দাম্পত্য সম্পর্ক শুরু হয় দুজনের মধ্যে। কিন্তু এতে জড়িয়ে থাকে পরিবারের অন্যরাও। মেয়েরা বিয়ের পর শ্বশুরবাড়ি আসে। পরিবারের সবাইকে আপন করে নেওয়ার চেষ্টা করে। সবার সঙ্গে শখ্যতা গড়ে উঠতে সময় লাগে। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে শাশুড়ির সঙ্গে খুঁনসুঁটি যেন লেগেই থাকে। শাশুড়ির সাজানো সংসারে নিজের স্থান করে নিতে বেশ ধকল সইতে হয়। আবার স্বামীকে নিজের মতো করে পাওয়ার ইচ্ছা থাকলেও অভিযোগ উঠে নানা রকম। সব মিলিয়ে অন্য পরিবেশে নিজেকে খাপ খাওয়াতে খানিকটা কষ্ট তো হয় বটেই।
শাশুড়ির সঙ্গে খুঁনসুঁটি বা ঝগড়াঝাঁটি না করে, বরং বুদ্ধি করে পরিস্থিতি সামালে নেওয়াই ভালো। এক্ষেত্রে কিছু পরামর্শ সহায় হতে পারে।
শাশুড়িকে মা হিসেবেই দেখতে হবে। মা যেমন শাসন করবে, শাশুড়িরও শাসন করার অধিকার রয়েছে। তাই চুপ করে শোনাই ভালো। তবে সব বিষয়েই যদি শাশুড়ি শুধু সমালোচনাই করেন তবে প্রতিবাদ না করে, বরং স্বামীকে বিষয়টি জানান। স্বামীর সঙ্গে পরামর্শ করে কোনো উপায় বের করুন। প্রয়োজনে শাশুড়িকে বিষয়টি বুঝিয়ে বলার দায়িত্ব স্বামীকেই দিন। হয়তো ছেলের কথায় শাশুড়ি মা নিজের ভুল বুঝতে পারবেন।
অনেক বৌয়ের অভিযোগ, সামান্য কিছুতেই শাশুড়ির আচরণ পাল্টে যায়, আচার-আচরণে অপছন্দ করার বিষয়টিও বুঝিয়ে দেয়। এক্ষেত্রেও নিজে থেকে প্রতিবাদ করবেন না। কোনো রকম দুর্ব্যবহার করা যাবে না। বরং শাশুড়ির দুর্ব্যবহারকে গায়ে মাখবেন না। সময় দিন। তার অপছন্দের কাজগুলো থেকে নিজেকে সরিয়ে আনুন। আর একান্তই প্রয়োজনীয় কাজ কিন্তু শাশুড়ির পছন্দ হচ্ছে না, সেক্ষেত্রে স্বামীকেই সমাধান করার দায়িত্ব দিন। আর বাস্তবকে মেনে নিয়ে পরিবারকে সুখী করুন।
অনেক পরিবারে স্বামী-স্ত্রীর সিদ্ধান্তে প্রায়শই শাশুড়ির হস্তক্ষেপ করেন। সেক্ষেত্রে অভিযোগ না তুলে বরং শাশুড়ির কথাগুলোও মন দিয়ে শুনুন। তিনি সংসারের অভিজ্ঞতায় অনেক কিছুই দেখেছেন শিখেছেন। তার মতামত আপনাদের জন্য় ভালো হতে পারে। আর যদি শাশুড়ির উপদেশে ভুল থাকে তা সহনীয়ভাবে বুঝিয়ে বলুন।
শাশুড়ি ছেলের উপর নিজের অধিকার রাখবে এটাই স্বাভাবিক। স্বামী হিসেবে বৌয়েরও অধিকার থাকে। কিন্তু এ নিয়ে প্রতিযোগিতায় যাবেন না। বরং ছেলের উপর মায়ের অধিকারকে সাধুবাদ জানান। সংসারে আপনার উপস্থিতি শাশুড়ির মানতে একটু কষ্ট হলেও আপনি ধৈর্য্য হারা হবেন না।
শাশুড়ি তার ছেলের কাছে বৌয়ের নামে অভিযোগ করেই যাচ্ছে। সারাক্ষণ দোষ দিয়েই যাচ্ছৈ, এমন অভিযোগও উঠে। এক্ষেত্রে নিজের সত্যতা স্বামীর কাছে তুলে ধরুন। তার কাছে সববিষয়ে খুলে আলাপ করুন। কোনো বিষয়ে গোপন না রেখে নিজেকে আর নিজের কাজের সত্যতাকে তুলে ধরুন। অবশ্যই স্বামী আপনাকে বুঝবে। শাশুড়ি যদি অযথা অভিযোগ করেও যায় সংসারে কোনো অশান্তি হবে না। বরং অভিযোগগুলো সহজেই উড়িয়ে দেবেন আপনার স্বামী। একসময় হয়তো শাশুড়ি আর অভিযোগও করবেন না।
সবার সামনে সবসময় বৌকে ছোট করেন। আবার বাইরের লোকের কাছে শাশুড়ি বৌকে নিয়ে আলোচনাও করেন, খারাপ দিকগুলো তুলে ধরেন এমন অভিযোগও উঠে। এমন পরিস্থিতিতে মন খারাপ করবেন না। বরং শাশুড়ির সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে খোলামেলা কথা বলুন। আপনার খারাপ দিকগুলো আপনাকেই জানাতে বলুন। অন্যদের জানিয়ে আপনার সম্মান কমানো আর আপনাকে ছোট না করার জন্য অনুরোধ করুন। শাশুড়ি নিশ্চয়ই বিষয়টি অবগত হবেন এবং আপনার সম্পর্কে খারাপ কিছু বলার আগে ভাববেন।
শাশুড়ির সঙ্গে রাগ ধরে না রেখে ভুল বুঝাবুঝিগুলো মিটিয়ে নিন। এতে সম্পর্কগুলো সুন্দর থাকবে। পরিবারের সুখও বজায় থাকবে।