সম্পর্কে যেমন ভালোবাসা থাকে, তেমনি থাকে মনোমালিন্যও। ছোট ছোট খুঁনসুঁটি, রাগ অভিমান সম্পর্ককে আরও সুন্দর করে তোলে। কথায় রয়েছে, ঝগড়া হলে নাকি ভালোবাসার গভীরতাও বাড়ে। তবে ঝগড়াকে দৗর্ঘ সময় টেনে রাখলে এর বিপরীতও ঘটতে পারে। আবার ঝগড়ার পর কিছু কাজ বা কথায় সম্পর্কের দূরত্বও বাড়ায়। বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন, দাম্পত্য হোক কিংবা প্রেমের সম্পর্ক সঙ্গীর সঙ্গে ঝগড়া বা অভিমানের পর কিছু কাজের কারণে তা আরও তিক্ত হয়ে উঠে। সম্পর্ক ঠিক রাখতে সচেতন হওয়া জরুরি।
ঝগড়ার পর কোন আচরণে সম্পর্কে তিক্ততা বাড়তে থাকে চলুন জেনে নেওয়া যাক।
কর্কশ কথা
ঝগড়ার সময় রাগের মাথায় কতকিছু বলা হয়। খারাপ কথাগুলোও এই সময় মুখ থেকে বেরিয়ে আসে। কিন্তু ঝগড়া থেমে যাওয়ার পরও যদি খারাপ কথা বা কর্কশ কথা চালিয়ে যাওয়া হয় তবে তো ঝামেলা বাড়বেই। উত্তেজিত আচরণে এমন কোনো কথা বলা ঠিক নয় যা সঙ্গীকে আহত করে। বরং স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করুন।
মনের ভেতর পুষে রাখা
ঝগড়া শেষ হওয়ার পরও যদি সবকিঠু মনের ভেতর পুষে রাখেন তবে সমাধান তো হবেই না। বরং সম্পর্ক আরও খারাপ হবে। তাছাড়া মনের ভেতর পুষে রেখে চুপ করে বসে থাকাও ঠিক নয়। সঙ্গী কথা বলতে চাইলে শান্ত হয়ে বলুন। নীরবতা সমাধান নয়, বরং সঙ্গীর কথা এড়িয়ে যাওয়া সম্পর্কের জন্য় নেতিবাচক হবে।
রাগ নিয়ে বেরিয়ে যাওয়া
রাগারাগি হতেই পারে। কিন্তু রাগের মাথায় সঙ্গীর কাছ থেকে দূরে সরে যাওয়া মোটেও উচিত হবে না। সঙ্গীর সঙ্গে আর এক ছাদের নিচে আর থাকা সম্ভব নয়, এমন ধারণাও বাদ দিন। রাগের মাথায় কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত নয়।
‘কিছুই হয়নি’ এমন ভাব করা
সঙ্গীর সঙ্গে ঝগড়ার পর নির্বিকার আচরণ করাও যাবে না। আপনি যে কষ্ট পেয়েছেন তার বহিপ্রকাশ করুন। সঙ্গীও কষ্ট পেয়েছে মাথায় রাখুন। ঝগড়ার জন্য় সঙ্গীর কাছে দুঃখ প্রকাশ করুন। মনে রাখবেন, কোনো রাগ জমিয়ে রাখা ঠিক নয়। আবার সঙ্গীও যেন জমিয়ে রেখে মন খারাপ না করে সেদিকে খেয়াল রাখতেহবে। সবকিছু স্বাভাবিক করেই কাজে ফিরুন।
ক্ষমা না করা
সঙ্গী নিজের ভুল বুঝতে পেরে ক্ষমা চাইতে পারে। আপনি আন্তরিক হয়ে তার ক্ষমা গ্রহণ করুন। এই অবস্থায় যদি মনের ভেতর রাগ চেপে রেখে দেন তবে তা সম্পর্কের ক্ষতি করবে। ভালোবাসার মানুষকে ভুলের জন্য় শাস্তি দেওয়া ঠিক হবে না। বরং সঙ্গীর সঙ্গে বোঝাপড়াটা আরও জোড়ালো করুন।
ঝগড়ার অজুহাত
সঙ্গীর সঙ্গে ঝগড়া করেছেন। এরপর ঝগড়া থেমে গেলে কোনো অজুহাত দেখাবেন এটা ঠিক নয়। কাজের চাপ, হতাশা থাকতেই পারে। সেগুলোকে কারণ বানিয়ে সঙ্গীর সঙ্গে ঝগড়া করবেন না। আবার তা সঙ্গীকে জানাবেনও না। এতে সঙ্গীর মন আরও খারাপ হতে পারে। পরবর্তী সময়েও এমনটা আবার হবে বলে সঙ্গীর মনে শঙ্কা তৈরি হতে পারে।
‘আমি কথাটা ওভাবে বলিনি’ ধরনের কিছু বলা
ঝগড়ার সময় অপ্রিয় কোনো কথা সঙ্গীকে বলে ফেলেছেন। কিন্তু আপনি যা বলেছেন, তা আপনি বোঝাতে চাননি। এমন অজুহাতে কিন্তু কথাটা ফিরে আসবে না। তাই খারাপ কথার জন্য় ক্ষমা চাইতে হবে এবং ভবিষ্যতে আর এমন হবে না বলেও প্রতিশ্রুতি দিতে হবে।
অতিরিক্ত সময়ক্ষেপণ
ঝগড়া শেষ হওয়ার পর তা বেশি সময় ধরে রাখবেন না। দুজনেরই উত্তেজনা প্রশমনের জন্য কিছু সময় প্রয়োজন। কিন্তু তা যেন দীর্ঘ না হয়। বরং শান্ত হয়েই সমাধানে আসুন।
ভবিষ্যতের ঝগড়া
ঝগড়ার সময় পুরোনো বিষয় উঠে আসেই। তবে চেষ্টা করবেন এমনটা না করার। কারণ একসময়ের কলহের জের পরে আবারও টেনে আনা উচিত নয়। এতে পুরোনো বিষয়গুলোও আবার মাথা চাড়া দিয়ে উঠবে। ঝগড়া বাড়তেই থাকবে। সম্পর্কের টানাপোড়নও বাড়বে।
সূত্র: রিডার’স ডাইজেস্ট