উত্সবকে ঘিরে বরাবরই পোশাকের আয়োজন থাকে। এবারও ব্যতিক্রম নয়। মহান বিজয় দিবসকে ঘিরে ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে কেনাকাটা। দেশপ্রেমের ভাবনা নিয়ে বিজয় দিবসে বিজয়ের পোশাকে নিজেকে সাজাতে চান সবাই। বিজয়ের পোশাক মানেই লাল সবুজের ছোঁয়া। এই দুটি রঙকেই মুখ্য করে আরও রঙের সংমিশ্রণে তৈরি হয় বিজয়ের পোশাক। বাংলাদেশের গৌরবময় ইতিহাসের বিভিন্ন অধ্যায় ও কথা, কবিতা উঠে আসে সেসব পোশাকে। যা পরে বাংলাদেশিরা দেশের প্রতি নিজেদের ভালোবাসা তুলে ধরেন।
বাংলাদেশে বাঙালিদের সময়োপযোগী ফ্যাশনে অভ্যস্ত করেছে ফ্যাশন হাউজগুলো। তাদের সৃজনশীলতার সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে বিজয় বা স্বাধীনতা দিবসে লাল-সবুজের পোশাকে সেজে উঠেন বাঙালিরা। বরাবরের মতো এবারও বিজয়ের পোশাকে এসেছে নতুনত্ব। দেশিয় ফ্যাশন হাউসগুলো পোশাকে রেখেছে লাল সবুজের সমাহার। পতাকা থিমের লাল-সবুজ রঙের টি-শার্ট হোক কিংবা সেলোয়ার কামিজ বা পাঞ্জাবি সব পোশাকেই রয়েছে নতুনের ছোঁয়া। ডিজাইন, ফ্যাব্রিকের রয়েছে বৈচিত্র্য। ছোট থেকে বড় সবার জন্যই রাখা হয়েছে এসব আয়োজন। সেই সঙ্গে শীতের মৌসুমকেও প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। শাড়ি, কামিজ, টপ, পাঞ্জাবি, ফতুয়া, টি-শার্ট, শীতের শালে রাখা হয়েছে বিজয়ের লাল সবুজের ছোয়া।
সময়ের পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু ফ্যাশনধারা বদলে গেলেও দেশপ্রেমের চেতনা রয়েছে অটুট। সেই প্রমাণই পাওয়া গেছে বিজয়ের পোশাকগুলোতে। ফ্যাশন হাউস কে ক্র্যাফটের কালেকশনে থাকা পোশাকে তুলে ধরা হয়েছে গৌরবের নানা অধ্যায়, নানা অর্জন। থিমভিত্তিক রং ও মোটিফের বিন্যাস রয়েছে পোশাকে। সঙ্গে থাকছে আরামদায়ক কাপড়ও। আর প্রিন্টের কাজ কিংবা অ্যাম্বোয়ডারি কাজের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে বিভিন্ন ডিজাইন। আরও রয়েছে স্ক্রিন প্রিন্ট ও ব্লক প্রিন্ট। যা দিয়ে তুলে ধরা হয়েছে একাত্তরের ছবি।
একাত্তরের প্রতি শ্রদ্ধা আর দেশপ্রেমের চেতনাকে ধারণ করে সব বয়সীরাই বিজয়ের পোশাক বেছে নিচ্ছেন। দেশিয় ফ্যাশন হাউজসহ বিভিন্ন পোশাকের দোকানে এখন ভিড় করছেন ক্রেতারা। উদ্দেশ্য বিজয়ের পোশাকে বিজয়ের আনন্দ উপভোগ করা। দেশপ্রেমকে গায়ে জড়িয়ে বিজয়ের আনন্দে একাত্মতা প্রকাশ করতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন সবাই।
রাজধানীর মার্কেটের বিভিন্ন শোরুম ঘুরেও বিজয়ের পোশাক পাওয়া যাবে। কাপল ড্রেস কিংবা পরিবারের ছেলে মেয়ে, স্বামী-স্ত্রীরা একই ডিজাইনের পোশাকও কিনতে পারবেন। এছাড়াও একাত্তরের ইতিহাসের কোনো পঙ্ক্তি, জাতীয় সংগীতের লাইন, একাত্তরে বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু হয়ে ওঠা জর্জ হ্যারিসনের গানের লাইন লিখেও বানানো হয়েছে বিজয়ে পোশাক।
বর্তমান সময়ে ট্রেন্ডে চলা কো-অর্ড পোশাকেও রয়েছে বিজয়ের রঙের ছোঁয়া। শুধু লাল কিংবা শুধু সবুজ রঙের কো-অর্ড পরে সঙ্গে লাল সবুজে রঙের শাল জড়িয়ে নিলেই কিন্তু বেশ লাগবে। শুধু পোশাকই নয়, অন্যান্য অনুষঙ্গেও বিজয়ের আবহ ফুটিয়ে তোলা হয়। দোপাট্টা, হিজাব, কানের দুল, খোঁপার ক্লিপ, হাতের চুড়ি-বালা, পুঁতির মালা, মাস্ক, গলার হার, ঘড়ি, চশমার ফ্রেম, মাথার হ্যাট-সব কিছুতেই যেন থাকে বিজয় দিবসের চিহ্ন। এসবই দেশিয় ফ্যাশন হাউসগুলোতে, বিভিন্ন মার্কেটের দোকানে কিংবা অনলাইনভিত্তিক পেইজগুলোতে পাওয়া যাবে। সময় না থাকলে ঘরে বসেই বিজয়ের পোশাক কিনে নিতে পারবেন সহজেই। শুধু মনে রাখবেন, বিজয়ের পোশাকে শুধু বিজয় দিবসের থিম থাকা চাই। লাল-সবুজ রঙের পোশাকেই বিজয় দিবসে আপনি হবেন বৈচিত্র্যময়।