শ্রীকৃষ্ণের ৫২৫০তম জন্মতিথি আজ। বিশ্বের হিন্দু সম্প্রদায় ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও আনন্দ উৎসবের মধ্য দিয়ে জন্মাষ্টমী পালন করবেন। হিন্দু পুরাণ মতে, ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে রোহিণী নক্ষত্র যোগে কৃষ্ণ মধুরায় কংসের কারাগারে মাতা দেবকীর অষ্টম সন্তান রূপে জন্মগ্রহণ করেন। তার এই জন্মদিনকে জন্মাষ্টমী বলা হয়।
বিভিন্ন পুরাণ ও প্রাচীন গ্রন্থ মতে, ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ১২৫ বছর প্রকট লীলাবিলাস করেন। ১২৫ বছর ধরাধামে অবস্থান করে বৈকুন্ঠে গমন করেন। মাঘ মাসের পূর্ণিমা তিথিতে তিনি ইহধাম ত্যাগ করে অন্তর্ধান করেন।
বিভিন্ন পুরাণ ও প্রাচীন গ্রন্থ মতে, ১৪৩১ বাংলার (২০২৪ সাল) জন্মাষ্টমী ভগবান শ্রীকৃষ্ণের ৫২৫০তম জন্মাষ্টমী। কারণ, ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ১২৫ বছর প্রকট লীলাবিলাস করেন। ১২৫ বছর ধরাধামে অবস্থান করে বৈকুন্ঠে গমন করেন। মাঘ মাসের পূর্ণিমা তিথিতে তিনি ইহধাম ত্যাগ করে অন্তর্ধান করেন। সেই দিনই কলি প্রবেশ করে। সেই দিন ছিল শুক্রবার। খ্রিস্টপূর্ব ৩১০১ সালে কলিযুগ আরম্ভ হয়। বর্তমান ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ। তা হলে কলির বয়স ৩১০১+২০২৪=৫১২৫ বছর। শ্রীকৃষ্ণের অর্ন্তধানের দিন কলির আবির্ভাব। শ্রীকৃষ্ণ ১২৫ বছর প্রকট লীলা করেছেন। তা হলে শ্রীকৃষ্ণের আবির্ভাব ৫১২৫+১২৫=৫২৫০ বছর পূর্বে হয়েছিল।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস পাশবিক শক্তি যখন ন্যায়নীতি, সত্য ও সুন্দরকে গ্রাস করতে উদ্যত হয়েছিল, তখন সেই শক্তিকে দমন করে মানবজাতির কল্যাণ এবং ন্যায়নীতি প্রতিষ্ঠার জন্য মহাবতার ভগবান শ্রীকৃষ্ণের আবির্ভাব ঘটেছিল। তাদের আরও বিশ্বাস, দুষ্টের দমন করতে এভাবেই যুগে যুগে ভগবান মানুষের মাঝে নেমে আসেন এবং সত্য ও সুন্দরকে প্রতিষ্ঠা করেন।
এ উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ ও ইসকনসহ বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় সংগঠন ব্যাপক কর্মসূচি নিয়েছে।
জন্মাষ্টমী উপলক্ষে আজ সরকারি ছুটি।
এদিকে দেশে বন্যা পরিস্থিতির কারণে এ বছর জন্মাষ্টমী উৎসবের ব্যয় কমিয়ে দুর্গতদের পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে পূজা উদযাপন পরিষদ, মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটি। এ ছাড়াও দুর্গত জেলাগুলোতে জন্মাষ্টমীর শোভাযাত্রা না করে সে অর্থ বন্যার্তদের মধ্যে বিতরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশের বিভিন্ন স্থানের মন্দির কমিটি।
মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটির উদ্যোগে দুই দিনব্যাপী কেন্দ্রীয় জন্মাষ্টমী উৎসব আজ (২৫ আগস্ট) শুরু হচ্ছে। প্রথম দিনে আজ ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির মেলাঙ্গনে সকাল ৮টায় দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনায় গীতাযজ্ঞ, দুপুর ২টায় জন্মাষ্টমীর কেন্দ্রীয় শোভাযাত্রা এবং রাতে শ্রীকৃষ্ণ পূজা অনুষ্ঠিত হবে।
ঢাকেশ্বরী মন্দিরসংলগ্ন পলাশীর মোড়ে জন্মাষ্টমীর শোভাযাত্রার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল।
উদ্বোধন করবেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম।
কর্মসূচির দ্বিতীয় ও শেষ দিনে আগামী ৩০ আগস্ট বিকেল ৩টায় ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির মেলাঙ্গনে অনুষ্ঠিত হবে আলোচনা সভা।
আন্তর্জাতিক কৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘসহ (ইসকন) রাজধানীর অন্যান্য মন্দির, পূজামণ্ডপ ও ধর্মীয় সংগঠন জন্মাষ্টমী উপলক্ষে আয়োজন করবে অনুষ্ঠানমালা।