• ঢাকা
  • সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে বাঁচতে যেভাবে প্রার্থনা করবেন


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: আগস্ট ২৩, ২০২৪, ০৬:২৯ পিএম
প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে বাঁচতে যেভাবে প্রার্থনা করবেন
ছবি: সংগৃহীত

প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন বন্যা, ভূমিকম্প, ঝড় ইত্যাদি মানুষের জীবনে বড় ধরনের বিপর্যয় ডেকে আনে। এই দুর্যোগগুলো থেকে সুরক্ষা পেতে সৃষ্টিকর্তার কাছে দোয়া ও প্রার্থনা করা অত্যন্ত জরুরি। প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে বাঁচতে দোয়া ও প্রার্থনার গুরুত্ব অপরিহার্য। ইসলাম ধর্ম, সনাতন হিন্দু ধর্মসহ প্রায় সব ধর্মেই দুর্যোগ থেকে বাঁচতে বিশেষ প্রাথর্ণার কথা বলা হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে বাঁচতে যেসব দোয়া এবং প্রার্থনা করা যেতে পারে চলুন জেনে নেই এই আয়োজনে।

ইসলাম ধর্ম

মহাল আল্লাহ তাআলার কাছে দোয়া ও প্রার্থনা করে দুর্যোগ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। তাই  প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে তাওবা করা এবং আল্লাহর কাছে ইস্তিগফার করা, অর্থাৎ গুনাহের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা। আল্লাহ তাআলা কুরআনে বলেন, "তোমাদের উপর যে কোন বিপদ-আপদ আসে তা তোমাদের কৃতকর্মের ফলেই আসে, এবং তিনি অনেক গুনাহ মাফ করে দেন" (সূরা আশ-শুরা: ৩০)। "আস্তাগফিরুল্লাহ" অর্থাৎ, "আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই।" বেশি বেশি জিকির করা।

যেকোনো বিপদ থেকে রক্ষা পেতে সুরা আল-ফাতিহা পাঠ করা যেতে পারে। এতে আল্লাহর প্রশংসা, করুণা এবং দয়া প্রার্থনা করা হয়, যা দুর্যোগ থেকে রক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও আয়াতুল কুরসি (সূরা আল-বাকারা: ২৫৫) ইসলামে একটি অত্যন্ত শক্তিশালী দোয়া হিসেবে বিবেচিত হয়। এটি পাঠ করলে আল্লাহ তাআলা তার সুরক্ষা প্রদান করেন। প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় এবং প্রতিদিনের যেকোনো বিপদ থেকে সুরক্ষার জন্য এটি নিয়মিত পাঠ করা উচিত।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা কঠিন বিপদ থেকে রক্ষা পেতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একটি দোয়া করেছেন, "আল্লাহুম্মা ইন্না নাজআলুকা ফি নুহুরিহিম, ওয়া না’উযুবিকা মিন শুরুরিহিম।" (অর্থ: হে আল্লাহ! আমরা তাদের (দুর্যোগ) বিরুদ্ধে তোমার কাছে আশ্রয় চাই, এবং আমরা তাদের অনিষ্ট থেকে তোমার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করি)। এই দোয়াটি যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা বিপদ থেকে সুরক্ষার জন্য অত্যন্ত কার্যকর।

এছাড়াও প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় বেশি বেশি নফল নামাজ আদায় এবং হাদীস অনুযায়ী সালাতুল হাজত পড়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনার একটি মাধ্যম। সেই সঙ্গে আল্লাহর রহমতের জন্য দোয়া করতে হবে। “রাব্বানা আতমিম লানা নূরানা ওয়াগফির লানা ইন্নাকা আলা কুল্লি শাই’ইন কাদীর", (অর্থ: হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের জন্য আমাদের আলো পূর্ণ করে দাও এবং আমাদের ক্ষমা করো। নিশ্চয়ই তুমি সর্ববিষয়ে ক্ষমতাবান)।

হিন্দুধর্ম

হিন্দুধর্মে প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা পেতে বিভিন্ন দেব-দেবীর কাছে প্রার্থনা করা হয়।  প্রতিটি দুর্যোগের জন্য আলাদা আলাদা দেবতা আছেন এবং তাদের উদ্দেশ্যে বিশেষ মন্ত্র পাঠ করা হয়। যেমন_ মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র পড়া যায়, "ওম ত্র্যম্বকম্ যজামহে সুগন্ধিম্ पुष्टि বর্ধনম্ উর্বারুকমিবা বান্ধনান্ মৃত্যোর্মুক্শীয় মা‍‍`মৃতাত্" অর্থাৎ, "আমরা সেই ত্রিনেত্রকে পূজা করি, যিনি সুগন্ধি এবং পুষ্টিদায়ক, যিনি আমাদের মৃত্যুর বন্ধন থেকে মুক্তি দেন।" এছাড়াও দুর্যোগের সময় দুর্গা দেবীর আশ্রয় এবং সহায়তা প্রার্থনা করা যেতে পারে।

খ্রিস্টধর্ম

খ্রিস্টধর্মে প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করা হয়। যাতে তিনি তার সৃষ্টিকে রক্ষা করেন এবং শান্তি ফিরিয়ে আনেন।

প্রভুর প্রার্থনা (The Lord’s Prayer): "আমাদের পিতা, যিনি স্বর্গে আছেন, তোমার নাম পবিত্র করা হোক। তোমার রাজত্ব আসুক, তোমার ইচ্ছা স্বর্গে যেমন, তেমনি পৃথিবীতেও পূর্ণ হোক।"

প্রার্থনা: "হে প্রভু, আমাদের রক্ষা করুন, আমাদের এই কঠিন সময়ে সহায়তা করুন এবং আমাদের শান্তি প্রদান করুন।"

বৌদ্ধধর্ম

বৌদ্ধধর্মে প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষার জন্য চেতনার প্রশান্তি এবং ধৈর্যের উপর জোর দেওয়া হয়। বৌদ্ধরা এই সময়ে ধ্যান এবং প্রার্থনার মাধ্যমে মানসিক শক্তি সঞ্চয় করে।

প্রার্থনা এবং ধ্যান: শরণ গ্রহণ মন্ত্র: "বুদ্ধং শরণং গচ্ছামি, ধম্মং শরণং গচ্ছামি, সংঘং শরণং গচ্ছামি।" অর্থাৎ, "আমি বুদ্ধের আশ্রয় গ্রহণ করি, ধর্মের আশ্রয় গ্রহণ করি, সংঘের আশ্রয় গ্রহণ করি।"

মেট্টা ভাবনা (প্রেমময়তার ধ্যান): প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় সবাইকে মঙ্গল কামনা করে মেট্টা ধ্যান করা হয়, যাতে বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়।

Link copied!