গরমকালে প্রচণ্ড রোদ হয়ে। এই রোদ থেকে বাঁচতে সঠিক প্রস্তুতি নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তীব্র তাপপ্রবাহের সময় দীর্ঘক্ষণ বাইরে থাকলে সা১নবার্ন, হিটস্ট্রোক এবং ত্বকের ক্ষতি হতে পারে। তাই প্রচণ্ড রোদে সতর্কতা ও সঠিক প্রস্তুতি নেওয়া জরুরি। কিছু বিষয়ে সতর্ক থাকলে এবং এড়িয়ে চললে রোদের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে সহজেই নিজেকে সুরক্ষা করা যাবে।
সঠিক পোশাক না পরা
প্রচণ্ড রোদ থেকে বাঁচতে সঠিক পোশাক নির্বাচন করুন। সুতির ঢিলেঢালা ও হালকা রঙের পোশাক পরুন। যা ত্বককে সূর্যের সরাসরি আলোর থেকে সুরক্ষা দেবে। গাঢ় রঙের পোশাক তাপ শোষণ করে। যা শরীরের তাপমাত্রা বাড়িয়ে দেয়। তাই হালকা রঙের পোশাক বেশি কার্যকর। এছাড়া লম্বা হাতা ও ফুলপ্যান্ট পরা যেতে পারে। যা শরীরের বেশি অংশ ঢেকে রাখবে। রোদের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে বাঁচা যাবে।
ছাতা ও হ্যাট ব্যবহার না করা
রোদ থেকে বাঁচার জন্য ছাতা ও বড় হ্যাট অত্যন্ত উপকারী। বিশেষ করে গ্রীষ্মকালে বাইরে বের হলে একটি বড় সান হ্যাট ব্যবহার করুন। এতে মুখ, ঘাড় ও কাঁধ রোদের থেকে সুরক্ষিত থাকবে। ছাতা ব্যবহার করাও ত্বককে সরাসরি সূর্যের প্রখর তাপ থেকে রক্ষা করবে।
সানস্ক্রিন না ব্যবহার
রোদে বের হওয়ার আগে ত্বকের সুরক্ষার জন্য সানস্ক্রিন ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। SPF ৩০ বা তার বেশি সূচকযুক্ত সানস্ক্রিন ব্যবহার করলে UV-A এবং UV-B রশ্মি থেকে ত্বককে সুরক্ষা দেওয়া সম্ভব। ত্বকের ক্ষতি এড়াতে কমপক্ষে ২০-৩০ মিনিট আগে সানস্ক্রিন মেখে নিতে হবে। যদি দীর্ঘ সময় বাইরে থাকতে হয়, তবে প্রতি দুই ঘণ্টা অন্তর পুনরায় লাগানো উচিত।
যথেষ্ট পরিমাণে পানি পান না করা
প্রচণ্ড গরমে শরীর থেকে অতিরিক্ত ঘাম বের হয়ে শরীর পানিশূন্য হয়ে যেতে পারে। যা হিটস্ট্রোক বা অন্যান্য জটিলতার কারণ হতে পারে। তাই প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা জরুরি। এছাড়াও ফলের রস বা তরল খাবার গ্রহণ করতে হবে। শরীরকে হাইড্রেটেড রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
যেকোনো সময় বাইরে বের যাওয়া
রোদ থেকে বাঁচার আরেকটি কার্যকর উপায় হলো দিনের এমন সময়ে বাইরে বের হওয়া, যখন সূর্যের তাপ কম থাকে। সাধারণত সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত সূর্যের তাপ সবচেয়ে বেশি থাকে। তাই এই সময়ের মধ্যে যতটা সম্ভব বাইরে বের হওয়া এড়িয়ে চলা উচিত। যদি বাইরে যেতেই হয়, তবে আগে থেকে যথাযথ প্রস্তুতি নিয়ে বের হতে হবে।
ছায়ায় অবস্থান না করা
রোদে বাইরে গেলে যতটা সম্ভব ছায়ায় থাকার চেষ্টা করতে হবে। বাইরে থাকলে ছায়াযুক্ত জায়গায় বসা বা হাঁটা উচিত। যা তাপের প্রভাব থেকে সুরক্ষা দেবে। অনেকেই বিষয়টি খেয়াল করেন না। তাই রোদে দুর্বল হয়ে পড়েন সহজেই। যদি ছায়া না পাওয়া যায়, তবে নিজের ছায়া তৈরি করতে ছাতা বা সান হ্যাট ব্যবহার করা ভালো।
খাদ্যাভ্যাসের দিকে না নজর দেওয়া
গরমের সময় খাওয়া দাওয়া নিয়ে অনেকেই সচেতন থাকেন না। অথচ এই সময় হালকা ও পরিমাণমতো খাবার খাওয়া উচিত। ভারী এবং তৈলাক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন। কারণ এই ধরনের খাবার গরমে অস্বস্তি বাড়ায়। তাজা ফলমূল, শাকসবজি এবং জলসমৃদ্ধ খাবার বেশি করে খেলে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে।
সানগ্লাস ব্যবহার না করা
সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মি চোখের জন্যও ক্ষতিকারক হতে পারে। তাই বাইরে বের হওয়ার সময় সানগ্লাস ব্যবহার করতে হবে। UV প্রোটেকটিভ সানগ্লাস ব্যবহার করলে চোখকে UV রশ্মির ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করা যায় এবং চোখে আরাম পাওয়া যায়।
শরীরচর্চা বিষয়ে সচেতন না হওয়া
এই সময় অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রম এড়িয়ে চলা উচিত। বিশেষ করে তীব্র রোদে বাইরে দৌড়ানো বা ভারী শরীরচর্চা করলে শরীর দ্রুত ক্লান্ত হয়ে পড়ে এবং হিটস্ট্রোকের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। হালকা ব্যায়াম এবং ছায়াযুক্ত স্থানে ব্যায়াম করা বেশি নিরাপদ।
ঠাণ্ডা পরিবেশে না থাকা
রোদে বাইরে কাজ করার প্রয়োজন হলে, মাঝেমধ্যে ঠাণ্ডা পরিবেশে বিশ্রাম নেওয়া উচিত। ঠাণ্ডা পরিবেশে থাকলে শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে এবং হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি কমে যায়।