চুল পড়া স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। দিনে একটা নির্দিষ্ট পরিমান পর্যন্ত চুল পড়বে আবার গজাবে এইটাই স্বাভাবিক। কিন্তু যে পরিমাণে চুল পড়বে সে পরিমাণে না গজালে কিংবা অতিরিক্ত চুল পড়া অস্বাভাবিক। পরিবেশ দূষণ, বয়স, স্ট্রেস, পুষ্টির অভাব, হরমোনাল ইমব্যালেন্স, জেনেটিক কারণ, স্কাল্প ইনফেকশন, হেয়ার প্রডাক্টের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার, বেশ কিছু ওষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণে, থাইরয়েড, অটোইমিউন ডিজজ,পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রম, অ্যানিমিয়া প্রভৃতি নানা কারণেই চুল পড়তে পারে। ফলে চুল পড়া নিয়ে দুশ্চিন্তার শেষ নেই। এ অবস্থায় চুল পড়া ঠেকাতে কিছু ঘরোয়া উপায় অবলম্বন করতে পারেন-
পেঁয়াজের রস
পেঁয়াজে প্রচুর পরিমাণে সালফার থাকে। মাথায় পেঁয়াজের রস দিলে চুলের ফলিকলে রক্তপ্রবাহ বৃদ্ধি পায়। চুল হয় আরও মজবুত। এছাড়া পেঁয়াজের রসে থাকা অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল প্রপার্টিজ স্কাল্পের জীবাণুদের মেরে ফেলে। ফলে স্কাল্প ইনফেকশনের সঙ্গে সঙ্গে চুল পড়ার অশঙ্কাও হ্রাস পায়।
দই
২ চামচ দইয়ের সঙ্গে ১ চামচ মধু এবং ১ চামচ লেবুর রস নিয়ে ভাল করে মিশিয়ে নিন। মিশ্রনটা ভাল করে চুলে লাগিয়ে ৩০ মিনিট রেখে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এমনটা সপ্তাহে একবার করলেই দেখবেন চুল পড়ার হার কমতে শুরু করেছে।
অ্যালোভেরা
মাথার তালুতে অ্যালোভেরা জেল লাগান। এতে চুল দ্রুত বাড়বে। চুল পড়ার জন্য দায়ী প্রদাহ দূর হবে।
নারকেল দুধ
এক কাপ নারকেল দুধ নিয়ে ধীরে ধীরে স্কাল্পে লাগান। একটা টাওয়াল দিয়ে মাথাটা ঢেকে কমপক্ষে ২০ মিনিট রেখে ভাল করে চুলটা ধুয়ে ফেলুন। এতে নারিকেলের দুধে থাকা ভিটামিন ই ময়েসশ্চারাইজারের ঘাটতি দূর করে চুল পড়া কমায়।
নারকেল তেল
কুসুম গরম নারকেল তেল মাথার তালুতে মাসাজ করুন। নারকেল তেল চুলের ফলিকলে পুষ্টি জোগায়। চুলের গোড়া মজবুত করে। হেয়ার ফলিকল বা চুল গুটিকা হলো ত্বকের ডার্মাল স্তরে অবস্থিত একটি অঙ্গ, যা চুলের বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করে।
মেথি
সারা রাত মেথি ভিজিয়ে পরদিন সকালে ব্লেন্ডারে পেস্ট করে নিন। এটা সরাসরি অথবা দই-মধুর সঙ্গে মিশিয়ে লাগাতে পারেন। শুকনো হয়ে গেলে ভালো করে ধুয়ে শ্যাম্পু করে নিন। এতে চুল পড়া কমে যাবে, চুলের বৃদ্ধি হবে ত্বরান্বিত।
গ্রিন–টি
গ্রিন–টি ঠান্ডা করে মাথার তালুতে লাগালে চুল পড়া কমে যায়। গ্রিন–টিতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট থাকে। ডিএইচটি নামের একটি হরমোন চুল পড়ার জন্য সরাসরি দায়ী। গ্রিন–টি এই ডিএইচটি নামের হরমোনকে বাধাগ্রস্ত করে।
নিম পাতা
এক মুঠো নিমপাতা এক লিটার পানিতে খুব ভালো করে ফুটিয়ে নিন। মিশ্রণটা ঠান্ডা করে বোতলে ভরে রেখে দিন। এই প্রাকৃতিক উপাদানটিতে থাকা অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল প্রপার্টিজ চুলের গোড়ায় কোনো ধরনের সংক্রমণ হওয়ার আশঙ্কা যেমন কমায়, তেমনি খুশকির প্রকোপও হ্রাস করে।
ক্যাস্টর অয়েল
ক্যাস্টর অয়েলের সঙ্গে নারকেল তেল মিশিয়ে সপ্তাহে দুই তিনবার মাথার তালুতে লাগালে চুলের দ্রুত বৃদ্ধি হয়। চুল পড়া হ্রাস পায়।
আমলকী
আমলকীর তেল চুলে ব্যবহার করা কিংবা আমলকীর রস মাথায় লাগানো খুব উপকারী। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি ও অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট থাকে। আমলকীর পুষ্টিউপাদানগুলো চুলের ফলিকলকে মজবুত করে, চুল পড়া কমায়। চুল পড়া কমানোর পাশাপাশি নতুন চুল গজানোর ক্ষেত্রেও আমলকী সহায়ক।
আলু
আলুর রস চুলের গোড়ায় লাগিয়ে কিছুক্ষণ ম্যাসাজ করে অপেক্ষা করুন। আধা ঘণ্টা পর কুসুম গরম পানি ও শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।