• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

যেভাবে আমল করলে রিজিক বাড়বে


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: মে ২৫, ২০২৪, ০৬:১৩ পিএম
যেভাবে আমল করলে রিজিক বাড়বে
ছবি: সংগৃহীত

বরকতময় জীবন পেতে চায় সবাই। ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা হালাল রোজগার আর হালাল রিজিকের চেষ্টা করেন। রিজির বাড়িয়ে দিতে মহান আল্লাহ কাছে প্রার্থণা করেন প্রতিনিয়ত। কিন্তু জানেন কি, রিজিক বাড়িয়ে দেওয়ার মালিক আল্লাহ আর তার কাছে প্রার্থণা করার বিশেষ দোয়া রয়েছে।

মহান রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যদি তোমরা আল্লাহর প্রতি যথার্থভাবে ভরসা রাখো। তিনি তোমাদের সেভাবে রিজিক দান করবেন, যেভাবে তিনি পাখিদের দান করে থাকেন। সবাই চায় তার জীবন কল্যাণময় হোক। রিজিক বেড়ে যাক। জীবনে প্রাচুর্য আসুক। কিন্তু, প্রকৃত কল্যাণময় ও প্রাচুর্যময় জীবন তারাই পায়- মহান আল্লাহ যাদের দান করেন।“

তাওয়াক্কুল বা আল্লাহর প্রতি ভরসা রাখা। আল্লাহর উপর ভরসা রেখে কিছু আমল করতে হয়। যা রিজিক বাড়াতে সহায়তা করে।

মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন, ‘আর যে আল্লাহর তাকওয়া অর্জন করবে, আল্লাহ তার জন্য উত্তরণের পথ বের করে দেবেন। এবং তিনি তাকে এমন উৎস থেকে রিজিক দান করবেন, যার কল্পনাও সে করতে পারবে না ।’ (সুরা সাদ, আয়াত: ৩৫)

·        রিজিক বাড়াতে বেশি বেশি ইস্তেগফার পাঠ করতে হবে। এতে রিজিকে পরিপূর্ণ বরকত আসে। অভাবমুক্ত থাকতে পবিত্র কোরআনে ইসতেগফার পাঠের নির্দেশ রয়েছে। মহান আল্লাহ বলেন, “অতঃপর বলেছি- তোমরা তোমাদের পালনকর্তার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো। তিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল। তিনি তোমাদের ওপর অজস্র বৃষ্টিধারা ছেড়ে দেবেন। তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্তুতি বাড়িয়ে দেবেন, তোমাদের জন্যে উদ্যান স্থাপন করবেন এবং তোমাদের জন্য নদীনালা প্রবাহিত করবেন। (সুরা নুহ, আয়াত : ১০-১২)

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.)-এর বিবরণে আছে রসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন,‘যে ব্যক্তি লাগাতার তওবা-ইস্তিগফার করবে; মহান আল্লাহ সংকট থেকে উত্তরণের পথ বের করে দেবেন; সব দুশ্চিন্তা মিটিয়ে দেবেন এবং অকল্পনীয় উৎস থেকে রিজিকের ব্যবস্থা করে দেবেন।’ (আবু দাউদ, হাদিস: ১,৫১৮; ইবনে মাজাহ, হাদিস: ৩,৮১৯; মুস্তাদরাকে হাকেম, খণ্ড ৪, পৃষ্ঠা ২৯১, হাদিস: ৭,৬৭৭)

ইস্তিগফারের বাক্য_উচ্চারণ : ‘আস্তাগফিরুল্লাহ।’অর্থ : আমি আল্লাহর ক্ষমা প্রার্থনা করছি।

উচ্চারণ : ‘আস্তাগফিরুল্লাহা ওয়া আতুবু ইলাইহি।’অর্থ : আমি আল্লাহর ক্ষমা প্রার্থনা করছি এবং তার দিকেই ফিরে আসছি।

উচ্চারণ : ‘আস্‌তাগফিরুল্লা হাল্লাজি লা ইলাহা ইল্লা হুওয়াল হাইয়্যুল কইয়্যুমু ওয়া আতুবু ইলায়হি।’অর্থ : ‍‍`আমি ওই আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই, যিনি ছাড়া প্রকৃতপক্ষে কোনো মাবুদ নেই, তিনি চিরঞ্জীব, চিরস্থায়ী এবং তার কাছেই (তাওবাহ করে) ফিরে আসি।‍‍`

 

