অনেক শিশুর জন্মের সময় পাতলা চুল থাকে। এরপর ধীরে ধীরে তা ঘন হয়। অনেকের ধারণা, মাথা ন্যাড়া করলেই নতুনভাবে ঘন চুল গজাবে। তাই অনেকেই গরম পড়তেই বাচ্চার চুল ফেলে দেয়। মাথাভর্তি ঘন চুল উঠবে সেই আশায় কয়েকবার ন্যাড়া করে। কিন্তু এই ধারণার কোনও বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা পাওয়া যায় নি। বিশেষজ্ঞরা জানান, এটি শুধুমাত্র প্রচলিত ধারণা। যার কোনও বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা নেই। বরং গরমে চুল ফেললে বাচ্চারা কিছুটা স্বস্তি পাবে। এর বেশি কিছুই নয়।
যুগ যুগ ধরেই এই ধারণা বহন করছে সাধারণ মানুষ। সেই ধারণা থেকে জন্মের পর কয়েকবার ন্যাড়াও করে দেওয়া হয়। কিন্তু চুল গজানোর বিষয়টি জন্মের সময় যেমন থাকে পরেও তেমনটাই হয়। যা ঘন হওয়া বা পাতলা হওয়ার বিষয়টি বংশগতও হতে পারে। এর সঙ্গে ন্যাড়া হওয়ার কোনো সুফল পাওয়া যায় না বলে জানান বিশেষজ্ঞরা। চুল নিয়ে এমন অনেক ভ্রান্ত ধারণাই রয়েছে সাধারণ মানুষের। যেমন_
ন্যাড়া হলে চুল ঘন হয়। এর কোনও বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা নেই। বরং স্ক্যাল্পে থাকা ফলিকল থেকেই নতুন চুল হয়। এই ফলিকল স্ক্যাল্প থেকে কয়েক মিলিমিটার নীচে থাকে। তাই ন্যাড়া হলেও এই ফলিকলের উপর কোনও প্রভাব পড়ে না।
একটা পাকা চুল ছিঁড়লে মাথা পাকা চুলে ভরে যাবে—এটাও ভ্রান্ত ধারণা। চুলে মেলানিনের মাত্রা কমে গেলে তা রং বদলায়। চুল সাদা হতে শুরু করে। তাই পাকা চুলটা ছিঁড়ে ফেললেও তা ধূসর হয়েই গজাবে। প্রতিটা চুলের নিজস্ব ফলিকল রয়েছে। তাই একটা পাকা চুল ছিঁড়লে আরও অনেকগুলো পেকে যাবে এটা ভ্রান্ত ধারণা।
চুলের আগা কাটলে দ্রুত বাড়ে—এই ধারণাও ভুল। কারণ চুল গোড়া থেকে বেড়ে উঠে। তাই চুলের আগা ছেটে দিলেও তা বৃদ্ধির উপর প্রভাব ফেলে না। তবে চুলের সৌন্দর্য বাড়াতে চুল কেটে নেওয়া যায়।
চুলে তেল দিলে তা দ্রুত বেড়ে উঠে, এই তথ্যও সম্পূর্ণরূপে সঠিক নয়। চুলে তেল দিলে স্ক্যাল্পে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায়। এতে চুলের ফলিকলগুলো পুষ্টি ও অক্সিজেন পায়। চুলের গোড়া মুজবত হয়। কিন্তু চুল দ্রুত বাড়ে না। বরং চুলে তেল মেখে রেখে দিলে গোড়ায় ময়লা জমে। এতে স্ক্যাল্পের সমস্যা বাড়ে।
তৈলাক্ত চুলে কন্ডিশনার ব্যবহার করা উচিত নয়—এটাও ভুল। বরং প্রত্যেকটি চুলেই শ্যাম্পু করার পর কন্ডিশনার লাগাতে হবে। কন্ডিশনার চুলকে দূষণ, ইউভি রশ্মি থেকে রক্ষা করে। চুলের রুক্ষতাও কমিয়ে দেয়।