দিন যত যাচ্ছে পড়াশোনায় প্রতিযোগিতা বাড়ছে। ছোট বয়স থেকেই বাচ্চাদের পড়াশোনা নিয়ে চিন্তায় থাকেন অভিভাবকরা। ভালো রেজাল্টের পেছনে ছুটেন। স্কুলের ক্লাস থেকে এসেই আবার বিভিন্ন কোচিংয়ে ছুটে যান। যেকোনো উপায়েই হোক ভালো রেজাল্ট করতেই হবে। কিন্তু জানেন কি, ভালো রেজাল্টের জন্য়ে নিয়ম করে পড়া জরুরি। লেখাপড়ায় ভালো করতে মেধাবিরা কী করেন তা জানেন কি।
অনেকের ধারণা, মুখস্থবিদ্যাই ছিল শেখার প্রধান ধরন। কিন্তু এখন পড়াশোনার ধরন বদলেছে। মুখস্তবিদ্যা থেকে বের হয়ে এখন বিজ্ঞাননির্ভর গবেষণার মাধ্যমে পড়ার বিভিন্ন কৌশল আয়ত্ত করেছে মানুষ। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, লস অ্যাঞ্জেলেসের লার্নিং অ্যান্ড ফরগেটিং ল্যাবের গবেষক মাইকি গার্সিয়া ৫ মিনিটের একটি ভিডিও প্রকাশ করেন। যেখানে তিনি জানিয়েছেন কীভাবে মানুষের মস্তিষ্ক পড়ালেখায় আরও সক্রিয় হয়।
তার মতে, ‘কার্যকর অনুশীলনপ্রক্রিয়া ব্যবহার করেন না বলেই অনেক শিক্ষার্থী ভালো রেজাল্ট করতে ব্যর্থ হন।’তিনি পড়াশোনার কার্যকর অনুশীলনের বিষয়ে কিছু কৌশলের কথা জানিয়েছেন। প্রতিভাবানেরা এই কৌশলে পড়াশোনাকে আয়ত্ত করেন বলে মত দিয়েছেন গবেষক মাইকি।
শেখানোর জন্য শিখুন
যখন নিজে শিখবেন, এমনভাবেই শিখুন, যেন ভবিষ্যতে অন্য কাউকে শেখাতে পারেন। বিষয়টি পড়া শুরুর থেকেই মাথায় রাখুন। যা শিখছেন, তা অন্যকে কীভাবে বোঝাবেন তা অনুশীলন করুন। এতে সহজেই মনোযোগ বাড়বে। আবার আপনি বিষয়টির গভীরে বিশ্লেষণ করতে পারবেন।
মনে রাখার কৌশল
যা পড়ছেন তা লিখে ফেলুন। এতে পড়া সহজেই মনে থাকবে। গবেষক মাইকি জানান, ক্লাস নেওয়ার ১০ পর তিনি শিক্ষার্থীদের ‘অ্যাসাইনমেন্ট’ দেন। খালি কাগজে ক্লাসে কী কী হলো, তা লিখতে বলেন। অন্যদিকে ওই দিন রাতেও সবাইকে বাড়ির গিয়ে একই কাজ করতে দেন। ক্লাসে কী কী হলো আর কী শিখলো তা লিখতে বলেন। এতে ক্লাসের পড়া দুইবার লিখে শিক্ষার্থীরা এবং তা সহজেই মনে রাখতে পেরেছে।
নিজের কাছেই পরীক্ষা দিন
পড়া শেষ করার পর প্রশ্ন বা অধ্যায়ের শিরোনাম আর উপশিরোনামসহ সবটাই নিজের কাছে নিজে পরীক্ষা দিন। শিরোনাম–সংশ্লিষ্ট অনুচ্ছেদে যা আছে, তা মনে করুন। নিজেকে নিজেই প্রশ্ন করুন এবং উত্তর নিজেই দিন।
অনুশীলনে বিরতি নিন
একটানা পড়ালেখা করলে একঘেয়েমি চলে আসে। তাই চার ঘণ্টা পড়াশোনার পর অন্য কাজ করুন। কোনো সৃজনশীল কাজ করতে পারেন। কিংবা ভালো লাগার কোনো কাজ করুন। কিংবা টানা ১ ঘণ্টা পরার পর ১৫ মিনিটের বিরতি নিতে পারেন। এতে পড়াশোনায় একঘেয়েমি আসবে না।
এক বিষয় বেশিক্ষণ নয়
একেবারে অনেক পড়া শেষ করতে যাবেন না। এতে কিছুই মনে থাকবে না। আবার অনেকক্ষণ একই বিষয় না পড়ে অল্প অল্প করে কয়েকটি বিষয় পড়ুন। এতে পড়া মনে থাকবে। গণিত করার পর কিছুক্ষণ বিরতি নিয়ে ইংরেজি শব্দ পড়তে পারেন। এমনভাবে পড়লে সহজেই পড়া আয়ত্ত করা যায়।
দ্রুত বই দেখবেন না
পড়ার কোনো বিষয় মনে না এলে দ্রুত বই দেখবেন না। মাথা খাটানোর চেষ্টা করুন। মস্তিষ্ককে উপায় বের করতে দিন। এতে পড়া বেশি মনে থাকে।
একস্থানে বেশিক্ষণ নয়
সাধারণত ঘরে নির্দিষ্ট স্থানে টেবিলেই পড়াশোনা করা হয়। কিংবা লাইব্রেরির নির্দিষ্ট স্থানে পড়ছেন। তবে বেশিক্ষণ একইস্থানে না থেকে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ঘুরে পড়ুন। ক্লাসরুমে, বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজের করিডরে পড়তে পারেন। আবার বাড়ির বারান্দায় কিংবা ছাদে গিয়েও খোলা আকাশের নিচে পড়াশোনা করতে পারেন। এতে পড়া বেশি মনে থাকবে।
সূত্র: ইঙ্ক ডট কম