অনেকেই অন্যের ভরসা নেওয়ার জন্য় সৃষ্টিকর্তার নামে কসম করে। কসম করে তা রক্ষা করা আবশ্যিক। কিন্তু কেউ যদি কসম রক্ষা করতে না পারে তবে তাতে গুণাহ হয়। আর গুণাহ থেকে বাঁচতে অবশ্যই কাফফারা দিতে হয় বলে উল্লেখ রয়েছে হাদিস।
পবিত্র কোরআনেও কসমের কাফফারার বিষয়ে বর্ণিত রয়েছে। কসমের কাফফারার বিধান বর্ণনা করে কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, “আল্লাহ তোমাদেরকে পাকড়াও করেন না অর্থহীন কসমের ব্যাপারে, কিন্তু যে কসম তোমরা দৃঢ়ভাবে কর সে কসমের জন্য তোমাদেরকে পাকড়াও করেন। সুতরাং এর কাফফারা হল দশ জন মিসকীনকে খাবার দান করা, মধ্যম ধরনের খাবার, যা তোমরা নিজেদের পরিবারকে খাইয়ে থাক, অথবা তাদের বস্ত্র দান করা, কিংবা একজন দাস-দাসী মুক্ত করা। যে সামর্থ্য রাখে না, তার জন্য তিন দিন রোজা রাখা। (সুরা মায়েদা: ৮৯)
অর্থাত্ কোনো মুমিন মুসলমান ব্যক্তি যদি আল্লাহর নামে কসম করে এবং তা রক্ষা করতে ব্যর্থ হয় কিংবা শপথটি ভেঙে ফেলে, তবে সেই কসমের জন্য অবশ্যই কাফফারা দিতে হবে। কাফফারা হিসেবে দশজন দরিদ্র ব্যক্তিকে দুই বেলা তৃপ্তি সহকারে খাবার খাওয়াতে হবে কিংবা দশজন দরিদ্র ব্যক্তিকে এক জোড়া করে পোশাক দান করতে হবে। যাদের এই দুইটি করার সামর্থ্য নেই তারা পরপর তিন দিন রোজা রাখবে।
দরিদ্র মিসকিনদের খাবার খাওয়ানোর মাধ্যমে কসমের কাফফারা আদায় করা যাবে। এক্ষেত্রে ১০জন মিসকিনকে দুই বেলা খাবার খাওয়াতে হবে। ২০ জন মিসকিনকে এক বেলা খাবার খাওয়ালে কিন্তু কসমের কাফফারা আদায় হবে না। একইভাবে ১০ জন মিসকিনকে এক জোড়া করে পোশাক দিয়ে কাফফারা আদায় করা যাবে।
এছাড়াও টাকা দিয়েও কাফফারা আদায় করা যাবে। খাবার খাওয়ানো বা পোশাক বিতরণের পরিবর্তে দরিদ্রের মাঝে অর্থ বিতরণ করে সদকা করলেও কাফফারা আদায় হয়ে যাবে। হাদিসে বলা রয়েছে, সদকায়ে ফিতরের পরিমাণ টাকাকে একজন মানুষের দুই বেলা খাবারের খরচ ধরা হয়। সেই খরচের টাকাকে ১০ দিয়ে গুণ দিলে যত টাকা হবে তা দরিদ্রের মাঝে সদকা করতে হবে। এক্ষেত্রে সদকায়ে ফিতর যদি যা ১ কেজি ৬৫০ গ্রাম গম বা আটার বাজারমূল্য সর্বনিম্ন ১১৫ টাকা হয়, এটিকে ১০ দিয়ে গুণ দিলে ১১৫০ টাকা হবে। এই ১১৫০ টাকা একটি কসমের কাফফারা হিসেবে সদকা করতে হবে।