• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অন্যায়ের প্রতিবাদ যেভাবে করবেন


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: আগস্ট ২৬, ২০২৪, ০৫:৫৯ পিএম
অন্যায়ের প্রতিবাদ যেভাবে করবেন
ছবি: সংগৃহীত

অন্যায় করা, আর অন্যায় মেনে নেওয়া দুটোই অপরাধ। এটা নীতি কথা হলেও বাস্তবে এর যর্থাথতা রয়েছে। সমাজ বা ব্যক্তি জীবনে নানা রকম অন্যায়ের মুখোমুখি হতে হয়। কখনও নিজের সঙ্গে অন্যায় হয়, কখনও বা সমাজের বিভিন্ন পর্যায়ে অন্যায় হতে দেখা যায়। সাহসিকতার সঙ্গে এসব অন্যায়, অবিচার এবং অনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোই হচ্ছে প্রতিবাদ করা। সমাজে অন্যায়ের প্রতিবাদ করার মাধ্যমেই ন্যায়ের প্রতিষ্ঠা সম্ভব। এই কাজটি করতে হলে আমাদের সচেতন, দৃঢ়সংকল্প এবং সাহসী হতে হবে। অন্যায়ের প্রতিবাদ করলে সমাজে ন্যায়ের প্রতিষ্ঠা হবে। সমাজের প্রতিটি স্তরে ন্যায় ও সত্যের চর্চা করলে একটি সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব হবে।

·         প্রথমত, নিজেকে নৈতিক মূল্যবোধে বলীয়ান করতে হবে। সঠিক ও ভুলের মধ্যে পার্থক্য বোঝার জন্য শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। শিক্ষিত এবং নৈতিক মূল্যবোধসম্পন্ন ব্যক্তি অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে পারে দৃঢ়ভাবে। অন্যায়ের বিরুদ্ধে শক্তিশালী অবস্থান নেওয়ার জন্য সমাজে ন্যায়ের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করতে হবে।

·         অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর প্রথম ধাপ হলো সচেতন হওয়া। অন্যায় কোনো কাজ কীভাবে আমাদের সমাজকে ক্ষতিগ্রস্ত করে তা সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করতে হবে। জনমত গঠনে গণমাধ্যম, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বিভিন্ন সচেতনতামূলক কার্যক্রম বড় ভূমিকা পালন করতে পারে।

·         অন্যায়ের প্রতিবাদ করার জন্য সাহসিকতা এবং দৃঢ়সংকল্প অত্যন্ত জরুরি। অনেক সময় অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলতে গেলে ভয়, হুমকি বা সামাজিক চাপের মুখোমুখি হতে হয়। সবকিছুর পরও নিজেকে স্থির রেখে অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যেতে হয়। সাহসিকতা নিয়ে অন্যায়ের বিরোধিতা করলে অন্যেরাও অনুপ্রাণিত হবে।

·         অন্যায়ের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। যখনই অন্যায় ঘটে, তখনই আইনের আশ্রয় নেওয়া জরুরি। এতে করে অন্যায়ের সঠিক বিচার নিশ্চিত করা যায় এবং সমাজে অন্যায়ের পুনরাবৃত্তি রোধ করা সম্ভব হয়। তবে আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হলে সচেতন নাগরিকদের ভূমিকা অপরিহার্য।

·         এককভাবে অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করা কঠিন হতে পারে। তাই সংহতি গঠন এবং সংগঠিত হয়ে অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে হবে। বিভিন্ন সংগঠন, সামাজিক আন্দোলন বা সম্প্রদায়ের মাধ্যমে একত্রিত হয়ে অন্যায়ের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুললে তার প্রভাব বেশি হয়।

·         প্রতিবাদ করতে গিয়ে কখনও হিংস্রতা বা অশান্তির দিকে যাওয়া যাবে না। বরং শান্তিপূর্ণ এবং ন্যায়ের পথে অবিচল থেকে প্রতিবাদ করা উচিত। অহিংস আন্দোলন বা শান্তিপূর্ণ প্রতিরোধ অনেক বেশি কার্যকর। এটি সমাজে একটি স্থায়ী প্রভাব ফেলে।

·         আধুনিক যুগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অন্যায়ের প্রতিবাদে একটি শক্তিশালী মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। বিভিন্ন সামাজিক প্ল্যাটফর্মে অন্যায়ের বিরুদ্ধে জনমত তৈরি করা যায়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দ্রুত এবং ব্যাপক পরিসরে মানুষকে সচেতন করে তোলা সম্ভব।

·         অন্যায় দেখলে শুধু প্রতিবাদ করলেই হবে না। বরং নিজের মধ্যে যদি কোনো অন্যায় প্রবণতা থাকে, তবে সেটিকে সংশোধন করতে হবে। আত্মসমালোচনার মাধ্যমে নিজেকে শুদ্ধ করতে পারলে সমাজে অন্যায়ের বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করা সম্ভব।

·         সমাজে অন্যায়ের বিরুদ্ধে জনমত গঠন করতে হবে। যখন অধিকাংশ মানুষ অন্যায়ের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় তখন তা সমাজে পরিবর্তন আনতে বাধ্য। জনমত গঠন করতে হলে নেতাদের, শিক্ষাবিদদের এবং সমাজের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের এগিয়ে আসতে হবে।

·         প্রতিটি নাগরিকের দায়িত্ব সমাজের অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে সচেতন থাকা এবং এর প্রতিবাদ করা। সমাজের প্রতি দায়িত্বশীলতা থেকে অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে হবে।

Link copied!