রান্না করা খাবারে তড়কা লাগাতে দেওয়া হয় ঘি। খাবারের স্বাদ আর সুগন্ধ যেন কয়েকগুণ বেড়ে যায় ঘিয়ের ব্যবহারে। এই জন্য় ঘি-কে রান্নাঘরের ‘সুপারফুড’ বলা হয়। এই সুপারফুড শুধু স্বাদের নয়, ত্বকেরও বিশেষভাবে যত্ন নেয়। যুগ যুগ ধরে নারীর সৌন্দর্যে ঘি এর ব্যবহার হচ্ছে। প্রাচীন যুগে বিয়ের আগে নববধুকে প্রস্তুত করতে ঘি দিয়েই রূপচর্চা করা হতো। তবে কালের পরিবর্তনে বিভিন্ন ক্রিমের চল এসেছে। অনেকেই ত্বকে ঘিয়ের ব্যবহারের কথা ভুলেই গেছে। অথচ এই একটি উপাদান ব্যবহারেই ত্বকের হাজারো সমস্যার সমাধান সম্ভব। বলা যায়, প্রাকৃতিকভাবে ত্বকের যত্নে ঘিয়ের জুড়ি নেই।
ঘিয়ে রয়েছে ভিটামিন এ, ডি এবং ই। যা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এটি বাতাসে ভেসে থাকা দূষণের সঙ্গে লড়াই করে। ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখে। শুধু তাই নয়, বয়স ধরে রাখতেও নিয়মিত ঘি মাখুন। কারণ এতেঅ্যান্টি-এজিং প্রপার্টি গুণ রয়েছে। যার ফলে ত্বক কুচকে যাওয়া, রুক্ষ হয়ে যাওয়া থেকে রেহাই দেয়। চলুন জেনে নেই ত্বকে নানা সমস্যা সমাধানে ঘি কীভাবে রূপটানে ব্যবহার করবেন।
- ঘি শুষ্ক ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। শুষ্ক ত্বক অনেক রুক্ষ হয়। এই রুক্ষতা কমাবে ঘি। হাতে কয়েক ফোঁটা ঘি নিয়ে ত্বকে ভালোভাবে লাগিয়ে নিন। ত্বকে টানটান ভাব না আসা পর্যন্ত রাখুন। এরপর ধুয়ে ফেলুন। রুক্ষতা কমে যাবে। ত্বক কোমল হবে।
- ত্বকের বয়সের ছাপ পড়ছে? বলিরেখা দেখা যাচ্ছে? এখনই রূপটানে ঘি ব্যবহার করুন। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে ত্বকে পড়া বলিরেখা ঘিয়ের ব্যবহারে কমে যাবে। ঘিয়ে ভিটামিন ই থাকে। যা ত্বকের যৌবন ধরে রাখে। হাতে ঘি নিয়ে প্রতিরাতে মুখের ত্বকে লাগিয়ে নিন। বলিরেখা শিগগিরই কমে যাবে।
- শুধু মুখের ত্বকে নয়, পুরো শরীরের যত্নও নিবে ঘি। এটি দিয়ে বাথ অয়েল বানিয়ে নিতে পারেন। ৫ ফোঁটা ঘি আর ১০ ফোঁটা এসেনশিয়াল তেল মিশিয়ে নিন। গোসলের পর এটি মুখে, ঘাড়ে, হাতে ও পায়ে লাগাতে পারেন। এটি প্রাকৃতিক ময়শ্চারাইজার।
- ডার্কসার্কেল বা চোখের নীচে কালচে দাগ নিয়ে অনেকেই চিন্তিত। কোনো প্রসাধনী ব্যবহারেই যেন কালচে দাগ কমতে চায় না। এর জন্য সহজ সমাধান হতে পারে ঘি। প্রতিদিন কয়েকফোটা ঘি চোখের নীচে কালচে দাগের স্থানে লাগিয়ে নিন। হালকাভাবে ম্যাসাজ করুন। দেখবেন কিছুদিনের মধ্যেই তা কমে যাবে।
- ত্বক যতই সুন্দর হোক ঠোট কালচে বা রুক্ষ হলে সৌন্দর্য ম্লান হয়ে যায়। কালচে ঠোটে গোলাপী আভা ফিরিয়ে আনতে ব্যবহার করুন ঘি। প্রতিদিন একটু ঘি ঠোঁটের উপরে মালিশ করুন। কালচে ভাব কমে যাবে। ঠোট অনেকটাই নমনীয় হবে।
বিশেষ সতর্কতা
যাদের ত্বক তৈলাক্তি কিংবা যাদের ত্বকে ব্রণের সমস্যা রয়েছে তারা ঘি ব্যবহার করবেন না। কারণ ঘি তৈলাক্ত খাবার। যা ব্রণের সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। এক্ষেত্রে শুধু ঠোট বা চোখের কালচে ভাব দূর করতে ওই নির্দিষ্ট স্থানেই এক ফোঁটা ঘি নিয়ে ম্যাসাজ করতে পারেন। উপকার মিলবে।