দেখে মনে হতে পারে হয়তো জোরজবরদস্তি করে নাক মুখ চেপে ধরে জ্যান্ত মাছ খাওয়ানো হচ্ছে। কিন্তু না, জ্যান্ত এসব মাছ খাওয়ার জন্য স্বেচ্ছায় জড়ো হয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। কেন এমন অদ্ভূত আচরণ? তাদের দাবি এটি মূলত একটি চিকিৎসা পদ্ধতি। এই জ্যান্ত মাছ গিলে খেলেই হাঁপানি ও শ্বাসকষ্ট থেকে মিলবে চিরমুক্তি।
ভারতের হায়দ্রাবাদে অদ্ভূত এই চিকিৎসার আয়োজন করা হয়েছে। মাছপ্রসাদ নামে পরিচিত এ আয়োজনে আগত রোগীদের একটি হলুদ হারবাল পেস্ট ও ছোট আকারের জীবিত শোল মাছ খাওয়ানো হয়।
সেখানে চিকিৎসা নিতে আসা একজন রোগী বলেন, “আমি এখানে গত ২০-২৫ বছর ধরে আসছি। গেল দুই বছর আমি এই ওষুধ খাচ্ছি। এখন আমি সম্পূর্ণ রোগমুক্ত। যখন মাছটি আপনার মুখের ভেতর দেওয়া হবে তখন আপনি প্রথমে একটু অস্বস্তি বোধ করবেন, কিন্তু এটি আসলে কিছুই নয়। আপনি যদি এটি সঠিকভাবে করেন তাহলে সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে।”
চিকিৎসাবিজ্ঞানে অদ্ভূত এ পদ্ধতির কোনো ভিত্তি না থাকলেও এই চিকিৎসা নেওয়ার জন্য সারিবদ্ধ হয়ে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে হাজার হাজার মানুষকে। এই চিকিৎসাপদ্ধতিতে হলুদ, স্টার্চ এবং অন্যান্য উপাদান দিয়ে তৈরি একটি পেস্ট প্রথমে একটি শোল মাছের মুখে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়, তারপর সেই মাছটিকে রোগীদের মুখে ঢুকানো হয়।
চিকিৎসা নিতে আসা আরেকজন রোগী বলেন, “আমার হাঁপানি ও শ্বাসকষ্টের কিছু সমস্যা রয়েছে। আমি শুনেছি এখানে জ্যান্ত মাছ গিলে খেলে রোগ সেরে যায়। সেটি শুনে এখানে প্রথমবার আসলাম। এটি যদি কাজ করে থাকে তবে আগামী বছর আবারও আসব।”
তিনি বলেন, “প্রথমে একটু অস্বস্তি অনুভব হয়। অনেক সময় মাছটি বেরিয়ে আসতে চায় কিন্তু এটিকে পুনরায় গিলে ফেলতে হয়। দুই মিনিট পর সব স্বাভাবিক হয়ে যায়।”
আয়োজকদের দাবি, এ ধরনের মাছ যে কোনো ধরনের কফ ও শরীরে কোনো জমাটবদ্ধ পরিস্থিতি পরিষ্কার করে থাকে। তাদের এ দাবি বিশ্বাসও করছেন হাজার হাজার মানুষ, যার দেখা মেলে মাছপ্রসাদ আয়োজনে।
অদ্ভূত এ আয়োজনের দিন ঠিক করেন হিন্দু জ্যোতিষীরা। আগত রোগীদের মুক্তিলাভের জন্য পর পর তিন বছর এ প্রসাদ গ্রহণের জন্য বলা হয়ে থাকে।