দেশজুড়ে এখন গ্যাসের সমস্যা। অধিকাংশ বাড়িতে গ্যাস নেই বললেই চলে। সারাদিনে কিছু সময়ের জন্য গ্যাস থাকলেও এর তাপ থাকে খুবই কম। বাধ্য হয়েই সিলিন্ডার গ্যাসের ওপর ভরসা করতে হচ্ছে। সিলিন্ডার ব্যবহারেও সতর্ক থাকতে হয়। একটু অসতর্ক হলেই ঘটে যায় বিপদ। তাহলে উপায় কী?
বাড়িতে রাইস কুকার থাকলে এই সমস্যার সমাধান পাওয়া যাবে। রাইস কুকার দিয়ে কম-বেশি সব রান্না করা যাবে। শুধু ভাত রান্নাতেই এটি ব্যবহার হয় না, পোলাও, খিচুড়ি, মাছ, মাংস রান্নাও সহজেই করা যায়। কীভাবে রাইস কুকারে দ্রুত রান্না করা যায় চলুন জেনে নেই।
ভাত
পরিমাণ মতো চাল ধুয়ে নিন। চালের দ্বিগুণ পানি দিন। রাইস কুকারের প্যানে বসিয়ে দিন। রাইস কুকারের Cook অপশন টা চালু করুন। ভাতের পানি শুকিয়ে এলেCook অপশনটা অটো বন্ধ হয়ে Warm অপশনে চলে যাবে। এরপর ঢাকনা উঠিয়ে ভাত নেড়ে দিয়ে ঢেকে রাখুন। খাওয়ার সময় ভাত গরম পরিবেশন করুন।
খিচুড়ি
পরিমাণমতো পোলাও চাল এবং মসুর, মুগ ডাল ভালো করে ধুয়ে আধঘণ্টা ভিজিয়ে রাখুন। এরপর চাল ও ডালের সঙ্গে আদা, পেঁয়াজ ও রসুন বাটা, হলুদ, মরিচ, ধনিয়া ও জিরা গুঁড়ো, লবণ, এলাচ, তেজপাতা মিশিয়ে নিন। তেল বা ঘি দিয়ে ভালোভাবে মাখিয়ে নিন। চাল ও ডালের পরিমাণের দ্বিগুণ পানি দিয়ে কুকারে বসিয়ে দিন। পোলাও চাল হলে চালের দ্বিগুণ থেকে কিছুটা কম পানি দিন। এবার রাইস কুকারের Cook বাটন চালু করুন।খিচুড়ির পানি শুকিয়ে গেলে Cook বাটনটা অটো বন্ধ হয়ে Warm অপশনে চালু হবে। খিচুড়িটা ভালোভাবে নেড়ে আরো ৬মিনিট ঢেকে রাখুন। খিচুড়ি তৈরি হয়ে যাবে।
পোলাও
চাল ধুয়ে কিছুক্ষণ পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। এরপর রাইস কুকার ঢাকনা খোলা অবস্থায় ভেতরের প্যানে তেল বা ঘি ঢেলে কুকারটি চালু করে দিন। তেল গরম হলে প্যানে পেঁয়াজ কুচি, গরম মশলা ও পোলাওর চাল দিয়ে নাড়ুন। চাল হালকা ভেজে পরিমাণ মতো পানি দিন। সাধারণত চালের পরিমাণের দ্বিগুণ গরম পানি দিতে হয়। এরপর রাইস কুকারের ঢাকনা বন্ধ করুন। তে হবে। পানি শুকিয়ে এলে Cook বাটনটা অটো বন্ধ হয়ে Warm বাটনে চলে আসবে। এরপর ঢাকনা উঠিয়ে ভালোভাবে নেড়ে ওই অবস্থায় ৫ থেকে ৬ মিনিটের জন্য রেখে দিন। শেষে ঘি, পেঁয়াজ বেরেস্তা দিয়ে পরিবেশন করুন।
মুরগির রোস্ট
