কর্মক্ষেত্রে বা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের নানান সময়েই যে কোনও বিষয় নিয়ে কথা বলতে হয়। সেটা হয় ক্লাস রুমে ক্লাস ভর্তি সহপাঠীদের সামনে কিংবা অফিসে সহকর্মীদের সামনে। প্রেজেন্টেশন মূলত যে কোন একটা বিষয় নিজে যা বুঝেছে সেটা অন্যদেরকে বুঝিয়ে দেওয়া। এক্ষেত্রে যে বিষয় সবার সামনে প্রেজেন্ট করতে হবে বা আলোচনা করতে হবে সেটা আগে ভালো ভাবে নিজেকে আয়ত্তে আনতে হবে। অনেকের ক্ষেত্রেই দেখা যায় ঐ বিষয়ে জানা থাকা সত্ত্বেও আত্মবিশ্বাসের অভাবে ভালো প্রেজেন্টেশন দিতে পারে না। কিন্তু কর্মস্থল হোক বা যে কোনও জায়গায় ভালো প্রেজেন্টেশনের গুরুত্ব খুব। ভালো আলোচনা করতে পারলে বা প্রেজেন্টেশন দিতে পারলে আপনার আলোচনা বেশ ভালো ভিত্তি পাবে এবং অন্যান্যদের তুলনায় আপনি অনেকটা এগিয়ে থাকবেন। তাই প্রেজেন্টেশনের আগে আত্মবিশ্বাসী হওয়া দরকার। আগে থেকে কিছু প্রস্তুতি নেওয়া দরকার। সেক্ষেত্রে কিছু বিষয় মেনে চলা দরকার। যেমন-
উপস্থাপনা
কর্মক্ষেত্র বা শ্রেণিকক্ষে উভয় জায়গায় উপস্থাপনার ক্ষেত্রেই বক্তৃতা দেওয়ার জন্য দক্ষতার প্রয়োজন হয়। কর্মক্ষেত্রে উপস্থাপনার মূল লক্ষ্য হয় কোনো বিষয় সম্পর্কে তথ্য জানানো কিংবা তার স্বপক্ষে জনমত সৃষ্টি করা। এ ধরনের বক্তৃতা ব্যখা বিশ্লেষণ-নির্ভর, তথ্যসমৃদ্ধ এবং যুক্তি ও প্রমাণনির্ভর হয়ে থাকে। গল্প কাহিনির ওপর নির্ভরতা কম হয়। তাই আপনার যে বিষয়ে আলোচনা বা প্রেজেন্টেশন করার কথা সে বিষয়ে আগে থেকে তথ্য সংগ্রহ করুন। সে বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করুন। এতে আপনার আত্মবিশ্বাস বাড়বে।
সঠিক পোশাক নির্বাচন
পোশাক অনেক সময়েই আত্মবিশ্বাস বাড়ায়। অনেক সময় দেখা যায় পোশাকের কারণেও মানুষ হীনমন্যতায় ভোগে। তাই প্রেজেন্টেশন দেওয়ার আগে ঠিকঠাক পোশাক নির্বাচন করুন। করপোরেট মিটিং এ আউটফিট পারফেক্ট হলে কনফিডেন্স বেড়ে যায় কয়েকগুণ। কর্মক্ষেত্রে চেষ্টা করবেন ফরমাল ড্রেস কোড মেনে চলতে। কালারের ক্ষেত্রেও খেয়াল রাখতে হবে। পরিপাটি এবং মেকআপ হবে মার্জিত কিন্তু ব্যক্তিত্বপূর্ণ। ঠিকঠাক ভাবে তৈরি হতে পারলে আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায় কয়েকগুণ।
যোগাসন করুন
যেসব বিষয় আপনাকে উদ্বিগ্ন করছে, দুশ্চিন্তায় ভোগাচ্ছে সেই বিষয়গুলোকে সঠিকভাবে চিহ্নিত করুন এবং ঠিক তার বিপরীতে কি কি শিথিলায়ন প্রক্রিয়া আপনি নিতে পারেন সেসব খুঁজে বের করুন। সেভাবে প্রস্তুতি নিন। প্রয়োজনে প্রেজেন্টেশন দেওয়ার আগে সকালে ব্রিদ ইন ব্রিদ আউট করুন। যোগাসন করুন। এতে মানসিক চাপ দূর হবে।
স্লাইড তৈরি করুন
যে কোন বিষয় ভালো ভাবে বুঝানোর জন্য প্রয়োজন সঠিক উপস্থাপন। তাই বিষয়গুলোর উপর স্লাইড তৈরি করুন। তবে দীর্ঘ স্লাইড না। কেন না অতিরিক্ত তথ্যের কারণে শ্রোতারা মনোযোগ হারিয়ে ফেলতে পারেন। বিশেষজ্ঞরা একটি গড়পড়তা দৈর্ঘ্যের উপস্থাপনার জন্য ১০ থেকে ১২টি স্লাইড তৈরির পরামর্শ দেন। এতে করে পুরো উপস্থাপনা ৩০ মিনিট দীর্ঘ হলেও শ্রোতারা বক্তব্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে স্ক্রিনে থাকা বার্তাগুলো ভালোভাবে পড়ে বোঝার সুযোগ পেতে পারেন।
নিজের উপর বিশ্বাস বাড়ান
যে কোনও পরিস্থিতেই হোক নিজের উপর বিশ্বাস হারাবেন না। নিজের ওপর প্রথমেই বিশ্বাস রাখতে হবে। অফিস মিটিং এ কী বলবেন তা ঠিক করে নেয়া, আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে সেগুলো প্রেজেন্ট করা এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো নিজের ওপর পূর্ণ আস্থা রাখা। আপনি যোগ্য বলেই এখানে আছেন। আপনার যোগ্যতাই আপনাকে সামনে নিয়ে যাবে এ ধরনের ইতিবাচক চিন্তা করতে হবে।
সময়ের আগে মিটিংয়ে উপস্থিত হোন
ভালো প্রেজেন্টেশনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হলো সময়ের আগে মিটিং রুমে উপস্থিত থাকা। এতে আপনার মানসিক ভাবে স্থিতি আসবে।