বারান্দায় ফুল ও সবজির বাগান নতুন কিছু নয়। বেশিরভাগ মানুষ শখের বশে বাগান করেন। কেউ আবার বারান্দার সৌন্দর্য বাড়ানোর জন্য করে থাকেন। আবার এমনও কেউ কেউ আছেন যারা অনেক ছোট বারান্দাতেও সবজি লাগিয়ে প্রয়োজনীয় চাহিদা মেটান। সেসব সবজির মধ্যে লাউ, কাঁচা মরিচ, উচ্ছে টমেটো তো থাকেই। আপনিও যদি বারান্দার টবে টমেটো ফলাতে চান তাহলে জেনে নিন কয়েকটি উপায়-
টমেটো চারা বেলে-দোআঁশ মাটিতে সবচেয়ে বেশি ফলন দেয়। উর্বর বেলে-দোআঁশ মাটি চাষের জন্য সংগ্রহ করুন। প্রথমে ২ ভাগ মাটিতে একভাগ গোবর ও কিছু টিএসপি সার মিশিয়ে ১০-১২ দিন খোলা জায়গায় ফেলে রাখুন। এরপর ছোট পলিব্যাগে প্রস্তুতকৃত মাটি ভরে বীজ লাগিয়ে চারা তৈরি করে নিন।
এরপর টবে অথবা ড্রামে অথবা ছোট কন্টেইনারে প্রস্তুতকৃত মাটি পরিপূর্ণভাবে ভরে ৩০-৩৫ দিনের মধ্যে চারা পুনরায় চারা রোপণ করুন। বাংলাদেশে বিভিন্ন জাতের টমেটো আছে। বারি টমেটো ৪, বারি টমেটো ৫, রোমা ভিএফ, রোমারিও, টিপু সুলতান, গ্রেট পেলে, ডেল্টা এফ ১, উন্নয়ন এফ ১, পুষারুবী, নিউ রূপালী এফ ১ ইত্যাদি।
মানিক, রতন, বারি টমেটো ৩, বারি টমেটো ৬, বারি টমেটো ৭, বারি টমেটো ৯, বাহার, মহুয়া ইত্যাদি জাত সারা বছর ফলন দেয়। এগুলোও বেছে নেওয়া যেতে পারে। জাত ভেদে টমেটো চারা রোপনের সময় ভিন্ন হয়। শীতকালীন টমেটোর জন্য সাধারণত অক্টোবর মাস থেকে মধ্য জানুয়ারি মাসের মধ্যে বীজ বুনতে হয়। এবং অক্টোবর মাস অথবা নভেম্বর মাসে এই বীজ থেকে চারা রোপন করা যায়। আবার গ্রিষ্মকালীন টমেটো চারা চৈত্র থেকে বৈশাখ মাসে রোপন করতে হয়।
বীজ বোনা থেকে শুরু করে গাছের প্রথম ফল পাকা পর্যন্ত কমপক্ষে ১০০ দিন লাগে এবং ফলধারণ জাতভেদে ৩০-৬০ দিন স্থায়ী হয়। টমেটোর ভালো ফলনের জন্য রোগ ও পোকামাকড় দমনের দিকে নজর দিতে হবে। টমেটো ছিদ্রকারী পোকার জন্য পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।
কোনও কোনও ক্ষেতে কৃমি রোগ, গোড়া পচা রোগ দেখা যায়। সে ক্ষেত্রে টবে চারা লাগানোর আগে ফুরাডন-৩ জি দিয়ে মাটি শোধন করে নিলে এ সব রোগের প্রকোপ কমে যায়।
ঠিকমত পরিচর্যা করলে ভালো ফলন হতে পারে। ফলের নিচের দিকে একটু লালচে ভাব দেখা দিলে ফসল সংগ্রহের উপযোগী হয়। জাতভেদে টমেটোর ফলন শতাংশে ৮০ থেকে ১০০ কেজি পর্যন্ত হতে পারে। নিয়ম মেনে টমেটো চাষ করলে বেশ ভালো ফলন পাওয়া যাবে।
যেকোনো সবজি চাষের জন্য সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ হলো, পেশাগত কোনও চাষীর পরামর্শ নেওয়া।