মুরগি পছন্দমতো টুকরো করে লবণ, তেল, পেঁয়াজ, রসুন ও আদা বাটা, টক দই, মরিচ, হলুদ, জিরা, বাদাম বাটা, গরম মশলার গুঁড়ো, তেজপাতা, এলাচ দিয়ে মাংস ভালোভাবে মাখিয়ে নিয়ে কিছু সময়ের জন্যে রেখে দিন। এবার রাইস কুকারের প্যানে হালকা তেল বা ঘি দিয়ে শুধু মুরগির টুকরোগুলো হালকা ভেজে নিতে হবে। এরপর বাকি মিশ্রণটি প্যানে ঢেলে দিয়ে পরিমাণ মতো পানি বা তরল দুধ দিয়ে কুকারের ঢাকনা বন্ধ করে দিতে হবে, আর মাঝে মাঝে ঢাকনা উঠিয়ে নেড়ে দিতে হবে। রান্না হয়ে যাওয়ার পর Warm বাটনে এলে ওই অবস্থায় আরো কিছুক্ষণ রাখুন। এরপর ঢাকনা উঠিয়ে উপর থেকে ঘি ও পেঁয়াজ বেরেস্তা ছড়িয়ে পরিবেশন করুন। গরুর মাংসও একইভাবে রান্না করা যাবে।
মাছ
প্রথমে মাছ ধুয়ে এর সঙ্গে হলুদ গুঁড়া ও লবণ মাখিয়ে কিছু সময় রেখে দিন। এর সঙ্গে পেঁয়াজ ও রসুন বাটা, লবণ ও কয়েক চামচ তেল দিয়ে মিশিয়ে রাইস কুকারে বসিয়ে দিন। নির্দিষ্ট সময় শেষে মাছ রান্না হয়ে যাবে। এরপর ঢাকনা খুলে কাঁচা মরিচ ও ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে নিন।
কেক
প্রথমে কেকের আকার অনুযায়ী ময়দা, মাখন, ডিম, লবণ, চিনি, দুধ, ভ্যানিলা বা চকোলেট মিশিয়ে রাইস কুকারের প্যানে হালকা তেল মাখিয়ে মিশ্রণটি ঢেলে দিতে হবে। এবার ঢাকনা লাগিয়ে Cook বাটন টা চালু করে দিতে হবে। কেকের পানিটা যখন শুকিয়ে যাবে তখন Cook বাটন টা অটো বন্ধ হয়ে Warm বাটনে চলে যাবে। আরো ৮ - ১০ মিনিটের মত রেখে দিন। এরপর ঢাকনা উঠিয়ে ছুরি বা টুথপিক দিয়ে চেক করে দেখতে হবে কেকটা হয়েছে কিনা। টুথ পিকের গায়ে কেকের কিছু অংশ লেগে গেলে আরো কিছুক্ষণের জন্য রাইস কুকারের Cook অপশনটা চালু করে দিন। মিনিট পাঁচেক পর নামিয়ে নিন।
ডিম
ডিমের অমলেট বানানোর জন্যে প্রথমে একটি বাটিতে ডিম, পেঁয়াজ কুচি, কাঁচা মরিচ ও লবণ দিয়ে ফেটে নিন। কুকারের প্যানে কিছুটা তেল দিন।তেল গরম হলে মিশ্রণটি ঢেলে দিয়ে কুকারের ঢাকনা বন্ধ করে দিন। কিছুক্ষণ পর ঢাকনা উল্টে ডিম দেখে নিন। ডিম হয়ে গেলে রাইস কুকার বন্ধ করে দিন। কুকারের প্যানে পরিমাণ মতো পানি দিয়ে ডিমটা সেদ্ধও করে নিতে পারেন।
সবজি সেদ্ধ
রাইস কুকারের সঙ্গে ঝাঁকার মতো একটি স্টিমার থাকে। যা দিয়ে সহজেই যেকোনো সবজি সিদ্ধ করা যায়। সবজি ভালোভাবে ধুয়ে নিয়ে ছোট ছোট টুকরো করে কেটে নিন। কুকারে ভাত রান্না করার সময় অথবা প্যানে কিছু পানি দিয়ে স্টিমারে সবজিগুলো রেখে ঢাকনা বন্ধ করে দিন। ভাতের সঙ্গে সবজি সেদ্ধ হয়ে রান্না যাবে।
চা
রাইস কুকারের প্যানে পরিমাণ মতো চায়ের পানি বা দুধ দিয়ে Cook অপশনটা চালু করে দিন। পানি বা দুধ ফুটে উঠলে চা পাতা দিয়ে দিন। পছন্দমত লিকার হলে নামিয়ে গরম পরিবেশন করুন।