• ঢাকা
  • বুধবার, ২২ জানুয়ারি, ২০২৫, ৮ মাঘ ১৪৩০, ২৩ রজব ১৪৪৬

শিশুর ডায়াপার ব্যবহারে সতর্কতা


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: জানুয়ারি ২২, ২০২৫, ০৪:৪৭ পিএম
শিশুর ডায়াপার ব্যবহারে সতর্কতা
ছবি: সংগৃহীত

শিশুর স্বাস্থ্যের প্রতি যত্নশীল হওয়া প্রত্যেক অভিভাবকদের দায়িত্ব। বর্তমান সময়ে শিশুর জন্য ডায়াপারের ব্যবহার বেড়েছে। যা শিশুর স্বাস্থ্যগত দিকেও প্রভাব ফেলে। ডায়াপার ব্যবহারের ক্ষেত্রে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় খেয়াল রাখা জরুরি। কারণ এটি শিশুর আরাম ও স্বাস্থ্যের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলে। ডায়াপারের সঠিক ব্যবহার শিশুর ত্বক সুস্থ রাখার পাশাপাশি, আরামদায়ক পরিবেশ নিশ্চিত করে।

সঠিক আকারের ডায়াপার

শিশুর জন্য ডায়াপার বেছে নেওয়ার সময় তাদের বয়স, ওজন এবং গঠনের দিকে খেয়াল রাখুন। সেই অনুযায়ী ডায়াপারের সঠিক আকার নির্বাচন করুন। ডায়াপার ছোট বা বড় হলে তা শিশুর ত্বকে র‍্যাশ সৃষ্টি করে। পাশাপাশি আরামদায়কও হয় না। বাজারে বিভিন্ন আকারের ডায়াপার পাওয়া যায়—নিউবর্ন থেকে শুরু করে টডলার পর্যন্ত। শিশুর জন্য উপযুক্ত সাইজের ডায়াপার কিনতে প্যাকেটের গায়ে লেখা ওজন নির্দেশিকা দেখে কিনুন।

মানসম্পন্ন ডায়াপার ব্যবহার

ডায়াপারের মান ভালো হওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিম্নমানের ডায়াপার শিশুর ত্বকের ক্ষতি করে। শিশুকে অস্বস্তিতে ফেলে। উচ্চমানের ডায়াপার সাধারণত ত্বকের সঙ্গে নরম অনুভূতি দেয়। এর ভালো শোষণ ক্ষমতাও থাকে। কিছু ব্র্যান্ড ত্বক-বান্ধব উপাদান দিয়ে তৈরি হয়। যা নবজাতকের নরম ত্বকের জন্য নিরাপদ।

সময়মতো ডায়াপার পরিবর্তন

ডায়াপার পরিবর্তনে দেরি করা একদমই ঠিক নয়। এতে শিশুর ত্বক দীর্ঘক্ষণ আর্দ্রতায় থাকে। যা র‍্যাশ, লালচে ভাব এবং অন্যান্য ত্বকের সমস্যার কারণ হয়। শিশুর ডায়াপার নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা উচিত। ডায়াপার ভিজে গেলে বা মল-মূত্র হলে দ্রুত বদলে ফেলতে হবে। নবজাতকদের ক্ষেত্রে সাধারণত ২-৩ ঘণ্টা পরপর ডায়াপার বদলানোর পরামর্শ দেওয়া হয়।

ডায়াপার ব্যবহারের আগে ত্বক পরিষ্কার করা

প্রতিবার ডায়াপার বদলানোর আগে শিশুর ত্বক ভালোভাবে পরিষ্কার করা জরুরি। কুসুম গরম পানি এবং নরম কাপড় ব্যবহার করে পরিষ্কার করতে হবে। এর পাশাপাশি, মাইল্ড এবং অ্যালকোহল-মুক্ত ওয়াইপস ব্যবহার করা যেতে পারে। ত্বক পরিষ্কার করার পর তা শুকিয়ে নিতে হবে, কারণ ভেজা ত্বকে নতুন ডায়াপার পরালে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে।

