নতুন ফ্যাশন নিয়ে চর্চা থাকে সর্বত্রই। নতুন ডিজাইন, নতুন ফ্যাব্রিক যেকোনো কিছুই ফ্যাশনের মাত্রায় নতুনত্ব যোগ করে। অন্যদিকে পুরোনো পোশাককে ছাটাই করে নতুন পোশাক কিনতেই আগ্রহী গোটা বিশ্ব। এরমধ্যেই চমক দেখালো পুরোনো পোশাক মানে সেকেন্ডহ্যান্ড ফ্যাশন। বলা যায়, ফ্যাশন দুনিয়া সম্প্রতি সাড়া জাগিয়েছে সেকেন্ডহ্যান্ড বা পুরোনো পোশাক।
হুমানা পিপল টু পিপল এবঙ সিম্প্যানি-তে প্রকাশিত হয় অক্সফোর্ড ইকোনমির ‘আফ্রিকা ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের ২৭টি দেশে সেকেন্ডহ্যান্ড কাপড়ের আর্থসামাজিক প্রভাব’ শিরোনামের নতুন এক প্রতিবেদন। সেই প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, সেকেন্ডহ্যান্ড বা পুরোনো পোশাকের বিস্তর বাজার পেয়েছে ইউরোপ ও আফ্রিকা। ২০২৩ সালের জিডিপিতে পুরোনো পোশাক যোগ করেছে বিলিয়ন ডলার। অসংখ্য পরিবেশবান্ধব কাজেরও সুযোগ হয়েছে এর মাধ্যমে।
প্রতিবেদনের তথ্য অনুসারে, বৈশ্বিক চক্রাকার অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে সেকেন্ডহ্যান্ড ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রি। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাজ্য সেকেন্ডহ্যান্ড পোশাককে কাজে লাগিয়ে সরাসরি আয় করেছে ৩.২ বিলিয়ন ডলার। এসব দেশের জিডিপিতেও যোগ করেছে মোট ৭.৬ বিলিয়ন ডলার। বিগত বছরে এ খাত থেকে জার্মানি ৭২০ মিলিয়ন ডলার এবং যুক্তরাজ্য ৪৫০ মিলিয়ন ডলার আয় করেছে।
শুধু তাই নয়, পুরোনো পোশাক বা সেকেন্ডহ্যান্ড পোশাকের ক্ষেত্র থেকে কর্মসংস্থানেরও ব্যবস্থা হয়েছে। ২০২৩ সালে ইউরোপের দেশগুলোতে প্রায় দেড় লাখ চাকরির ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে। যার মধ্যে প্রায় ১ লাখই গ্রিন জবস।
রিসাইক্লিং, আপসাইক্লিং, ডিক্লাটারিংয়ের সঙ্গে যুক্ত পরিবেশবান্ধব চাকরিগুলো গ্রিন জব নামে পরিচিত। সেকেন্ডহ্যান্ড পোশাকের বাজার প্রসারিত হওয়ায় গ্রিন জবের ক্ষেত্রও বাড়ছে। যেখানে কর্মরত রয়েছেন অসংখ্য নারী। জানা যায়, প্রতি ১০ জনে ৮ জনই নারী কর্মী গ্রিন জব-এ কর্মরত রয়েছেন।
প্রতিবেদন দুটি মহাদেশের পোশাক খাতের সামগ্রিক ভ্যালু চেইন ও আর্থসামাজিক প্রভাব তুলে ধরা হয়েছে। যেখানে বলা হয়, সেকেন্ডহ্যান্ড ফ্যাশনের এই ক্ষেত্র বুলগেরিয়া, রোমানিয়া ও পোল্যান্ডের মতো নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে অনেক সুযোগ তৈরি করেছে। ঘানা এই খাত থেকে ৩৫ মিলিয়ন ডলার, কেনিয়া ১৭ মিলিয়ন ডলার আর মোজাম্বিক ১০.৭ মিলিয়ন ডলার আয় করেছে গত বছর। সেই সঙ্গে অসংখ্য পরিবেশবান্ধব কর্মসংস্থানও তৈরি হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেশি সেকেন্ডহ্যান্ড কাপড় বেশি গেছে আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে। এতে উত্তর ও দক্ষিণের দেশগুলোর মধ্যে ভ্যালু চেইন তৈরি হয়েছে। যার ফলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিও বেড়েছে।