা-বাবাকে অনুকরণ করবে। মা–বাবা কি করছে না করছে তাদের ভালো লাগা, পছন্দ-অপছন্দ জীবনের শুরুতে সবকিছুই খেয়াল করে। ফলে মা-বাবা যখন সবকিছু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করা শুরু করে তখন শুরুতে শিশুরা তা উপভোগ করে। তারপর সেই নিজেকে তুলে ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এতে তার স্যোশাল মিডিয়ার আসক্তি বাড়বে। আর অল্প বয়সেই এই আসক্তি তাকে অন্য দুনিয়ায় নিয়ে যাবে। কারণ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য এমন অনেক কিছু আছে যা শিশুদের দেখা উচিত না। এভাবে শিশুর একসময় মানসিক স্বাস্থ্যের উপর চাপ পড়বে।
  • বাবা-মায়ের কল্যাণে শিশুর জীবনের প্রতিটি তথ্য সবার জন্য উন্মুক্ত থাকে। আপনি যখন তার ভালো খারাপ ইন্টারনেটে শেয়ার করেন তখন অনেক কমেন্ট আসে। অনেক সময়েই নেতিবাচক কমেন্ট আসে যেগুলো আপনার সন্তানও দেখে। এতে আপনার শিশুর মনে খারাপ প্রভাব পড়ে। মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। কখনও কখনও তার মনের উপরও চাপ পড়ে। যা শিশুর বেড়ে ওঠার বয়সে সবচেয়ে ক্ষতিকারক হয়ে উঠতে পারে।
  • শ্যারেন্টিং শুধু সন্তানের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলে না, সন্তানের নিরাপত্তাও ঝুঁকির মুখে পড়ে। আপনি যখন আপনার সন্তার যখন যেখানে যাচ্ছে, যেখানে পড়ছে, যা করছে সব আপডেট দিচ্ছেন তখন একই সঙ্গে সব মানুষ জেনে যাচ্ছে সবকিছু। এতে কারও যদি কোনও খারাপ মনোভাব থাকে আপনার সন্তানকে নিয়ে তারা সহজেই তা করতে পারে। তারা সহজেই আপনার সন্তানের সব তথ্য পেয়ে যাচ্ছে। অর্থাৎ আপনি মনের অজান্তেই আপনার শিশুকে বিপদে ঠেলে দিচ্ছেন। ইন্টারনেটে কোনো তথ্য দেওয়া মানেই পৃথিবীর সবার জন্য তা উন্মুক্ত করে দেওয়া।
  • আবার আপনি যখন আপনার সন্তার নানান ছবি, ভিডিও শেয়ার করছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তখন সেটা প্রায় সবার কাছে পোঁছে যায়। যার ফলে চাইলেই বিকৃত মানসিকতার যে কেউ তা নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করতে পারেন। এতে আপনার সন্তান ঝুঁকির মধ্যে থাকে।

তাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সন্তানের ছবি শেয়ার করার আগে সতর্ক হোন। সবকিছুই শেয়ার করা থেকে বিরত থাকেন। অনেক সময় হয়ত সন্তানকে নিয়ে গল্প করতে ইচ্ছ হয় ফেইসবুকে। তখন এমন কোন তথ্য দেওয়া থেকে বিরত থাকুন যেটাতে আপনার সন্তানের তথ্য অন্যরা পেয়ে যায়। ছবি দেওয়ার ক্ষেত্রেও সতর্ক হতে হবে। এমন কিছু শেয়ার না করলেই ভালো যাতে গুরুত্বপূর্ণ কোনও তথ্য সবাই জেনে না যায়।

Link copied!