• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ১৩ ফাল্গুন ১৪৩০, ২৮ শা'বান ১৪৪৬

টক্সিক প্যারেন্টিং কেমন হয়, জানেন?


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২৫, ০৯:২৮ পিএম
টক্সিক প্যারেন্টিং কেমন হয়, জানেন?
সূত্র: সংগৃহীত

সন্তানকে বড় করা সব বাবা মায়েরই দায়িত্ব। বলা যায়, দাম্পত্যের অধিকাংশ সময় পার হয় প্যারেন্টিংয়ের পেছনে। সন্তানকে বড় করা, তাদের পড়াশোনা শেখানো, সুন্দর ভবিষ্যত নিশ্চিত করায় কোনো কমতি রাখেন না বাবা মা। কিন্তু জানেন কি, অতিরিক্ত কেয়ারিংয়ে অনেকটাই টক্সিক হয়ে যান বাবা মা। তাদের শাসন, আদর সবকিছু মিলে টক্সিক প্যারেন্টিংয়ে রূপ নেয়।

টক্সিক প্যারেন্টিং কী, তা হয়তো অনেকেই জানেন না। টক্সিক প্যারেন্টিং মূলত চার প্রকারের হয়। ডিসমিসিভ, হেলিকপ্টার, নার্সিসিস্টিক ও প্যাসিভ বা পারমিসিভ প্যারেন্টিং। একেক বাবা মায়ের সন্তানদের সঙ্গে সম্পর্ক একেক রকম হয়। কারো বন্ধুসুলভ সম্পর্ক থাকে। কারো আবার সন্তানের সঙ্গে থাকে দূরত্ব।

অধিকাংশ মাবাবা সন্তানকে ‘গিল্ট ট্রিপ-এ রাখেন। অর্থাত্ সন্তানের জন্য কী কী করেছেন, কী কী ‘স্যাক্রিফাইস করেছেন তা সবসময় মনে করিয়ে দেন। যা থেকে সন্তানদের মধ্যে অনুশোচনাবোধ, হীনম্মন্যতাবোধ সৃষ্টি হয়। অথচ বাবা মা হিসেবে প্রত্যেকেই এমন স্যাক্রিফাইসের সম্মুখীন হন। কারো কম আর কারো বেশি থাকে। এটা অভিভাবকদের দায়িত্বের অংশ।

অনেক মাবাবা সন্তানের আত্মবিশ্বাস ভেঙে দেন। সারাক্ষণ বলতেই থাকেন, ‘তোমাকে দিয়ে কিছুই হবে না.. তুমি কিছুই পারবে না অভিভাবকদের কাছ থেকে এমন কথা শুনলে সন্তানদের মধ্যে  নেতিবাচকতা দেখা দেয়। আত্মবিশ্বাস ভেঙে যায়।

শুধু তাই নয়, অনেক অভিভাবক নিজের সন্তানকে ‘প্রজেক্টমনে করেন। সন্তানের জন্য তাদের সময়, শ্রম, অর্থ ব্যয় করা যেন ‘বিনিয়োগ। এর পরিপ্রেক্ষিতে সন্তানের কাছে তাদের অনেক চাহিদা থাকে। অর্থনৈতিকভাবে বা সামাজিকভাবে সন্তানের সফলতাই মূল বিষয় থাকে। এটি হচ্ছে ‘নার্সিসিস্টিক প্যারেন্টিং

‘হেলিকপ্টার প্যারেন্টিংহলো সন্তানকে নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখা। সন্তানকে আলাদা সত্তা হিসেবে চিন্তাই করতে পারেন না। সন্তানকে নিজের সিদ্ধান্ত নিতে দেন না। সন্তানের ব্যক্তিগত বিষয়কে প্রাধান্য দেন না। এমনকি সন্তানের বিয়ের পরও বিবাহিত জীবনেও হস্তক্ষেপ করেন অভিভাবকরা। যা সন্তানকে আত্মনির্ভরশীল হওয়ার ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করে।

অনেক অভিভাবক রয়েছে যারা সন্তানকে ছোটবেলা থেকেই গালিগালাজ ও মারধর করেন। শিশুর গায়ে হাত তোলেন। শারীরিক নির্যাতন করেন। তাদের ধারণা শাসন না করলে সন্তানকে নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে না।

আবার অনেক বাবা মা সন্তানকে অন্যের সঙ্গে তুলনা করতেই থাকেন। অন্যের ভালো রেজাল্ট, ভালো স্বভাবের সঙ্গে নিজের সন্তানের তুলনা করেন এবং সন্তানকে ছোট করেন। এতে সন্তানের মানসিক অবনতি হয়।

টক্সিক প্যারেন্টিংয়ের আরও একটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে অনেক বাবা মা সন্তানকে অন্যদের সামনে অপমান-অপদস্ত করেন। ছোট দেখান। সন্তানের দোষের কথা অন্যদের বলেন। সন্তানের ব্যক্তিগত বিষয় নিয়েও আলাপ করেন। তারা সন্তানের আবেগীয় অনুভূতিকে প্রাধান্য দেন। সন্তানের প্রতি সহানুভূতিশীল থাকেন না। এটি হচ্ছে ‘ডিজমিসিভ প্যারেন্টিং

অনেক বাবা মা নিজেদের ইগো কে প্রাধান্য দেন। সন্তানের প্রতি কঠোর নিয়ম প্রয়োগ করেন। সন্তানের সঙ্গে মুখোমুখি বা খোলামেলা আলাপ করতে চান না। নিজেদের সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেন। এটাকে বলে ‘প্যাসিভ বা ‘পারমিসিভ প্যারেন্টিং

টক্সিক প্যারেন্টিং বাবা মায়ের সঙ্গে সন্তানের দূরত্ব বাড়িয়ে দেয়। সন্তানের সুন্দর ভবিষ্যত নিশ্চিতে এটি বাধা হয়ে দাড়ায়। সন্তানকে নিয়ন্ত্রণ না করে বরং বন্ধুসুলভ আচরণের মাধ্যমে বাবা মায়ের প্যারেন্টিং দায়িত্ব পালন করলে সম্পর্ক অনেকটাই সুন্দর হতে পারে।

 

সূত্র: টকসস্পেস ডটকম

Link copied!