পবিত্র রমজান মাস শুরু হয়েছে। পুরো মাসজুড়ে রোজা পালন করা হয়। রোজা পালনের জন্য শেষ রাতে সাহরি খাওয়া আবশ্যক। তারাবিহ নামাজ শেষে খাবার খেয়ে শুয়ে পড়লে এবং সকালে ওঠে ফজর নামাজ আদায় করে রোজা রাখলে তা হবে না। বরং হাদিসে বর্ণিত নিয়ম অনুযায়ী শেষ রাতে সাহরি খেতে হবে এবং খাওয়া শেষে ফজরের নামাজ আদায় করতে হবে। সাহরির বরকত সম্পর্কে হাদিসে বর্ণনা এসেছে- হজরত আনাস বিন মালেক রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, `তোমরা শেষ রাতে খাবার খাও। তাতে বরকত রয়েছে।` (বুখারি ও মুসলিম)
হজরত ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ ও ফেরেশতারা সাহরি গ্রহণকারীর জন্য প্রার্থনা করেন।` (তাবারানি ও ইবনে হিব্বান)
সাহরি খাওয়ার সময় সম্পর্কে হাদিসে বর্ণিত রয়েছে, হজরত বেলাল রাদিয়াল্লাহু আনহুর আজান শুনে সেহরি খাওয়া থেকে বিরত হতে নিষেধ করেছেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। কারণ হজরত বেলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু রাত থাকতেই আজান দিয়ে দিতেন।` তাই সেহরির যে সময় নির্ধারণ করা আছে সেই সময়ই সেহরি খাওয়া উচিত।` (মুসলিম)
সাহরির সময়মতো খাওয়ার কথা হাদিসে বর্ণিত রয়েছে। তাই প্রত্যেক মুসলিম নির্দিষ্ট সময়ে সাহরি খেয়ে রোজার নিয়ত করে রোজা রাখবেন। সাহরির সময় খুব কম হয়। এই সময় পরিবারের সবার খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা করতে হয় বাড়ির গৃহিণীকে। রীতিমতো তোড়জোড় লেগে যায় ওই সময়। তাই সাহরির প্রস্তুতি আগ থেকে নিয়ে রাখা ভালো। সাহরির খাবারের প্রস্তুতি, নামাজের প্রস্তুতি সবকিছুই পরিকল্পনামাফিক হওয়া জরুরি। এতে তাড়াহুড়ো করে সাহরি করতে হয় না এবং সময়মতো নামাজও আদায় করা যায়। চলুন জেনে নেই সাহরির পূর্ব প্রস্তুতি কেমন হবে_
- সাধারণত রান্না প্রস্তুতিতে অনেকটা সময়ই লেগে যায়। তাই সাহরিতে কী খাবেন তা আগেই ঠিক করে রাখুন। সাহরির খাবার আগেই রান্না করে রাখতে পারেন। এক্ষেত্রে হটপটে খাবার রেখে দিতে পারেন। দীর্ঘক্ষণ গরম থাকবে।
- যারা সাহরিতে ভাত খেতে পছন্দ করেন তারা ওই সময়ই রান্না করে নিতে পারেন। তবে এরজন্য চাল ধুয়ে প্রস্তুত করে রাখুন। সাহরির সময় শুধু চুলায় বসিয়ে রান্না করে নিবেন। এতে গরম গরম ভাত খাওয়া যাবে।
- অনেকেই ঘুম থেকে সময়মতো উঠতে না পারায় সাহরি করতে পারেন না। এরজন্য় মোবাইল ফোন বা বাসার ঘড়িতে অ্যালার্ম দিয়ে রাখুন। সাহরির সময় কখন শেষ হবে তা আগেই জেনে নিন। এরপর সেই অনুযায়ী ঘড়ির অ্যালার্ম সেট করুন। খাওয়া দাওয়া শেষ করতে কত সময় লাগবে তা ধারণা করে কমপক্ষে সাহরি শেষ হওয়ার ঘণ্টাখানেক আগেই ঘুম থেকে উঠে পরুন।
- সাহরির সময় প্রয়োজনীয় সবকিছু আগেই ঠিক করে রাখুন। টেবিলে প্লেট, গ্লাস সাজিয়ে রাখুন।
- সাহরির খাওয়া দাওয়া শেষ করে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করতে পারেন। এরপর ফজরের আজান হলে নামাজ আদায় করুন। এরজন্য় সাহরিতে যথেষ্ট সময় রাখুন।