ঈদ উল ফিতরের প্রধান আকর্ষণই থাকে নতুন পোশাক পরে ঘুরে বেড়ানো আর সালামি পাওয়া। সালামি মানে ঈদি পাওয়া। ঈদের সারাদিন বড়দের সালাম করে পাওয়া যায় ঈদি। ঈদে সালামি ঈদ আনন্দ বাড়িয়ে দেয় দ্বিগুণ। নতুন টাকা দিয়ে ছোটদের ঈদি দেন বড়রা। তাই এই ঈদে নতুন পোশাক কেনার পাশাপাশি নতুন টাকারও চাহিদা বাড়ে। তাইতো ঈদকে ঘিরে নতুন টাকা নিয়েও থাকে বেশ আয়োজন।
রাজধানীসহ পুরো দেশেই ব্যাংকগুলোতে এই সময় নতুন টাকা পাওয়া যায়। শুধু তাই নয়, রাজধানীর গুলিস্তানের পাতাল মার্কেটের সামনের ফুটপাতেও পাওয়া যাচ্ছে নতুন টাকা। নতুন, পুরোনো টাকা সাজিয়ে বসেছেন ব্যবসায়ীরা। সেখানে বিক্রি হচ্ছে নতুন টাকা। ছেঁড়া-কাটা টাকার বিনিময়ে বিক্রি করা হচ্ছে নতুন টাকা। প্রতিদিন সকাল ৮ থেকেই সেখানে দোকান সাজিয়ে বসেন ব্যবসায়ীরা।
জানা যায়, দেশ স্বাধীনের পর থেকেই গুলিস্তান এলাকায় এই টাকার দোকানগুলো বসে আসছে। বসে এই টাকার হাট। শুধু ঈদকে ঘিরেই নয়, এখানে নতুন টাকার বেচাকেনা হয় সারাবছরই। তবে উত্সবকে ঘিরে বেশি ভিড় জমে এই দোকানগুলোতে। বিশেষ করে ঈদে, পহেলা বৈশাখ, বড়দিন, পূজার উৎসবে ভিড় বেশি হয়।
দোকানিরা নতুন টাকা কিনতে ক্রেতাদের বিভিন্নভাবে আকর্ষণও করেন। ক্রেতারাও সেই ডাকে সাড়া দিয়ে ভিড় জমাচ্ছেন নতুন টাকার দোকানে। এখানে দুই টাকা থেকে শুরু করে ২০০ টাকা পর্যন্ত নতুন বান্ডেল পাওয়া যায়। বিদেশি টাকাও কেনাবেচা হয়। নতুন টাকার মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় ১০ টাকা ও ২০ টাকার নোটগুলো। সাধারণত ঈদে ১০ টাকা বা ২০ টাকার নতুন নোট দিয়েই বড়রা ছোটদের সালামি দেওয়া শুরু করেন। তাই এই বান্ডেলের চাহিদাও সবচেয়ে বেশি।
ব্যবসায়ীরা জানান, এখানে টাকার বিনিময়ে টাকা দেওয়া হয়। যেসব টাকা চলে না কিংবা ছেঁড়া-কাটা টাকার বিনিময়ে এখানে নতুন টাকা দেওয়া হয়। সেক্ষেত্রে নতুন টাকা কম পাবে ক্রেতারা। আবার নতুন নোটের বান্ডেলও বিক্রি করা হয়। যেমন, ১০ টাকার বান্ডিলে ১০০০ টাকা এবং ৫ টাকার বান্ডিল ৫০০ মোট ১৫০০ টাকা কিনতে ১৮৫০ টাকা দিতে হবে ক্রেতাকে।
প্রতিবছরই দুই বার নতুন নোট বাজারে ছাড়ে বাংলাদেশ ব্যাংক। সেখান থেকে নতুন নোট সংগ্রহ করেই ব্যবসা করছেন দোকানিরা। ক্রেতারা ব্যাংকে যেতে না পারলে গুলিস্তানের এই টাকার হাট থেকে নতুন নোট নিতে পারেন। এছাড়াও নতুন টাকার হাট বসে রাজধানীর সদরঘাট, মিরপুরসহ বেশ কয়েক স্থানেও। এসব স্থানে বিশেষ কোনো নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকলেও কোনো ধরণের অবাঞ্চিত ঘটনা ঘটে না বলেই জানান ব্যবসায়ীরা।