• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পানি বিশুদ্ধকরণে ফিটকিরি-ব্লিচিংয়ের ব্যবহার জানুন


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: আগস্ট ৩১, ২০২৪, ০৩:৩০ পিএম
পানি বিশুদ্ধকরণে ফিটকিরি-ব্লিচিংয়ের ব্যবহার জানুন
ছবি: সংগৃহীত

বন্যা একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ। প্রতিবছরের মতো এবারও বন্যার পানিতে ডুবেছে দেশের কয়েকটি জেলা। এই বছর বন্যার চিত্রটি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। কোনো প্রস্তুতি ছাড়াই সাধারণ মানুষ বন্যার পানির মুখে পড়ে। জীবন বাচাতে ছুটে যায় আশ্রয়কেন্দ্রে। দিনের পর দিন খাদ্যসংকটে কাটাতে থাকে। তবে বন্যার সময় চারদিক পানিতে পরিপূর্ণ থাকলেও  বিশুদ্ধ পানির সংকট থাকে চরমে। অথচ সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন এই  বিশুদ্ধ পানি। এই সময় পানি ফুটিয়ে খাওয়ার মতো সুযোগও থাকে না। তাই সহজ উপায়ে পানি বিশুদ্ধ করার উপায় খোঁজে সাধারণ মানুষ।

অল্প খরচে নিরাপদ ও সুপেয় পানি পাওয়ার সহজ উপায় হচ্ছে ফিটকিরি ও ব্লিচিং। যা ব্যবহার করে দ্রুত পানি বিশুদ্ধ করা যায় এবং তা পানের উপযোগী হয়। পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেটসহ ফিটকিরি ও ব্লিচিংয়ের ব্যবহার নিরাপদ পানির নিশ্চয়তা দেবে। ত্রানের মাধ্যমে বন্যাকবলিত এলাকায় এসব উপাদান সরবরাহ করা হচ্ছে। কিন্তু এগুলোর ব্যবহার না জানলে প্রকৃত সুফল পাওয়া যাবে না।

পানি বিশুদ্ধ করার কাজে বহুল ব্যবহৃত কেমিক্যাল পটাশ, আয়োডিন ও ক্লোরিন। পটাশের সবচেয়ে সহজলভ্য উৎস ফিটকিরি। আর ক্লোরিন ট্যাবলেট পাওয়া যায় ফার্মেসিগুলোতে। এর বাইরে পানি বিশুদ্ধকরণে ব্যবহার করা যেতে পারে ব্লিচিং।

বিশেষজ্ঞরা জানান, ফিটকিরি হলো সোডিয়াম ও অ্যালুমিনিয়ামের একটি যৌগ লবণ। এর রাসায়নিক নাম পটাশ অ্যালাম। ইংরেজিতে এটি অ্যালাম (Alum) নামে পরিচিত। অ্যালুমিনিয়ামের ধনাত্মক আয়ন পানিতে থাকা ছোট কঠিন কণাগুলোকে একসঙ্গে করে কলয়েড তৈরি করে। ছোট কণাগুলো একসঙ্গে ভারী হয়ে তলানি হিসেবে নিচে জমা পড়ে আর পানিকে পরিষ্কার করে।

এক জগ বা পাতিলের পানিতে সামান্য পরিমাণ ফিটকিরি মিশিয়ে ৩ ঘণ্টা রেখে দিতে হবে। এতে পানির ভেতরে থাকা ময়লা তলানিতে জমে যাবে। এরপর ওপর থেকে পরিশোধিত পানি পরিষ্কার কাপড় দিয়ে ছেঁকে সংগ্রহ করতে হবে। আর তলানির পানি ফেলে দিতে হবে।

ফিটকিরি ব্যবহারে পানিতে থাকা ব্যাকটেরিয়া ও প্যারাসাইট ধ্বংস হয়। যা টাইফয়েড, ডায়রিয়া, আমাশয় ও কৃমির সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে।

অন্যদিকে ব্লিচিং ব্যবহার করাও নিরাপদ। ১০ লিটার পানিতে ব্লিচিং গুলিয়ে রেখে দিলে বিশুদ্ধ পানি পাওয়া যাবে। যা পরবর্তীতে পরিষ্কার কাঁপড়ে ছেঁকে পান করা যাবে। ব্লিচে ক্লোরিন থাকে। যা পানি বিশুদ্ধ করে। এটি ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়াকে ধ্বংস করে। বাজারে ক্লোটেক, ক্লোরেক্স ও ক্লোরক্স ইত্যাদি নামে ব্লিচ পাওয়া যায়। ১০ লিটার পানিতে ১০ মিলিগ্রামব্লিচিং গুলিয়ে দিতে হবে। যা ৪ ঘণ্টা পর্যন্ত রেখে দিতে হবে। এরপর তা পানে উপযোগী হবে। তবে পানিতে ব্লিচিংয়ের একটি গন্ধ থেকে যেতে পারে। এক্ষেত্রে পাত্রের  ঢাকনা খুলে কাঠি দিয়ে পানি কিছুক্ষণ নাড়তে হবে। তবেই গন্ধ কমে যাবে।

এছাড়াও বন্যা–পরবর্তী সময়ে নলকূপের পানি ব্যবহারের আগে ব্লিচিং ব্যবহার করা অত্যন্ত জরুরি। প্রথমে অনেকক্ষণ চেপে নলকূপের পানি ফেলে দিতে হবে। এরপর ব্লিচ মেশানো পানি টিউবওয়েলের ভেতরে ঢেলে দিতে হবে। ১ ঘণ্টা পর্যন্ত রেখে দিতে হবে। এরপর টানা আধঘণ্টা টিউবওয়েল চেপে পানি ফেলে দিলেই তা বিশুদ্ধ হয়ে যাবে। এই পানি পানের উপযোগী হয়ে উঠবে।

Link copied!