বয়সের সঙ্গে সঙ্গে ত্বকেরও বয়স বাড়ে। এক সময় বয়সের ছাপ ত্বকে ফুটে উঠে। কপাল জুড়ে দেখা যায় বলিরেখা। চামড়া কুঁচকে যায়। ধীরে ধীরে ম্লান হয়ে যায় সৌন্দর্য্য। ত্বকের এই বুড়িয়ে যাওয়া নিয়ে কমবেশি সবাই চিন্তিত থাকে। তবে নতুন প্রজন্ম জেন জি’রা যেন একটু বেশিই চিন্তিত। বয়স ৩০ হলেই ত্বকে এই পরিবর্তন দেখা যায়। যা নিয়ে আগেই সতর্ক হচ্ছে এই প্রজন্ম। তারা অল্প বয়স থেকেই বিভিন্ন প্রসাধনী ব্যবহার করে থাকে। যা শরীরের বয়স বাড়লেও ত্বকের বয়স ধরে রাখতে সহায়ক হচ্ছে।
মূলত ত্বকে কোলাজেনের উৎপাদন কমলেই বিভিন্ন সমস্যা দেখা যায়। প্রতিদিনের স্ট্রেস, উদ্বেগ, অনিয়মিত জীবনযাত্রা, অস্বাস্থ্যকর খাবার এবং বয়স বাড়ার কারণে ত্বক বুড়িয়ে যাচ্ছে দ্রুত। তাই এই জেনারেশন অর্থাত্ জেন জি প্রজন্ম শুরু থেকেই ত্বকের বিষয়ে বেশ সচেতন। ছোট বয়স থেকেই যেমন মেকআপে আকৃষ্ট হয়, তেমনই এই জেনারেশন ত্বকের বিষয়ে বেশ সতর্কও থাকছে। বলা যায়, ত্বকের পরিচর্যায় তারা আধুনিক সেবাগুলো নিতেও দ্বিধাবোধ করছে না।
সম্প্রতি এক সমীক্ষাতেও এমন তথ্যই উঠে এসেছে। সমীক্ষা অনুযায়ী, অধিকাংশ নারী ত্বকের বুড়িয়ে যাওয়া নিয়ে সবচেয়ে বেশী চিন্তা করেন। সম্প্রতি ২ হাজার জন আমেরিকান নারীর উপর সমীক্ষাটি করা হয়। নিওস্ট্রাটার তরফে টকার রিসার্চ সমীক্ষাটি চালিয়েছে । যেখান দেখা যায়, অর্ধেকের বেশি নারী ত্বকের বুড়িয়ে যাওয়া নিয়ে বেশি চিন্তিত।
জেনারেশনের ভিত্তিতে সমীক্ষায় অংশ নেওয়া নারীদের ভাগ করা হয়। এরপর সমীক্ষার ফলাফলে উঠে আসে, ত্বকের বুড়িয়ে যাওয়া নিয়ে সবচেয়ে বেশি চিন্তিত জেন জি এবং মিলেনিয়ালসরা। জ়েন এক্স এবং বেবি বুমারসা ত্বকের এই পরিবর্তন নিয়ে এতোটা চিন্তিত নন।
গবেষকরা জানান, জেন জি এবং মিলেনিয়ালরা বয়সের তুলনায় নিজেদের বেশি বয়স্ক দেখায়- বলে মনে করেন। জ়েন জি’র ১৮ শতাংশেরই মনে হয়, অন্যান্য জেনারেশনের তুলনায় তাদের অনেকটাই বয়স্ক দেখায়। তাই তারা বেশি উদ্বিগ্ন থাকছেন।
সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, প্রায় অর্ধেক নারীই ৪০ বছরের মধ্যেই ত্বকের বুড়িয়ে যাওয়ার নানা লক্ষণ দেখতে পেয়েছেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কপালে রিঙ্কেলস এবং মুখে বলিরেখা দেখতে পেয়েছেন। ত্বকে বয়সের ছাপ এবং গলায় ভাঁজও দেখা গিয়েছে তাদের। এই বুড়িয়ে যাওয়া ঠেকাতে ওই দু` হাজার জনের প্রায় ৭০ শতাংশ নারীই স্কিনকেয়ার রুটিনে জোর দেন। ৬৪ শতাংশ নারী এক থেকে চারটি বিভিন্ন ধরনের প্রোডাক্টও ব্যবহার করেন।
গবেষকরা জানান, ত্বকের বুড়িয়ে যাওয়া ঠেকাতে অনেকেই স্কিনকেয়ার প্রোডাক্টই বেছে নিচ্ছেন। যা দিয়ে অনেকে ঘাড়, হাত এবং চোখের চারপাশের ত্বকেরও যত্ন নিচ্ছেন। তবে অন্যান্য অংশগুলোর যত্ন নেওয়া নারীর সংখ্যাটা ৪০ শতাংশেরও কম। শুধুমাত্র ১৭ শতাংশ নারীই ঘাড়ের দিকে নজর দেন এবং এক তৃতীয়াংশেরও কম নারী ঘাড়ের জন্য নিয়মিত কোনও প্রসাধনী ব্যবহার করেন।
গবেষকরা পরামর্শ দেন, ত্বকের যথাযথ নিলে আত্মবিশ্বাস বাড়ে। অধিকাংশ নারীই ৩৫ বছরের পর থেকেই স্কিনকেয়ার রুটিনে অ্যান্টি-এজিং প্রোডাক্ট যোগ করছেন। নিয়মিত ত্বকের পরিচর্যায় এটি গুরুত্বপূর্ণ। তবে অনেকেই ত্বকের বিষয়ে সচেতন নন। কেবলমাত্র ৩২ শতাংশ নারীই যথাযথ ভাবে ঘাড়ের ত্বকের যত্ন নিতে জানেন বলে সমীক্ষায় প্রমাণিত। ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে বদভ্যাস থেকেও দূরে থাকতে হবে। যদিও এই বিষয়ে শতকরা ৫ জনের মধ্যে ৩ জন নারীই সচেতন। যেমন ত্বকের পরিচর্যায় স্ট্রেস, ধূমপান, অনিদ্রা এবং সানস্ক্রিন ব্যবহার না করা ক্ষতিকর। এগুলো ত্বকে বয়স বাড়াচ্ছে। এসব বিষয়ে সচেতন হওয়া অত্যন্ত জরুরি।