মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। পুরো বিশ্বে মানুষকেই সবচেয়ে বেশি বুদ্ধিমান ধরা হয়। বিজ্ঞানীরাও এতে একমত হয়েছেন। তবে মানুষের পর বুদ্ধিমান কোন প্রাণী জানেন কি? সাধারণত বুদ্ধিমান প্রাণীর নাম উঠলেই শিয়াল পণ্ডিতের কথা মনে পড়ে। কথায় আছে, শিয়াল পণ্ডিত মানেই বুদ্ধিমান। তবে বিজ্ঞানীরা এতে একমত নন। কারণ তারা মানুষের পর অন্য প্রাণীকেই বেশি বুদ্ধিমান বলে প্রমাণ পেয়েছেন।
বিজ্ঞানীরা জানান, মানুষ এবং শিম্পাঞ্জির ডিএনএ-র মধ্যে ৯৪ ভাগ মিল রয়েছে বলে প্রমাণ মিলেছে। তবে মানুষের পর সবচেয়ে বুদ্ধিমান প্রাণী হচ্ছে অক্টোপাস। কেউ কেউ আবার এই উপাধী দিয়েছেন ডলফিনকে। হ্যা, অসাধারণ বুদ্ধিমত্তার জন্য মানুষের পরই সর্বাধিক পরিচিত প্রাণী হচ্ছে ডলফিন।
বিজ্ঞানীরা প্রমাণ পেয়েছেন, বোটলনোজ ডলফিন সামাজিক কাঠামো গঠন, পারস্পরিক যোগাযোগ এবং সমস্যা সমাধান করতে সক্ষম। ডলফিনের বুদ্ধিমত্তার আকর্ষণীয় দিক হচ্ছে হাতিয়ার ব্যবহার। যা তারা আত্মরক্ষায় ব্যবহার করে। আবার হাতিয়ার ব্যবহারের শিক্ষা ছড়িয়ে দিতে পারে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মেও।
ডলফিনের পরই আরেক বুদ্ধিমান ও স্মার্ট প্রাণী হচ্ছে অক্টোপাস। তারা ক্ষণস্থায়ী এবং দীর্ঘস্থায়ী দুই ধরনের স্মৃতিই ধারণ করতে সক্ষম। অক্টোপাস পানির ভেতরে গোলক ধাঁধা থেকেও বের হয়ে আসতে পারে। তারা কাঁকড়ার খোলস ছাড়িয়ে মাংসও খেয়ে নেয়।
ধারণা করা হতো, শুধুমাত্র মানুষই খাবারের জন্য যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে। তবে বিজ্ঞানীরা প্রমাণ পেয়েছেন, শিম্পাঞ্জিরাও যন্ত্রপাতি ব্যবহারে পারদর্শী। শিম্পাঞ্জিরা সমাজ গঠন করে বসবাস করে। তারা সূর্যাস্ত উপভোগ করে। সঙ্গীর প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করতে পারে। সঙ্গীর মৃত্যুতে শোক পালন করে। মানুষের মতো ভাষার আদান প্রদান করতে না পারলেও তারা ভাব প্রকাশ করতে সক্ষম।
এছাড়াও স্থলজ প্রাণীদের মধ্যে সবচেয়ে বুদ্ধিমান হচ্ছে হাতি। তাদের প্রায় ২৫৭ বিলিয়ন নিউরন রয়েছে। যা মানুষের মস্তিষ্কের প্রায় তিনগুণ। তারা মৃত সঙ্গীর জন্য শোক প্রকাশের ক্ষমতা রাখে। মৃতদের শরীরে আলতো করে স্পর্শ বা আদর করে সান্ত্বনাও দিতে পারে। তারা হাতিয়ার ব্যবহার করতে পারে। প্রতিকূল পরিবেশে মানিয়ে নিতে পারে।
বুদ্ধিমান প্রাণীর মধ্যে পাখির নামও উঠে আসে। পাখিদের মধ্যে সবচেয়ে বুদ্ধিমান হচ্ছে কাক। হ্যা, সারাক্ষণ যে পাখিটি বাড়ির চারপাশ উড়ে বেড়ায় সেটিই বেশী বুদ্ধিমান। বিজ্ঞানীরা জানান, কাকের আইকিউ মানুষ, বানর, বনমানুষের কাছাকাছি হতে পারে। এরা খাদ্য পাওয়ার জন্য বিভিন্ন উপাদান বা যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে। এই পাখি ভবিষ্যৎ ঘটনা সম্পর্কেও ধারণা করতে পারে। তাদের স্মৃতিশক্তি ভালো হয়। তারা পরিচিত মুখ চিনতে পারে। এমনকি নিজের সমস্যা সমাধান করতেও সক্ষম এই পাখি।