বাগান করা অনেকেরই শখের কাজ। আর শীত এলে সেই বাগান পরিপূর্ণতা পায় নানা রঙের ফুলে। তবে এই সময় প্রকৃতি যেমন নানা রং ছড়িয়ে দেয় তেমনি আবহাওয়া জনিত কারণেও নানা রোগবালাই লেগেও থাকে। এসব রোগবালাই থেকে মুক্তি পেতে কাজে দেয় ঔষধি গাছ। তাই বাগানে রাখতে পারেন নানা রকম ঔষধি গাছ।
যেসব গাছ বারান্দায় রাখতে পারেন
পুদিনা
পুদিনায় রয়েছে রোজমেরিক অ্যাসিড, যা হাঁপানি দূর করে। এতে রয়েছে মনোটারপিন নামক উপাদান। এই উপাদান স্তন, লিভার, অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসার রোধ করে। এছাড়া পেটের সমস্যা দূর করতেও পুদিনা পাতা বেশ উপকারি। কারণ এতে রয়েছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস। তাই বাসার বাগানে পুদিনা পাতা রাখতে পারেন। এর খুব একটা যত্নের প্রয়োজন হয় না। সময় মতো পানি দিলেই গাছ ভালো থাকে।
থানকুনি
থানকুনিপাতায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিইনফ্লামেটরি (প্রদাহরোধী) উপাদান। যা ব্রণের দাগ দূর করে। এছাড়া ফ্ল্যাভোনয়েড এবং সক্রিয় উপাদান ম্যাডেকাসসাইড, যা অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের কাজ করে। এর ফলে ত্বকের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায় পাশাপাশি কোলাজেনের উৎপাদন বাড়ে। কোলাজেন ত্বকের বলিরেখা রোধ করতে এবং নমনীয়তা বাড়াতে কাজ করে। এটি হজমশক্তি বাড়ায়, পেটের আলসার এবং মূত্রনালীর সংক্রমণ দূর করে, শরীরে জ্বালাপোড়া দূর করে, পেট এবং লিভার ভালো রাখে, কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং শরীর ডিটক্সিফিকেশন করে। তাই বাগানে অবশ্যই থানকুনি গাছ রাখুন।লতানো এই উদ্ভিদের কান্ডও খাওয়া যায়।
তুলসীগাছ
সর্দি-কাশির সমস্যায় অনেক বেশি উপকারী তুলসী পাতা। এছাড়া তুলসির অ্যাডাপটোজেনিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা শরীরকে চাপের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে এবং চাপের পরে এটি পুনরায় সহজ হতে সাহায্য করে। এতে রয়েছে অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্য। যা মুখের বিভিন্ন সংক্রমণে খুব ভালো কাজ দেয়। তুলসীর পানি দিয়ে গার্গল করলে মাড়ি সুস্থ থাকে এবং নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধের সমস্যা অনেকটাই কমে। তাই বাগানের এক কোণে অবশ্যই তুলসি গাছ রাখুন।
গাঁদা
গাঁদা যেমন সুন্দর ফুল তেমনি তার ঔষধি গুণও অনেক। গাঁদা ফুলের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও ফ্ল্যাভনয়েড উপাদান মানবদেহের ক্যানসার কোষ বৃদ্ধি রোধ করে। এমনকি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও কাজ করে। কোথাও কেটে গিয়ে রক্ত পড়া শুরু হলে রক্ত পড়া বন্ধ করতে গাঁদা ফুলের ব্যবহার বেশ পুরোনো। তাই বাগানের সৌন্দর্য বাড়াতে ও ত্বকের জন্য হলেও গাঁদা ফুল গাছ রাখতে পারেন।
জবা
সৌন্দর্যগুণের পাশাপাশি জবা ফুলের আছে বেশ কিছু ঔষধি গুণও। ত্বকের যত্নে জবা ফুল বেশ কার্যকর।
অ্যালোভেরা
চুল এবং ত্বকের যত্নে অ্যালোভেরা ব্যবহার অনবদ্য। তবে ত্বক ও চুলের যত্ন নেওয়া ছাড়াও অ্যালোভেরা অনেক উপকারী। দাঁতের যত্নে অ্যালোভেরা ব্যবহার করা যায়। দাঁতের নানান সমস্যা দূর করতে এটি বেশ কার্যকরী। এছাড়া ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং ওজন কমাতে সাহায্য করে অ্যালোভেরার শরবত।