·        রিজিক অর্জনের জন্য চেষ্টা করতে হবে। ঘরে বসে থাকলে রিজিক পাওয়া যাবে না। মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন, ‘অতঃপর নামাজ সমাপ্ত হলে তোমরা পৃথিবীতে (জমিনে) ছড়িয়ে পড়ো আর আল্লাহর অনুগ্রহ (রিজিক) সন্ধান করো এবং আল্লাহকে অধিক পরিমাণে স্মরণ করো; যাতে তোমরা সফলকাম হও।’ (সুরা জুমা, আয়াত: ১০)

·        যেকোনো কাজের শুরুতে বিসমিল্লাহ বলতে হবে। তবে রিজিক এবং সেই কাজে বরকত আসবে। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমাদের মধ্যে কেউ যখন খাবার খায় আর যদি বিসমিল্লাহ বলে; তবে শয়তান ওই খাবারে অংশ নিতে পারে না। যেটুকু খাবার আছে তা (পরিমাণে কম হলেও) তার জন্য কল্যাণ বয়ে আনে।

·        রিযিক বাড়াতে জাকাত আদায় করা জরুরি। মহান আল্লাহ বলেন, জাকাত হলো কেবল ফকির, মিসকিন, জাকাত আদায়কারী ও যাদের চিত্ত আকর্ষণ প্রয়োজন (নব মুসলিম) তাদের হক এবং তা দাস-মুক্তির জন্য, ঋণগ্রস্তদের জন্য, আল্লাহর পথে জেহাদকারীদের জন্য এবং মুসাফিরদের জন্য, এই হলো আল্লাহর নির্ধারিত বিধান। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। (সুরা তাওবাহ, আয়াত: ৬০)

·        মহান আল্লাহর কাছে রিজিকের প্রাচুর্যতা চেয়ে নিতে হবে। তাই দোয়া করে আমল করতে হবে। উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল কুফরি ওয়াল ফাকরি, আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিন আজিবল ক্বাবরি লা ইলাহা ইল্লা আংতা।’ (আবু দাউদ) অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আপনার নিকট কুফরি ও দরিদ্রতা হতে আশ্রয় চাইছি। হে আল্লাহ! আমি কবরের আজাব থেকে আপনার কাছে আশ্রয় চাইছি, আপনি ছাড়া অন্য কোনো ইলাহ নেই।’

·        হজ-ওমরাহ পালনের মাধ্যমেও মহান আল্লাহ তাআলা রিজিকে বরকত দিবেন। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.)–র বিবরণে আছে যে রসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমরা লাগাতার হজ ও ওমরাহ পালন করতে থাকো। কারণ, এর দ্বারা এমনভাবে অভাব ও গুনাহ দূরীভূত হয়; যেমনভাবে কামারের হাপর লোহা ও সোনা-রুপার ময়লা দূর করে দেয়।’ (তিরমিজি, হাদিস: ৮১০; নাসায়ি, হাদিস: ২,৬৩১)

·        প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করলেও রিজিকে বরকত আসবে। মহান আল্লাহ ইরশাদ করেছেন, ‘আর আপনি পরিবার-পরিজনকে নামাজ আদায়ের আদেশ দিন এবং নিজেও তার ওপর অটল থাকুন। আমি আপনার কাছে কোনো রিজিক চাই না। আমিই আপনাকে রিজিক দিই। আর মুত্তাকিদের জন্যই শুভ পরিণাম।’ (সুরা ত্বহা, আয়াত: ১৩২)

·        দান-সদকা করলেও রিজিকে বরকত মেলে। মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে বলেন, “আর তোমরা যা কিছু আল্লাহর জন্য ব্যয় করো; তিনি তার বিনিময় দেবেন। তিনিই উত্তম রিজিকদাতা। (সুরা সাবা, আয়াত: ৩৯)

·        বিয়ের মাধ্যমেও রিজিকে বরকত আসে। মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে বলেন, “তোমাদের মধ্যে যারা অবিবাহিত এবং তোমাদের দাস–দাসীদের মধ্যে যারা সৎকর্মপরায়ণ, তাদের বিয়ে করিয়ে দাও। তারা যদি নিঃস্ব হয়, আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদের সচ্ছল করে দেবেন। কারণ, আল্লাহ প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ। (সুরা নূর, আয়াত: ৩২)

রসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তিন শ্রেণির মানুষকে সাহায্য করাকে আল্লাহ নিজ দায়িত্ব হিসেবে নির্ধারণ করেছেন। তিন শ্রেণির অন্যতম হলো বিয়ে করতে আগ্রহী সেই ব্যক্তি, যিনি বিয়ে করে পবিত্র জীবন যাপন করতে ইচ্ছুক।’ (তিরমিজি, হাদিস: ১,৬৫৫)

Link copied!