রমজান মাসে সারাদিন রোজা রাখা হয়। গরমে সারাদিন রোজা রেখে পানিশূন্যতা দেখা দিতে পারে। শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দিলে এর প্রভাব ত্বকেও পড়ে। পানিশূন্য ত্বক রুক্ষ ও নিষ্প্রাণ হয়ে উঠে। উজ্জ্বলতা হারায়। ঈদের আগে ত্বকের নানা সমস্যাও শুরু হয়। তাই রোজা রাখার পাশাপাশি ত্বকের যত্নে একটু বাড়তি খেয়াল রাখতে হবে।
· শরীরে পানির ভারসাম্য ঠিক থাকলেই ত্বক আর্দ্র বা হাইড্রেট থাকে। তাই প্রথমেই শরীরের পানিশূন্যতা দূর করার চেষ্টা করতে হবে। রমজান মাসে ইফতারের পর থেকে সাহরি পর্যন্ত পানি পানের সময় থাকে। এই সময়ের মধ্যেই অন্তত আট গ্লাস পানি পান করা উচিত।
· ত্বক পানিশূন্য হলে পানি-ভিত্তিক স্কিনকেয়ার পণ্য ব্যবহার করতে হবে। ক্লিনজার, টোনার, সিরাম, ক্রিম বা লোশন নিয়মিত ব্যবহার করা জরুরি। এসব পণ্য অবশ্যই পানি-ভিত্তিক হতে হবে। যা ত্বকের ভেতরে প্রবেশ করে পানি সরবরাহ করবে। তাই যেসব পণ্যে হায়ালুরোনিক এসিড, গ্লিসারিন, ইউরিয়া, অ্যামোনিয়া ল্যাকটেট, সেরামাইডস, প্যান্থেনল থাকে, সেসব পণ্য কেনা জরুরি।
· রোজা রেখে দীর্ঘ সময় ধরে গোসল করবেন না। এতে ত্বকের ব্যারিয়ার নষ্ট হয়ে যায়। এর ফলে ত্বকের পানি ও তেলের ভারসাম্য নষ্ট হয়। ত্বক দ্রুত আর্দ্রতা হারায়। কুসুম গরম বা স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানি দিয়ে ১০ মিনিট গোসল করতে হবে। এর বেশি সময় গোসল করা ত্বকের জন্য ক্ষতিকর।
· ত্বকের পানিশূন্যতা পূরণে হাইড্রেটিং মাস্ক ব্যবহার করুন। আবার প্রাকৃতিক উপাদান যেমন, অ্যালোভেরা, তরমুজ, পাকা আম, শসা ইত্যাদি দিয়ে ঘরে মাস্ক তৈরি করতে পারেন। যা নিয়মিত ত্বকে ব্যবহার করলে পানিশূন্যতা দূর হবে।
· দিনে অবশ্যই ব্রড-স্পেকট্রাম সানস্ক্রিন বা সানব্লক ব্যবহার করতে হবে। গরমে ত্বক সহজেই পানিশূন্য হয়ে পড়ে। এই সময় সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মিতে ত্বকের কোলাজেন ও ইলাস্টিন ভেঙ্গে যায়। ত্বকে বলিরেখা দেখা দেয়। তাই সানস্ক্রিন ব্যবহার করা অত্যন্ত জরুরি।
· রোজায় কফি পান করার কারণেও ত্বক পানিশূন্য হতে পারে। তাই রোজা ভেঙে কফি পান না করাই ভালো। অন্য সময় দিনে দুই কাপের বেশি কফি পান করা ঠিক নয়।
· ত্বকে আর্দ্রতার অভাবে মৃতকোষ জমতে থাকে। যা দূর করতে নিয়মিত এক্সফোলিয়েটিং করা জরুরি। ৭ দিনে একবার কেমিক্যাল এক্সফোলিয়েটর ব্যবহার করুন। তবে অতিরিক্ত এক্সফোলিয়েটিং করলে ত্বকের ব্যারিয়ার নষ্ট হতে পারে।
· ত্বকে ভালো মানের ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। রাতে ঘুমের মধ্যে ত্বকের ওপরের স্তর থেকে পানি বা আর্দ্রতা ক্ষয় হতে থাকে। যাকে ট্রান্সএপিডার্মাল ওয়াটার লস বলা হয়। তাই ঘুমানোর আগে ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। শুষ্ক ত্বকের জন্য অবশ্যই ভারী ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করবেন।
· ত্বকে পানিশূন্যতা দূর করতে খাদ্যতালিকায় প্রচুর পরিমাণে শাক-সবজি ও ফলমূল রাখতে হবে। এগুলো ত্বকে পুষ্টি জোগাবে। পানিশূন্যতা দূর করবে।