ডায়াপার র‍্যাশ থেকে রক্ষা

ডায়াপার র‍্যাশ শিশুদের একটি সাধারণ সমস্যা। এটি সাধারণত দীর্ঘ সময় ধরে ভেজা ডায়াপার পরা বা নিম্নমানের ডায়াপারের কারণে হয়। র‍্যাশ এড়ানোর জন্য প্রতিবার ডায়াপার বদলানোর পর শিশুর ত্বকে ময়েশ্চারাইজিং ক্রিম বা ডায়াপার র‍্যাশ ক্রিম ব্যবহার করুন। জিঙ্ক অক্সাইড বা অ্যালোভেরা সমৃদ্ধ ক্রিম র‍্যাশ প্রতিরোধে কার্যকর।

ভেন্টিলেশন নিশ্চিত করা

শিশুর ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে নিয়মিত কিছুক্ষণ ডায়াপার ছাড়া রাখা প্রয়োজন। দীর্ঘ সময় ডায়াপার পরার ফলে ত্বকের আর্দ্রতা বেড়ে যায়। ত্বক পর্যাপ্ত বাতাস পায় না। প্রতিদিন কিছু সময়ের জন্য শিশুকে ডায়াপারমুক্ত রেখে তাদের ত্বকে প্রাকৃতিকভাবে বাতাস চলাচলের সুযোগ দিন। এটি র‍্যাশ প্রতিরোধে সাহায্য করে।

রাতের জন্য বিশেষ ডায়াপার ব্যবহার

রাতে শিশুর জন্য দীর্ঘক্ষণ শোষণক্ষম ডায়াপার ব্যবহার করা ভালো। রাতে ঘুমের সময় বারবার ডায়াপার বদলানো সম্ভব না হওয়ায় লং-লাস্টিং ডায়াপার ব্যবহার করা উপযোগী। এ ধরনের ডায়াপার দীর্ঘ সময় ধরে মল-মূত্র শোষণ করে শিশুকে আরামদায়ক ঘুম নিশ্চিত করে। তবে সকালে উঠে প্রথম কাজই হওয়া উচিত ডায়াপার পরিবর্তন করা।

নতুন ডায়াপার চালু করার সময় সতর্কতা

প্রথমবার একটি নতুন ব্র্যান্ড বা ধরনের ডায়াপার ব্যবহার করার আগে তা শিশুর ত্বকে মানানসই কিনা পরীক্ষা করুন। নতুন ডায়াপারের কারণে শিশুর ত্বকে অ্যালার্জি বা র‍্যাশ হতে পারে। প্রথমে অল্প সময়ের জন্য ডায়াপারটি ব্যবহার করে দেখুন এবং কোনো সমস্যা দেখা দিলে ব্র্যান্ড পরিবর্তন করুন।

শিশুর ত্বকের প্রতি বিশেষ যত্ন

ডায়াপার ব্যবহারের পাশাপাশি শিশুর ত্বকের প্রতি বাড়তি যত্ন নেওয়া প্রয়োজন। প্রতিদিন শিশুর ত্বক ভালোভাবে পরিষ্কার করুন এবং ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। এটি ত্বককে নরম এবং মসৃণ রাখবে।

সঠিক উপাদানের ডায়াপার পছন্দ করা

ডায়াপার কেনার সময় নিশ্চিত করুন, এটি ত্বক-বান্ধব উপাদান দিয়ে তৈরি। কিছু ডায়াপারে কেমিক্যাল এবং সুগন্ধি থাকে, যা শিশুর ত্বকের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তাই প্রাকৃতিক এবং রাসায়নিক-মুক্ত ডায়াপার বেছে নেওয়া সবচেয়ে ভালো।

পরিবেশবান্ধব ডায়াপার বিবেচনা

বাজারে পরিবেশবান্ধব বা বায়োডিগ্রেডেবল ডায়াপার পাওয়া যায়। এগুলো প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে তৈরি হওয়ায় ত্বকের জন্য নিরাপদ এবং পরিবেশের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে না। আপনি চাইলে এই ধরনের ডায়াপার ব্যবহার করতে পারেন।

ডায়াপার স্টোরেজ এবং ডিসপোজাল

ডায়াপার সংরক্ষণ করার সময় সেগুলোকে শুকনো এবং ঠাণ্ডা স্থানে রাখুন, যাতে তা নষ্ট না হয়। ব্যবহৃত ডায়াপার সঠিকভাবে ফেলে দেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্যাকেটজাত পদ্ধতিতে ডায়াপার ফেলে দিন, যাতে তা পরিবেশে দুর্গন্ধ বা দূষণ সৃষ্টি না করে।

Link copied!