উত্সব মানেই মেহেদি রাঙা দুই হাত। এই বছর তো ডাবল উত্সব। ঈদের আনন্দ আর পয়লা বৈশাখ একইসঙ্গে পালিত হবে। তাই ঈদের আগেই ব্যস্ততা বেড়েছে মেহেদি পড়ায়। পার্লারে কিংবা মার্কেটের বিভিন্ন স্থানে এখন মেহেদি পড়ার ধুম লেগেছে। ছোট বড় সবাই ঈদ আয়োজনের শেষ রেশটুকু রাঙিয়ে নিচ্ছে মেহেদির বর্ণিল ছোঁয়ায়।
ঈদের চাঁদ দেখার সঙ্গে সঙ্গেই মেহেদির উত্সবে মেতে উঠবেন সবাই। বাড়িতে একদিকে চলবে খাবারের আয়োজন। অন্যদিকে চলবে মেহেদি পড়ার ধুম। মেহেদি পড়া বাঙালির ঐতিহ্য হয়ে উঠেছে। দলবেঁধে চাঁদরাতের সারারাত মেহেদি পরবে, হইচই করবে। চাঁদরাতের আনন্দটাই যেন এতেই পূর্ণতা পায়।
মেহেদির রঙে হাত রাঙাতে কেউ কেউ পাতা বেটে লাগিয়ে নেন। কেউ আবার বাজারের পাওয়া টিউব মেহেদি দিয়ে নানা নকশা একে নেন। মেহেদির টিউব দিয়ে সহজেই যেকোনো নকশা একে নেওয়া যায়। ছোট বড় সবাই নিজের মনের মতো করে নকশা আঁকিয়ে নেন।
আগের দিনে মেহেদির নকশা ছিল হাতের মাঝখানে আঁকা বৃত্ত। কেউ কেউ এর চারিদিকে গোল গোল করে ফোঁটা দিয়ে নিত। আর আঙুলের উপরের কর পর্যন্ত ভরাট করে মেহেদি দেওয়া হত। আর এখন ফ্যাশনের সঙ্গে সঙ্গে মেহেদির নকশায়ও বৈচিত্র্য এসেছে। টিউব মেহেদি দিয়ে সূক্ষ্ম কারুকাজ করা নকশা আকা যায় সহজেই।
কার হাতে কেমন নকশা মানায়
মেহেদি দেওয়ার আগে জেনে নিন কেমন হাতে কেমন নকশা মানাবে। যাদের হাতের পাতা বড় তারা ভরাট নকশা করলে ভালো দেখাবে। অন্যদিকে ছোট হাতের জন্য একপাশের ডিজাইন করা নকশা ভালো মানাবে। একপাশের নকশাটি লম্বালম্বি ডিজাইন হতে হবে।
হাতের আঙুলের নকশা করতে আগে দেখে নিন তার আকৃতি কেমন। যদি ছোট আঙুল হয় তবে অনামিকা বা মাঝের আঙুলে লম্বা করে নকশা এঁকে দিন।
যাদের হাত লম্বা তারা ভরাট ডিজাইনের মেহেদি পরতে পারেন। তবে কিছুটা অংশ ফাঁকা রেখে ভরাট ডিজাইন করে নিন। এতে হাতে মেহেদি নকশা সুন্দর দেখাবে।
উৎসবে দুই হাত ভরে মেহেদির নকশা করতে পারেন। তবে বড়রা কনুইয়ের আগ পর্যন্ত নকশা করে নিতে পারেন। আর ছোটরা হাতের কবজি থেকে একটু নিচে নামিয়ে নকশা করে নিতে পারে।
পুরো হাতে নকশা করলে সূক্ষ্ম ডিজাইন করতে হবে। তালুর মাঝখানে স্পষ্ট গাঢ় নকশা এঁকে নিতে পারেন। কলকা, ফুল, লতাপাতা ডিজাইন করা যেতে পারে।
সূক্ষ্ম ডিজাইনের কিছুটা অংশ ভরাট করে নিতে পারেন। এতে নকশায় বৈচিত্র্য আসে। নকশায় ফিউশন আনতে মাঝে মাঝে ফাঁকা জায়গা রাখুন। এটি নকশাকে আরও স্পষ্ট করে তুলবে। নখের চারপাশে ভরাট মেহেদি লাগালে হালকা রঙের নেইলপলিশ পরুন।
উত্সবে অনেকে পায়ের পাতায়ও মেহেদি পরেন। এক্ষেত্রে পায়ের পাতার চারপাশে মেহেদির রেখা টেনে ডিজাইন করুন। পায়ের পাতার উপরের অংশে লতানো ডিজাইন করা যেতে পারে।
মেহেদি লাগানোর আগে ও পরে যা করতে হবে
মেহেদির রং গাঢ় পেতে কিছু বিষয় খেয়াল রাখুন। মেহেদি লাগানোর আগে হাতে ময়শ্চারাইজার বা লোশন লাগাবেন না। মেহেদি শুকিয়ে গেলে নিজ থেকেই উঠে যাবে। পানি দিয়ে ধোয়ার প্রয়োজন নেই। মেহেদি ওঠানোর পর হাতে তেল মেখে নিন। রং দীর্ঘস্থায়ী হবে। মেহেদির রঙ গাঢ় করতে লেবুর রস ও চিনির সিরাপ একসঙ্গে মিশিয়েও নকশার উপর লাগাতে পারেন। মনে রাখবেন, মেহেদি উঠে যাওয়ার ৪/৫ ঘণ্টার মধ্যে হাতে পানি লাগানো যাবে না। তাছাড়া মেহেদির হাতে সাবান, শ্যাম্পু যত কম ব্যবহার করবেন রং ততই টেকসই হবে।