বাইরের জীবাণু তো রয়েছেই। কিন্তু নিজের অবহেলা কিংবা অলসতাবশত ঘরের ভেতরে চুপটি করে লুকিয়ে থাকা অদৃশ্য অথচ শক্তিশালী সব জীবাণু খুব স্বযতনে লালনপালন করছেন। ফলসরূপ নানারকম রোগবালাইয়ের সঙ্গে লড়তে হয় পাঞ্জা। অন্যদিকে অনেকসময় আমরা বুঝতেও পারি না যে ঘরের কোন জায়গাগুলোতে আসলে জীবাণু রয়েছে। আজ জানিয়ে দেব ঘরের কোন জায়গায় ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস সবচেয়ে বেশি অবস্থা করে যেগুলো নিয়মিত পরিষ্কার রাখা জরুরি। চলুন জেনে নেওয়া যাক-
সুইচ এবং দরজার হাতল
বেশি স্পর্শ করা বা বেশি মানুষ থাকার জায়গাগুলো জীবাণু এবং ভাইরাসের জন্য সক্রিয় জায়গা হিসেবে ধরা হয়। বাতি বা ফ্যানের সুইচ এবং দরজার হাতলের মতো জায়গাগুলোতে জীবাণু নিয়ে লুকিয়ে থাকে। ঘন ঘন হাত ধোয়ার অভ্যাস ভালো, তবে এর পাশাপাশি প্রতিদিন সুইচ এবং দরজা হাতল স্যানিটাইজ করতে ভুলবেন না। জীবাণুর যাতে না বাড়তে পারে সেজন্য সাদা ভিনেগার বা ব্লিচ ওয়াটার ব্যবহার করতে পারেন।
রান্নাঘরের সিঙ্ক এবং কল
রান্নাঘরের সিঙ্কে টয়লেট সিটের চেয়েও বেশি জীবাণু থাকে। আপনার সিঙ্কে ভিজিয়ে রাখা অবশিষ্ট খাদ্য কণা ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়ার প্রজনন স্থল হিসেবে কাজ করতে পারে। এগুলো সহজেই আপনার হাতের স্পর্শ পেতে পারে এবং রান্নাঘরের অন্যান্য এলাকায় এমনকি খাবারেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। জীবাণুর বিস্তার রোধ করার সর্বোত্তম উপায় হলো প্রতিদিন আপনার নোংরা থালা-বাসন ধোয়া এবং সিঙ্কটি পরিষ্কার রাখা।
বাথরুম
নানান রোগ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়ার প্রজনন ক্ষেত্রের সবচেয়ে আদর্শ জায়গা হলো বাথরুম। যেখানে আপনি আপনার শরীর থেকে ময়লা ঝেড়ে ফেলেন। বাথরুমের ড্রেন, ঝরনার মুখ, কল, তোয়ালে রেল, মেঝে, টয়লেটের আসন, দেয়াল, দরজার হাতল ইত্যাদি সবসময় পরিষ্কার রাখতে হবে। এগুলো প্রতিদিন কার্যকর জীবাণুনাশক এবং পরিষ্কার মাইক্রোফাইবার কাপড় দিয়ে মুছতে হবে।
টিভির রিমোট
বাড়িতে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত জিনিসগুলোর মধ্যে একটি হলো টিভির রিমোট। এটি হাত থেকে হাতে ঘুরতেই থাকে। পছন্দের চ্যানেল দেখার জন্য এটি প্রয়োজন হয়ই। এছাড়া এটি সোফার ভাঁজে, বিছানার ওপর, মেঝে ইত্যাদি জায়গায় পড়ে থাকে অনেক সময়। যে কারণে রিমোটের গায়ে জীবাণু আরও বেশি জমে। তাই টিভির রিমোট নিয়মিত পরিষ্কার করা জরুরি।
মরিচ এবং লবণ রাখার পাত্র
এগুলো হলো একটি ঘর জীবাণুমুক্ত করার ক্ষেত্রে সবচেয়ে উপেক্ষিত জিনিসগুলির মধ্যে অন্যতম। গবেষণায় দেখা গেছে মরিচ এবং লবণের পাত্রগুলোতে ক্ষতিকারক জীবাণু লুকিয়ে থাকে এবং ঠান্ডা ভাইরাস ছড়াতে পারে। ভাইরাসগুলো কয়েক ঘণ্টা থেকে ৩ দিন পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে। সুতরাং জীবাণুর বিস্তার রোধ করতে লবণ, মরিচ এবং অন্যান্য মসলা রাখার পাত্র নিয়মিত পরিষ্কার করুন।
টুথব্রাশ
আপনার টুথব্রাশটিও জীবাণুর প্রজনন ক্ষেত্রগুলোর মধ্যে একটি যা অসুস্থতার কারণ হতে পারে। মনে রাখতে হবে আর্দ্রতা বেশি থাকে সেখানে জীবাণু জন্মানোর সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই টুথব্রাশটি যেখানে রাখলে শুকনা থাকবে সেই জায়গাটাতেই রাখুন। এছাড়াও এটি আপনার টয়লেট থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করুন।