৮ ফেব্রুয়ারি বা ২৬ রজব বৃহস্পতিবার পবিত্র শবে মেরাজ পালিত হচ্ছে। ‘শব’ অর্থ রাত এবং ‘মেরাজ’ অর্থ হচ্ছে ঊর্ধ্বগমন। ‘শবে মেরাজ’এর অর্থ হচ্ছে ঊর্ধ্ব গমনের রাত। ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী, ২৬ রজব দিবাগত রাতে ঊর্ধ্বাকাশে ভ্রমণ করেন মহানবী হজরত মোহাম্মদ (স.)। সেখানে মহান আল্লাহ তা’য়ালার সাক্ষাৎ লাভ করেছিলেন। এ রাতেই প্রতিদিন ৫ ওয়াক্ত ফরজ নামাজ আদায়ের বিধান নিয়ে আসেন মহানবী।
মেরাজের উদ্দেশ্য সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা কোরআনে বলেন لِنُرِيَهُ مِنْ آيَاتِنَا (মিরাজ সংঘটিত হয়েছিল) তাকে আমার নিদর্শন দেখাবার জন্যে। (সুরা বনি ইসরাঈল-১) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এই রাত্রিতে অসংখ্য বড় বড় নিদর্শন দেখেছেন। মানব জাতির পিতা আদম আ. কে দেখেছেন। তার ডানপাশে ছিল শহীদদের (জান্নাতিদের) রুহ এবং বামপাশে ছিল জাহান্নামিদের রুহ।
পবিত্র এই রাতে মহান রাব্বুল আলামিনের রহমত কামনায় প্রার্থনায় মগ্ন হোন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। সব এলাকার মসজিদে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়াও পবিত্র এই রাতে কোরআন খতম, জিকির-আজগার করে ইবাদতে মগ্ন থাকেন মুসলমানরা।
শবে মেরাজের নামাজ ও রোজা
মেরাজ রাতের গুরুত্ব ও ফজিলত অনেক। রসুল সা. ঊর্ধ্বাকাশে ভ্রমণের পর অনেক বছর সাহাবায়ে কেরামের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন। তবে তিনি শবে মেরাজকেন্দ্রিক কোনো বিশেষ আমল করেননি এবং সাহাবিদের কোনো আমল করার বিষয়ে বিশেষ হুকুমও দেননি। তাই এই রাতে কোনো আমলকে দীনের অংশ মনে করা কিংবা সুন্নত হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করলে তা বেদআত হবে। তাই পবিত্র এই রাতে নফল নামাজ আদায় করা যাবে। সেই সঙ্গে রোজা রাখাও যাবে। তবে তা ফরজ বা সুন্নত নয়। নফল হিসেবে এই ইবাদত করা যাবে।
আলেমরা জানান, এই রাতে মহান আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টির জন্য়ে ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা নফল নামাজ আদায় করতে পারেন এবং কোরআন খতম, জিকির করে কাটাতে পারেন। যা প্রতি রাতেই করা যেতে পারে।
আল্লামা ইবনে রজব হাম্বলি রহ. লাতায়েফ ও মাআরেফ গ্রন্থে উল্লেখ রয়েছে, রজব মাসের সঙ্গে সম্পর্কিত বিশেষ কোনো নামাজ নেই। রজব মাসের প্রথম জুমায় সালাতুর রাগায়েব প্রসঙ্গে যে-সব হাদিস বর্ণিত হয়েছে সেগুলো ভিত্তিহীন ও মিথ্যা।