‘ভালো আছি, ভালো থেকো/আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখো’- এই গানের কথায় মনের আবেগ প্রকাশ করে প্রিয়জনের প্রতি চিঠি লেখার বার্তা দিয়েছেন কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ। কবির এই গানের মাধ্যমে কতজনই না মনের কথা জানিয়েছেন। কারণ চিঠি একমাত্র বাহন ছিল যার মাধ্যমে প্রিয়জনকে মনের কথা বলা যেত। দূরে থেকেও পরিবারের খোঁজ খবর নেওয়া যেত। আবার প্রিয় ব্যক্তির উদ্দেশ্যে খোলা চিঠি লিখেও মনের ভাব প্রকাশ করা যেত। তাইতো গুরুত্বপূর্ণ এই মাধ্যমটি বিশেষ একটি দিনের মর্যাদা পায়। আর সেই বিশেষ দিনটি হলো ১ সেপ্টেম্বর।
বিশ্বজুড়ে ১ সেপ্টেম্বর রোববার পালিত হচ্ছে বিশ্ব চিঠি দিবস। একসময় যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম ছিল চিঠি। কালের বিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে চিঠি লেখার মাধ্যমেরও এসেছে পরিবর্তন। কাগজ-কলমে লেখা চিঠি এখন এক হারিয়ে যাওয়া শিল্প।
চিঠি এক সময়ের যোগাযোগের প্রধান ও অন্যতম মাধ্যম ছিল। এক একটি চিঠিতে কত গল্প, কত ইতিহাস লেখা হতো। আবার প্রিয়জন কিংবা পরিবারের প্রতি ভরপুর আবেগেরও প্রকাশ থাকত। একটি চিঠি গন্তব্যে পৌঁছাতে মাসও পেরিয়ে যেত। চিঠির অপেক্ষায় প্রহর গুণতে প্রিয়জনকে। সেই সময়ের আবেগ ও অপেক্ষা সত্যিই মূল্য়হীন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে চিঠির মাধ্যমের পরিবর্তন হয়েছে। এখন হাতে থাকা মোবাইল ফোনের মাধ্যমেই যেকোনো সময় মুহূর্তের মধ্যেই বার্তা পাঠানো যাচ্ছে। তাই দীর্ঘসময় অপেক্ষা করে চিঠির আদান-প্রদানের গ্রহনযোগ্যতা এখন নেই বললেই চলে। তাই এই হারিয়ে যাওয়া শিল্পকে ধরে রাখতে প্রতিবছর ১ সেপ্টেম্বর পালিত হয় ‘আন্তর্জাতিক চিঠি দিবস’।
এই দিবসটি কীভাবে এসেছিল, জানেন কি? ইতিহাস থেকে জানা যায়, ২০১৪ সালে প্রথম অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক রিচার্ড সিম্পকিন এই দিবসের প্রচলন শুরু করেন। নব্বই দশকের শেষের দিকে সিম্পকিন নিজ দেশের বড় ব্যক্তিত্বদের চিঠি পাঠান। অনেক সময় চিঠির উত্তর ফিরে আসতো না। আবার কখনও কখনও চিঠির উত্তর ফিরে পেতেন। যা আনন্দের সীমা বাড়িয়ে দেয় এবং তার কাজকর্মে এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা দেয়। সেই ভালোবাসা থেকে সিম্পকিন ২০১৪ সালে এই দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নেন।