বিয়ের আগেই মেয়েদের বাচ্চা হওয়ার প্রথা যেখানে


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: নভেম্বর ৫, ২০২৪, ০৮:০৮ পিএম
বিয়ের আগেই মেয়েদের বাচ্চা হওয়ার প্রথা যেখানে
সূত্র: সংগৃহীত

আধুনিক সমাজে বিয়ের আগেই একসঙ্গে থাকার চল শুরু হয়েছে। দেশে কিংবা বিদেশে প্রায়ই এমনটা দেখা যায়। এমন সম্পর্ককে লিভ ইন রিলেশনশিপ বলে। যদিও এমন সম্পর্ক সমাজ স্বীকৃত নয়। পরিবার থেকেও এমন সম্পর্ককে গ্রহণ করা হয় না। তাই লিভ ইন রিলেশনশিপে থাকলে অনেকটা সবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েই থাকতে হয়। কিন্তু জানেন কি, বিশ্বের বুকে এমনও জায়গা রয়েছে যেখানে পরিবারের সম্মতিতেই লিভ ইন রিলেশনশিপে যায় ছেলে-মেয়েরা। শুধু তাই নয়, বিয়ের আগেই বাচ্চা জন্ম দেওয়ার প্রথাও রয়েছে সেখানে।

ব্যতিক্রম এই জায়গাটি খুঁজতে বেশিদূর যেতে হবে না। বরং পাশ্ববর্তী দেশ ভারতের দিকে তাকালে মিলবে এমন দৃষ্টান্ত। ভারতের রাজস্থান এবং গুজরাটের গরাসিয়া জাতিগোষ্ঠীর মধ্যেই দেখা যায় এই প্রথা। সেখানে পুরুষ এবং নারীরা বিয়ে ছাড়াই একসঙ্গে থাকেন। নারীরা বিয়ের আগে মা হন।

বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গরাসিয়া জাতিগোষ্ঠীতে লিভ-ইনে থাকার এই প্রথা শতাব্দী পুরোনো। এখানে নারীরা নিজের জন্য পছন্দের পুরুষকে নির্বাচন করেন এবং সেই পুরুষের সঙ্গেই লিভ ইন রিলেশনশিপে যান।

জানা যায়, বিয়ের জন্য সেখানে দুই দিনের মেলার আয়োজন হয়। সেই মেলাতেই ছেলে-মেয়েরা একত্রিত হয়। যদি তারা কেউ কাউকে পছন্দ করে, তবে মেলা থেকে পালিয়ে যাবে। কিন্তু তারা বিয়ে করবে না। বিয়ে না করেই একসঙ্গে থাকতে শুরু করবেন। এই সময় তারা সন্তানের জন্মও দিতে পারেন। পরবর্তী সময়ে তারা সন্তানসহ নিজেদের গ্রামের কাছে ফিরে আসতে পারেন। এরপর তাদের বাবা-মায়েরা ধুমধাম করে বিয়ের আয়োজন করেন।

শুধু তাই নয়, গরাসিয়া জাতিগোষ্ঠীর নারীরা প্রথম পার্টনারের সঙ্গে মিল না হলে, পরেও দ্বিতীয় মেলায় দ্বিতীয় পার্টনার নির্বাচন করার সুযোগ পান। নারীদের এই স্বাধীনতা আধুনিক সমাজেও নেই। তাই এই জাতিগোষ্ঠী বিশ্বজুড়ে বেশ পরিচিত। যে কারণে ভারতের অন্যান্য অনেক জাতিগোষ্ঠী এই প্রথা অনুসরণ করা শুরু করে।

এই প্রথার পেছনের ইতিহাস সম্পর্কে জানা যায়, বহু আগে এই জাতিগোষ্ঠীর চার ভাই গ্রাম ছেড়ে কোথাও চলে যান। তাদের মধ্যে তিন ভাই ভারতীয় রীতিতে বিয়ে করেন। কিন্তু এক ভাই বিয়ে ছাড়াই এক মেয়েকে নিয়ে থাকা শুরু করেন। পরবর্তী সময়ে দেখা যায়, বিয়ে করা তিন ভাইয়ের ঘরে কোনো সন্তান  জন্ম হয়নি। কিন্তু চতুর্থ ভাইয়ের ঘরে একটি সন্তান জন্ম নেয়। এরপর থেকেই এই জাতিগোষ্ঠী বিয়ে ছাড়াই বাচ্চা হওয়ার বিষয়ে বিশ্বাস করা শুরু করেন। পরে তা প্রথা হিসেবে জায়গা করে নেয়।

Link copied!