বেশ কয়েকদিন ধরে তীব্র তাপদাহে পুড়ছে সারা দেশ। গরমের কারণে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে জনজীবন। অনেকে নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন কয়েকজন। সারা দেশে একাধিকবার জারি করা হয়েছে হিট এলার্ট। এমতাবস্থায় গরম থেকে বাঁচতে বৃষ্টির জন্য অনেকে বিশেষ নামাজ আদায় করছেন। অনেকেই আবার অনুষ্ঠান করে দিয়েছেন ব্যাঙের বিয়ে। এখন প্রশ্ন আসতে পারে, ব্যাগের বিয়ে দিলে সত্যিই কি বৃষ্টি হয়.?
সম্প্রতি কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলা এবং রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলায় বৃষ্টির আশায় ব্যাঙের বিয়ে দেওয়া হয়েছে। নাচ-গানের মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হয় এই বিয়ে। এসময় নারী, পুরুষ ও শিশুরা বাড়ি বাড়ি ঘুরে বৃষ্টির জন্য ‘আল্লাহ মেঘ দে, পানি দে, ছায়া দে রে’ গানটি গাইতে থাকেন। এরপর একটি প্রতীকী পুকুর খনন করে সেখানে ব্যাঙ দুটিকে ছেড়ে দেওয়া হয়। সন্ধ্যায় ছিল খাওয়াদাওয়ার আয়োজন।
ব্যাঙের বিয়ের মাধ্যমে বৃষ্টির জন্য আহ্বানের রেওয়াজ বাংলার লোকসংস্কৃতির অন্তর্ভুক্ত। বহু আগ থেকেই অনেক জায়গায় বিষয়টি প্রচলিত। বর্ষাকাল ব্যাঙের প্রিয় ঋতু। তাই ব্যাঙের অত্যধিক ডাকাডাকি বৃষ্টির পূর্বাভাস বলে গণ্য করা হয়।
অনেক জায়গায় প্রচণ্ড তাপদাহে অনাবৃষ্টিতে মেয়েদের নেতৃত্বে দুটি ব্যাঙ ধরে এনে পানিভর্তি একটি গর্তে রেখে কাল্পনিক বিয়ে দেওয়া হয়। তখন সমস্বরে উপস্থিত সবাই পাঠ করে-
‘বেঙ্গী ছেড়ীর বিয়া
সোনার লাডুম দিয়া
বেঙ্গীলো মেঘ নামাইয়া দে।
চাচা মিয়া কান্দন করে ক্ষেতের আইলে বইয়া
ক্ষেত খলা বিরান অইল পানি না পাইয়া।
বেঙ্গীলো মেঘ নামাইয়া দে।’
ব্যাঙের বিয়ের বিভিন্ন ধরনের রীতি বিভিন্ন জায়গায় প্রচলিত আছে। কিন্তু রীতি যাই থাকুক কেন্দ্রে থাকে ব্যাঙের বিয়ে। ব্যাঙের বিয়ের উল্লেখিত পদ্ধতি ও আবৃত্তির জন্য রচিত ছড়া থেকে বোঝা যায় এটি একটি উৎসবমুখর ব্যাপার। যেখানেই এটি অনুষ্ঠিত হয় সেখানেই একটি উৎসবের আমেজ বিরাজ করে। বৃষ্টির জন্য হাহাকার আর ব্যাঙের বিয়ের আমোদে তৈরি হয় অন্য এক পরিবেশ।