• ঢাকা
  • রবিবার, ০২ মার্চ, ২০২৫, ১৬ ফাল্গুন ১৪৩০, ১ রমজান ১৪৪৬

যেসব কারণে রোজা ভেঙে যাবে


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: মার্চ ১, ২০২৫, ০৮:৩৩ পিএম
যেসব কারণে রোজা ভেঙে যাবে
সূত্র: সংগৃহীত

রোজা ইসলামের পাঁচটি মূল স্তম্ভের একটি। এটি আত্মসংযম, ইবাদত ও তাকওয়ার মাধ্যম। পবিত্র রমজান মাসে মুসলিমরা পুরো মাসজুড়ে রোজা রাখেন। সূর্যাস্ত হলে ইফতারের মাধ্যমে রোজা ভাঙেন। কিন্তু কিছু কারণে ইফতারের আগেই রোজা ভেঙে যেতে পারে। কী কী কারণে রোজা ভেঙ্গে যায় তা প্রত্যেক মুসলিমদের জানান আবশ্যক।

ইচ্ছাকৃতভাবে কিছু খাওয়া বা পান করা

কোনো ব্যক্তি যদি রোজা রেখে ইচ্ছাকৃতভাবে কিছু খায় বা পান করে, তাহলে তার রোজা ভেঙে যাবে। তবে এটি ভুলবশত হয়ে গেলে এবং তাৎক্ষণিকভাবে বুঝতে পারলে, তখন রোজা ভঙ্গ হয় না। বরং তাকে রোজা চালিয়ে যেতে হবে।

ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করা

যদি কেউ নিজেই ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করে, তাহলে তার রোজা ভেঙে যাবে। তবে যদি অসাবধানতাবশত বা স্বাভাবিক কারণে বমি হয়, তাহলে এতে রোজার কোনো ক্ষতি হয় না।

যৌন সম্পর্ক স্থাপন করা

রোজা রাখার সময়ের মধ্যে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করলে ভেঙে যাবে। শুধু রোজা ভঙ্গই নয়, বরং কাফফারাও (একাধারে ৬০ দিন রোজা রাখা বা ৬০ জন দরিদ্রকে খাওয়ানো) দিতে হয়।

হস্তমৈথুন

ইচ্ছাকৃতভাবে হস্তমৈথুন করলে বা অন্য কোনো উপায়ে বীর্যপাত ঘটালে রোজা ভেঙে যাবে। তবে যদি স্বপ্নদোষ হয়, তাহলে রোজা নষ্ট হবে না। তবে ফরজ গোসল করতে হবে।

ঋতুস্রাব ও প্রসূতির রক্তস্রাব

নারীদের মাসিক (ঋতুস্রাব) এবং প্রসব-পরবর্তী রক্তস্রাব শুরু হলে তাদের রোজা ভেঙে যায়। এরপর মাসিক শেষে পবিত্রতা অর্জনের পর ভেঙে যাওয়া রোজাগুলো কাজা করতে পারবেন।

ইনজেকশন বা স্যালাইন নেওয়া

যেসব ইনজেকশন বা স্যালাইন খাদ্য বা পুষ্টি সরবরাহ করে, সেগুলো গ্রহণ করলে রোজা ভেঙে যাবে। তবে শুধুমাত্র ওষুধ বা ব্যথানাশক ইনজেকশন নিলে রোজা ভঙ্গ হয় না।

ধূমপান বা নেশাদ্রব্য গ্রহণ

ধূমপান, ই-সিগারেট, শীশা বা কোনো নেশাদ্রব্য গ্রহণ করলে রোজা ভেঙে যায়। কারণ এগুলো শরীরে প্রবেশ করে এবং পুষ্টির অংশ হিসেবে কাজ করে।

অনিচ্ছাকৃতভাবে কিছু গলায় পৌঁছে গেলে

যদি কেউ ভুলবশত পানি পান করে ফেলে বা খাবার খেয়ে ফেলে, তাহলে রোজা ভাঙবে না। তবে যদি ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো বস্তু মুখে নিয়ে চিবিয়ে গিলে ফেলে, তাহলে রোজা ভেঙে যাবে।

রক্তদান বা অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ

যদি কেউ অতিরিক্ত রক্ত দান করে বা শরীর থেকে অতিরিক্ত রক্ত বের হয়ে যায়, তাহলে তার শরীর দুর্বল হয়ে পড়তে পারে। যদিও এটি সরাসরি রোজা ভঙ্গ করে না, তবে এটি থেকে দূরে থাকা উত্তম।

গর্গরা বা নাকে পানি নেওয়ার সময় গলায় প্রবেশ

ওজু করার সময় যদি কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে গলায় পানি প্রবেশ করায় বা নাক দিয়ে পানি টেনে ফুসফুসে পৌঁছে দেয়, তাহলে রোজা ভেঙে যাবে।

দাঁতের চিকিৎসার সময় পানি বা ওষুধ গিলে ফেলা

দাঁতের চিকিৎসার সময় যদি অসাবধানতাবশত পানি, ওষুধ বা রক্ত গিলে ফেলে, তাহলে রোজা ভেঙে যাবে। তবে যদি কোনো বস্তু না গিলে ফেলা হয়, তাহলে রোজার কোনো ক্ষতি হবে না।

অনিচ্ছাকৃতভাবে ধুলাবালি, ধোঁয়া বা সুগন্ধি প্রবেশ করা

যদি কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে ধোঁয়া, ধুলাবালি বা সুগন্ধি নাকে টেনে নেয়, তাহলে রোজা ভেঙে যেতে পারে। তবে স্বাভাবিকভাবে বাতাসের সঙ্গে কিছু ধুলাবালি প্রবেশ করলে তাতে রোজা ভাঙবে না।

রোজা ভাঙার সংকল্প করা

যদি কেউ রোজা রাখার পর ইচ্ছাকৃতভাবে মনে মনে রোজা ভাঙার সংকল্প করে এবং পরে কিছু খেয়ে নেয়, তাহলে রোজা ভেঙে যাবে।

অজ্ঞান হয়ে যাওয়া

কেউ যদি দিনের বড় একটি অংশ অজ্ঞান থাকে বা মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে, তাহলে তার রোজা ভঙ্গ হয়ে যাবে।

অস্ত্রোপচার বা অপারেশনের কারণে খাবার গ্রহণ

যদি কেউ চিকিৎসার জন্য কোনো অস্ত্রোপচার করে এবং খাদ্য বা ওষুধ গ্রহণ করতে বাধ্য হয়, তাহলে তার রোজা ভেঙে যাবে।

যেকোনো কারণেই রোজা ভেঙে গেলে এর জন্য কাজা (পরবর্তী সময়ে রোজা রাখা) বা কাফফারা দিতে হয়। তাই রোজা রাখার সময় সতর্ক থাকা উচিত এবং আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করা উচিত।

Link copied!