আয় ও সম্পদ বৈষম্য প্রকটভাবে বেড়েছে রাজধানী ঢাকায়। একদিকে সম্পদের প্রাচুর্যে চোখ ঝলসানো রঙিন বিলাসী জীবন, অন্যদিকে অর্থকষ্টে রোগে শোকে কাতর অন্ধকার জীবন। অতি উচ্চবিত্ত আর অতিনিম্নবিত্তের মানুষের জীবনযাপনের যে বিভেদ রেখা তা বড় হচ্ছে দিন দিন।
রাজধানীর বস্তিগুলোতে বসবাসকারী মানুষের জীবনযাপন অজপাড়াগাঁয়ের মতোই। ভাঙাচোরা সরু রাস্তার পাশে ঘিঞ্জি টিনের সারিবদ্ধ ঘর। এসব ঘরেই বসবাস নিম্নবিত্তের মানুষদের। যাদের আয় কম, জীবনযাত্রার মান একেবারেই তলানীতে। অপুষ্টি আর স্বাস্থ্যসেবা বঞ্চিত শিশুরা বেড়ে ওঠে অন্ধকারে।
আর এসব বস্তিতে বাল্যবিয়ে যেন লেগেই আছে। শৈশবেই হারিয়ে যায় জীবনের সব রং। বাল্য বা শিশুবিয়ের পর গর্ভধারন, গর্ভপাত, নির্যাতনের মাত্রা অনেক বেশি। ফলে ঘর-সংসারও ভাঙে দ্রুততম সময়ে। কখন ছিন্নমূল হয়ে পড়তে হয় শিশুদের। এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে প্রথম আলো।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কড়াইল বস্তির দুটি এলাকা ঘুরেই ৯টি বাল্যবিয়ের তথ্য পাওয়া যায়। ঢাকার বাইরে বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে প্রশাসনিক উদ্যোগ থাকলেও খোদ রাজধানীতেই এমন ঘটনা থেকে যাচ্ছে অন্তরালে।
চলতি বছরের এক জরিপ প্রতিবেদনে দেখা যায়, ঢাকা জেলায় বাল্যবিয়ের হার ৪১ শতাংশ। এমনকি অভিজাত বনানী থানার অধীন এলাকায় যা ৫৪ শতাংশের বেশি। বাংলাদেশ জনমিতি ও স্বাস্থ্য জরিপ ২০২২ প্রতিবেদন অনুসারে, দেশে ১৮ বছরের কম বয়সী মেয়েদের বাল্যবিয়ের হার ৫০ শতাংশ।
কড়াইল বস্তির বিদ্যাসাগর মডেল স্কুলের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও শিক্ষক শাহীন মৃধা বলেন, কড়াইলে মোট ১৪টি স্কুল আছে। সব স্কুলেই কম-বেশি বাল্যবিয়ের ঘটনা ঘটছে। অষ্টম ও নবম শ্রেণির কিশোরী আর শ্রমজীবী কিশোরদের মধ্যে এ হার বেশি। ব্লাস্টের প্যারালিগ্যাল সদস্য কড়াইলের বাসিন্দা হালিমা খাতুন বলেন, অনেক মেয়েকে গ্রামে নিয়ে বিয়ে দেওয়া হচ্ছে।