ফ্যাশনে চমক দেখাতে বরাবরই পছন্দ করেন ফ্যাশনিস্তরা। বিশেষ করে সেলিব্রিটিরা। পোশাকের চিরাচরিত প্রথা ভেঙে নতুনত্বের সঙ্গে গা ভাসিয়ে দেন সেলিব্রিটিরা। কেউ কেউ তাতে প্রশংসা পান। কেউ আবার হোন সমালোচিত। যেমনটা এবার ঘটেছে দেশের জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসানের পরা পোশাক নিয়ে। বাংলার ঐতিহ্য জামদানি পোশাককে ওয়েস্টার্ন লুক দিয়েছেন এই অভিনেত্রী। আর তাতেই বাঁধে গন্ডগোল। অর্থাত্ সমালোচনার ঝড় উঠে নেটদুনিয়ায়।
এপার-ওপার বাংলা কাঁপানো অভিনেত্রী জয়া আহসান সম্প্রতি হাজির হোন মুম্বাইয়ে ফিল্মফেয়ার ওটিটি অ্যাওয়ার্ডস অনুষ্ঠানে। সেখানেই নতুন স্টাইলে জামদানি পরেছেন এই অভিনেত্রী। বলা যায়, তিনিই প্রথম এভাবে শাড়ি পরলেন। এমন স্টাইলে শাড়ি পরা কাউকে আগে কখনো দেখা যায় নি।
বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী এবং গৌরবের প্রতীক জামদানির প্রথাগত স্টাইল ভেঙে জয়া ধরা দিয়েছেন বোল্ড ফ্যাশনে। জামদানি শাড়িটি ধুতির স্টাইলে শরীরে জড়িয়ে নেন। উপরে টপ হিসেবে পরেন কাঁথার শ্রাগ। সঙ্গে পরেন মানানসই গয়না। অভিনেত্রী এই জামদানি লুক মুহূর্তেই ভাইরাল হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। সেই সঙ্গে শুরু হয় আলোচনা আর সমালোচনা।
জামদানি শাড়ির চিরচরিত স্টাইলকে ভেঙে নতুন রূপ দেওয়ায় জয়ার প্রশংসা করেছেন অনেকে। তবে নেটিজেনদের একাংশ এই স্টাইলের নিন্দাও করেছেন। অনেকে জামদানির ঐতিহ্যকে নষ্ট করার অভিযোগও তুলেছেন জয়ার বিরুদ্ধে।
নেটিজেনদের বিভিন্ন মন্তব্যের জবাবও দিয়েছেন এই অভিনেত্রী। জামদানিকে নতুন ওয়েস্টার্ন স্টাইলে পরার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন। শাড়ি পরা সেই ছবি ফেসবুকে প্রকাশ করে জয়া জানান, ‘বাংলাদেশের ঢাকাই জামদানি শাড়ি আমার কাছে অন্যতম একটি প্রধান সাংস্কৃতিক উপকরণ। আমি চেষ্টা করি, আমি যে সংস্কৃতিতে বেড়ে উঠেছি সেটা নিজের মতো উপস্থাপন করতে। এটি তৈরিতে ৬ মাস সময় লেগেছে।’
সমালোচকদের জবাবে অভিনেত্রী জয়া বলেন, ‘আমি দেখেছি অনেকে এটা নিয়ে কথা বলছেন। আমরা আমাদের ঐতিহ্যবাহী খাবার যদি ফিউশন করে খেতে পারি, যেমন পিঠা বা মাছ তো আমরা ফিউশন করে খাই। তাহলে আমাদের দেশের কস্টিউম কেন ফিউশন করে পরতে পারব না? কেউ তো দাসখত দেয়নি যে, জামদানি এভাবে পরা যাবে না, ওভাবে পরা যাবে না। জামদানি যদি স্কার্ট হয়, জ্যাকেট হয়; তাহলে এভাবে পরলে সমস্যা কোথায়? আমরা যত ফিউশন করব তত বাইরের দেশের কাছে উপস্থাপন করতে পারব। এটার চাহিদা অনেক বেড়ে যাবে। এসব ভেবেই আমি জামদানির এই ফিউশন করেছি।’
জয়া আরও বলেন, ‘১ ডিসেম্বর আমি যখন মঞ্চের পেছনে বসেছিলাম, সবাই আমাকে দেখে প্রশংসা করেছে। “কাড়াক সিং”র সহকর্মীরা আলাদা আলাদা করে আমার হাত, চুল, গয়নার ছবি তুলছিল। এমনকি “হীরামান্ডি”র একজন অভিনেত্রীও পুরস্কার দেওয়ার জন্য অনুষ্ঠানে এসেছিলেন। তিনিও বলেছিলেন, “তোমার জামদানিটা এত সুন্দর। আমি কি এটা একটু ছুঁয়ে দেখতে পারি?” উনি জামদানির টেকচার ছুঁয়ে দেখছিলেন। আমার কাঁথার জ্যাকেটটা ধরে দেখছিলেন। এসবই তো আসলে ভালোলাগার বিষয়।’
‘আমি মনে করি জামদানি, মসলিন এমনকি আমাদের গামছাকেও একবার ব্যবহার করে ঘরবন্দী করে না রেখে যত বেশি ফিউশন করে পরতে পারি, বিশ্বে ততই এর চাহিদা বাড়বে।’
২০২৩ সালে মুক্তি পায় জয়া আহসানের অভিনীত সিনেমা ‘কড়ক সিং’। অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরী পরিচালিত এই সিনেমা ফিল্মফেয়ারে ১১টি ক্যাটাগরিতে নমিনেশন পায়।