স্বরস্বতী পূজার আগে হিন্দু ধর্মাম্বলীর অনেকেই কুল খান নি। কারণ পুজোর আগে কুল খেতে মানা। লোকমুখে প্রচলিত কাহিনি থেকে জানা যায়, দেবী সরস্বতীকে তুষ্ট করতে মহামুনি ব্যাসদেব তপস্যা করতে বসেন। তপস্যা শুরুর আগে একটি কুলের বীজ রেখে মা সরস্বতী বলেন, যত দিন না এই বীজ অঙ্কুরিত হয়ে গাছ বড় হচ্ছে, তত দিন তপস্যা চালিয়ে যেতে হবে। গাছ থেকে পাকা কুল যেদিন ব্যাসদেবের মাথায় পড়বে, সেদিনই তপস্যা ভঙ্গ করা যাবে। একদিন তপস্যারত ব্যাসদেবের মাথায় সত্যিই পাকা কুল এসে পড়ে। আর তপস্যা থেকে ফিরেন ব্যাসদেব। সেই দিনটি ছিল বসন্ত পঞ্চমী। আর সেই দিনেই হয় স্বরস্বতী পূজা। তাই পূজার আগে কুল না খাওয়ার রীতি অনেকেই মানেন।
পূজা শেষ। এখন তো আর কুল খেতে মানা নেই। ইচ্ছে হলেই এখন কাঁচা কুল খাওয়া যায়। আবার বাড়িতে কুলের তরকারি রান্না করে খেতেও বাধা নেই। সাধারণত শীতল ষষ্ঠী অর্থাত্ স্বরস্বতী পূজার পরদিন কুল টক রান্না করার রীতি রয়েছে। ওইদিন তো খেয়েছেন অনেকেই। এরপর যখনই ইচ্ছে হবে, কুল টক রান্না করে খেতে পারেন।
কুল টক রান্না করার পদ্ধতি একেকজনের কাছে একেক রকম। মশলা দিয়ে কিংবা মশলা ছাড়াই কুল টক রান্না করেন অনেকে। এর সঙ্গে টমেটো দিলে স্বাদ আরও বেড়ে যায়। তবে আপনি যেভাবেই রান্না করেন, শীতের শেষে কুল টক খাওয়ার সুযোগ কিন্তু ছাড়া যাবে না। সহজ উপায় সুস্বাদু কুল টক বানানোর রেসিপিটি জেনে নিন।
কুল টক বানাতে যা যা লাগবে
· পাকা টোপাকুল- ৩০০ গ্রাম
· সরিষার তেল- ১ টেবিল চামচ
· আস্ত সরিষা- আধ টেবিল চামচ
· লবণ-স্বাদমতো
· হলুদ- সামান্য
· চিনি- স্বাদমতো
· পাঁচফোড়ন
· জিরা
· শুকনো মরিচ
কুল টক রান্না করবেন যেভাবে
প্রথমেই কুল ভালো করে ধুয়ে নিন। এবার চুলায় কড়াই দিন। এতে সরিষার তেল গরম করুন। তেল গরম হলে সরিষার ফোড়ন দিন। দুই মিনিট ভেজে এতে কুল দিয়ে দিন। কিছুক্ষণ নাড়াচাড়া করার পর সামান্য হলুদ ও লবণ দিন। এরপর দেড় কাপ পানি দিন। কুল সেদ্ধ হওয়া পর্যন্ত রান্না করুন। এবার স্বাদমতো চিনি দিয়ে দিন। আরও কিছুক্ষণ ফুটিয়ে কয়েকটা কুল ফাটিয়ে দিন। যেন টক স্বাদ বেরিয়ে আসে।
এবার কুলের টকে ফোড়ন দিতে পারেন। পাঁচফোড়ন, জিরে, শুকনো মরিচ শুকনো কড়াইতে ভেজে গুড়ো করে নিন। এই মশলা কুলের টকে দিয়ে দিন। চিনি না দিয়ে, গুড়ও ব্যবহার করতে পারেন। এতে আরও সুস্বাদু হবে।