পশমিনা ভেড়ার পশম দিয়ে তৈরি হয় পশমিনা শাল। আর এই পশমিনা ভেড়া পাওয়া যায় লাদাখ ও হিমালয়ের জম্মু-কাশ্মীরের কিছু অংশে। এই পশমিনা ভেড়ার পশম দিয়ে তৈরি কাপড়ের প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এর সূক্ষ্ম কোমলতা। আর এসব নানান কারণে পশমিনা ভেড়ার লোম দিয়ে তৈরি শাল বেশ সমাদৃত।
পশমিনা ভেড়ার লোম ছেঁটে কাশ্মিরের শাল শিল্পীরা দীর্ঘ পরিশ্রমে একটি শাল তৈরি করেন। সেই শাল দেশ বিদেশে ছড়িয়ে পড়ে। সিমান্ত পেরিয়ে আমাদের দেশের মাটিতেও পাওয়া যায় নমনীয় এই শাল। তবে পশমিনা শাল বলে বাজারে পাওয়া সব শাল আসল পশমিনা না শাল না। তাহলে কীভাবে বুঝবেন যে, কোনটা আসল পশমিনা শাল আর কোনটা নকল। চলুন জেনে নেই, পশমিনা শাল কেনার সময় কী কী বিষয় খেয়াল রাখবেন-
আসল পশমিনা শালে থাকে সূক্ষ্ম কোমলতা। এই শাল বেশ মোলায়েম হয়। শালের উপর হাত বুলিয়ে গেলে পাখির পালকের মতো হালকা অনুভূত হবে। অপরদিকে মিশ্রিত উপাদানে তৈরি শালগুলো অমসৃণ ও কম নমনীয় হয়।
পশমিনা শাল ঐতিহ্যবাহী পদ্ধতিতে শাল শিল্পীদের হাতে বোনা হয়, যার ফলে বুননগুলো সামান্য অসমান হয়। আর মেশিনে তৈরি শাল খুব নিখুঁত হয়। এই সূক্ষ্ম তারতম্যটি বোঝার জন্য কাপড়টি হাতে ধরে ভালোভাবে খুঁটিয়ে দেখতে হবে।
আসল পশমিনা শালে ট্যাগ বা লেবেল আটকানোর জন্য সেলাইয়ের প্রয়োজন হয়, আঠা না। তাই যদি শালে ট্যাগ বা লেবেল আঠা দিয়ে লাগানো থাকে, তবে সেটি আসল পশমিনা শাল নয়।
পশমিনা কাপড় সূর্যালোকের আলোতে চকচক করে না। কারণ এই কাপড় আলোকে প্রতিফলন করার বদলে শোষন করে নেয়। তাই শাল কেনার সময় শালটি সূর্যের আলোয় ধরলেই আসল শাল চিনতে পারবেন। যদি আলোতে চকচক করে তাহলে এই শাল বাদ দিন।
কেনার আগে শালের প্রান্ত দু আঙুলে ধরে আলতোভাবে ঘষে দেখতে হবে কাপড়ে থাকা উলের পশম দাঁড়িয়ে যাচ্ছে কি না। যদি লোম দাঁড়িয়ে যায় তবে বুঝবেন এটি আসল পশমিনা শাল নয়। কারণ নাইলন এবং সিন্থেটিক পণ্য স্থির বিদ্যুৎ উৎপাদন করে, প্রাকৃতিক উল করে না।
আসল পশমিনা শাল চেনার জন্য শাল থেকে একটি সুতা বের করে আগুনে ধরলেই বুঝতে পারবেন কোনটা আসল আর কোনটা নকল। আসল পশমিনা সুতা হয়ে থাকলে আগুনে পুড়ালে সুতাটি ধীরে ধীরে পুড়বে, পোড়ার সময় চুল পুড়ে যাওয়ার মতো গন্ধ হবে। যদি এরকম না হয় সুতাটি গলে যায় তাহলে বুঝতে হবে শালটি আসল পশমিনা শাল না।