বাড়ির বারান্দা বা ছাদে গাছ লাগানোর শখ অনেকেরই রয়েছে। বিভিন্ন জাতের ফুল আর ফলের গাছ জায়গা পায় সেখানে। সবজির গাছেরও কমতি থাকে না। তবে ফলের গাছ লাগানোর তাগিদটা একটু বেশিই থাকে। মৌসুম এলেই নিজের ফলের গাছের ফল খাওয়ার তৃপ্তিই আলাদা। ফলের গাছে জায়গা ও যত্ন দুটোই বেশি লাগে। তবে কিছু ফল রয়েছে যা অল্প জায়গাতেই বেড়ে উঠে। আবার মাসখানেকের মধ্যেই ফলনও দেয়। তেমনই একটি ফল ড্রাগন। বর্তমান সময়ে ছোট বড় সবারই প্রিয় ফলের জায়গা করে নিয়েছে এটি। বাজারেও এখন এর দেখা মিলছে। তবে বাড়িতেই যদি এর ফলন পাওয়া যায় তাহলে মন্দ হয় না। ড্রাগন ফলের গাছে অতিরিক্ত জায়গা লাগে না, অনেক যত্নেরও প্রয়োজন হয় না। আবার গাছের বয়স বাড়লে ফলনও বাড়ে। তাই বাড়ির ছাদ বা বারান্দা হতে পারে ড্রাগন ফলের জন্য সেরা জায়গা। তবে গাছটি লাগানোর আগে কিছু বিষয়ে জানতে হবে।
বাড়ির বারান্দা বা ছাদে যেভাবে ড্রাগন গাছ লাগাবেন চলুন বিস্তারিত জেনে নেই।
· ড্রাগন ফলের গাছ লাগানোর জন্য সঠিক জাত নির্ধারণ করতে হবে। লাল, সাদা, হলুদ বিভিন্ন রং এবং একই রঙের বিভিন্ন জাতের ড্রাগন ফল রয়েছে। গাছটা স্বপরাগায়িত জাতের কি না, তা ভালো করে দেখে কিনতে হবে।
· ভালো নার্সারি বা পরিচিত বাগানির কাছ থেকে কাটিং কিনে নিন। সাধারণত ৪ থেকে ৮ ইঞ্চির ছোট্ট একটা ডাল এনে ভেজা মাটিতে পুঁতে ছায়ায় রেখে দিন। কিছুদিনের মধ্যেই শিকড় বের হয়ে যাবে।
· ড্রাগন ফল রোদের গাছ। বারান্দা বা ছাদে বেশি রোদ থাকে। তাই দিনে ৬ থেকে ৭ ঘণ্টা রোদ থাকে যেই স্থানে, সেখানেই ড্রাগন গাছটি রাখুন। গাছ লাগানোর সময় মাটিতে প্রচুর জৈব সার, সবজিপচা মাটি, শুকনা গোবর মিশিয়ে দিতে হবে। সঙ্গে একমুঠো সরিষার খৈল, হাড়ের গুঁড়া ও ছাই যোগ করে দিন।
· ড্রাগনগাছের টব একটু বড় নিতে হবে। অন্তত ১২ ইঞ্চি টব বা হাফ ড্রাম নিলে ভালো ফলন পাওয়া যাবে।
· ড্রাগনগাছে পানি কম লাগে। মাটি একেবারে শুকিয়ে গেলেই পানি দেবেন। গাছটি কিছুটা বড় হলে সাপোর্ট দিতে হবে। এমনভাবে সাপোর্ট দিন যেন নিচের দিকে ঝুঁকে ডালপালা ছড়ায়। মূল ডালকে ৪ ফুট উঁচু করে তারপর রেলিংয়ে বা টায়ারে বেঁধে ঝুলিয়ে দিন। যেখানে গাছটি বাঁধবেন, তার নিচে মূল ডালের কোনো শাখা বের হলে কেটে দিতে হবে। এবার গাছটি পুরোপুরি প্রস্তুত।
· গাছ বড় হয়ে ঝুলে পড়লে ডালের মাথাগুলো দুই ইঞ্চি পরিমাণ ছেঁটে দিতে হবে। সাধারণত শীতের শেষে এই কাজটি করলে ভালো হবে।
· গাছের মাটিতে কিছু গোবর সার ও পটাশ সার দিয়ে দিন। আবার পেঁয়াজ এবং কলার খোসাও দিতে পারেন।
· ছয় মাস থেকে এক বছরের মধ্যেই গাছের ফলন শুরু হয়। তবে নতুন গাছ লাগানোর পর বর্ষা মৌসুমেই প্রথম ফলন হয়। এরপর সঠিকভাবে পরিচর্যা করলে সারাবছরই ফলন হতে থাকে।